পরিবহন ধর্মঘটে পর্যটক শূন্য সুন্দরবন
মংলা প্রতিনিধি : পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে সুন্দরবন। আকস্মিক ধর্মঘট শুরু হয়ে যাওয়ায় অনেক দেশি ও বিদেশি পর্যটক আটকাও পড়েছেন মোংলায়। দর্শনার্থী ও যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি লোকসানে পড়েছে বন বিভাগ ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা ‘পর্যটনের ভরমৌসুমে’ এ ধর্মঘটে ব্যাপক লোকসান হবে।
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। এর পর খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল হক মিন্টু পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। গত রোববার দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।
ধর্মঘটে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকায় দর্শনার্থীরা সুন্দরবনে আসতে পারছে না। আকস্মিক ধর্মঘট শুরুর আগে যেসব দেশি-বিদেশি পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে এসেছেন তাঁরা দুদিন ধরে মোংলার বিভিন্নস্থানে আটকে রয়েছেন। গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ শিকারের পাশাপাশি লোকসান হচ্ছে বন বিভাগ ও ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের। শতাধিক নৌকা, অর্ধশত ট্রলার ও ২০টি ছোট-বড় লঞ্চের প্রায় চার শতাধিক কর্মচারী অলস সময় কাটাচ্ছে।
মোংলার পর্যটন ব্যবসায়ী দ্য সাউদার্ন ট্যুরসের মালিক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ধর্মঘটের কারণে পর্যটকদের নির্ধারিত ভ্রমণ শিডিউল বাতিল করতে হচ্ছে। এতে আমরা যারা ব্যবসায়ী আছি ও পর্যটকদের উভয়ের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমানে পর্যটনের ভরা মৌসুম চলছে এখন যদি ধর্মঘট থাকে তাতে পর্যটন ব্যবসায়ীদের ক্ষতিসহ বন বিভাগের রাজস্ব আদায় অনেকাংশে কমে যাবে।’
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রের কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘট চলায় এখন পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম।’
এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও মোংলা-খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ আছে। আজ সোমবারও মোংলা থেকে কোনো দূরপাল্লার যান ছেড়ে যায়নি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।
পরিবহন ধর্মঘটের আওতায় ট্রাক চলাচলও বন্ধ থাকায় মোংলা বন্দর ও শিল্প এলাকার বিভিন্ন কলকারখানার উৎপাদিত পণ্য পরিবহন বন্ধ আছে।