• বৃহস্পতিবার , ২ মে ২০২৪

পদ্মা পারের মানুষের স্বপ্ন-হাসিনার নামেই হোক সেতু


প্রকাশিত: ১:৪৪ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ১৫ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৮ বার

padma bridge-www.jatirkhantha.com.bd শফিক রহমান:  বদলে যাচ্ছে পদ্মা পারের মানুষের স্বপ্ন। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব রুপ নিতে চলেছে। অপেক্ষা মাত্র দুটি বছর। তারপর বদলে যাবে এই অঞ্চলের মানুষের সবার স্বপ্ন। যে সেতু নিয়ে রাজনীতি চলেছে দেশে বিদেশে। ষড়যন্ত্র চলেছে ।সরে যেতে হয়েছে একজন মন্ত্রীকে। সেই পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জ একাই মোকাবেলা করেছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তাঁর বিচক্ষণ রাজনৈতিক দুরদর্শীতা বুদ্ধিমত্তা এবং কূটনৈতিক চালে বাস্তব রুপ নিচ্ছে পদ্মা সেতু। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন সার্থক করতে তিনি লড়েছেন- লড়েই চলেছেন বাংলার মানুষের ভাগ্য বদলানোর জন্যে। তাঁর তো চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই-তাই তিনি শুধু লড়ছেন এ দেশের মানুষকে  বিশ্বে দরবারে মাথা উচু করে দাড়ানোর জন্যে।

padma-2-www.jatirkhantha.com.bdশেখ হাসিনার এই যে অবদান-পদ্মা সেতুর জন্যে তাঁর এই যে ত্যাগ স্বীকার তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যতদিন যত কাল রবে পদ্মা বহমান ততদিন রবে শেখ হাসিনার মহান কীর্তির অবদান। কাজেই সময় এসেছে এই এখনই সিদ্ধান্ত নেয়ার যে এই পদ্মা সেতুর নামকরন করা হোক শেখ হাসিনার নামে-শেখ হাসিনা সেতু।

পদ্মা পারের মানুষ ইব্রাহীম করিম জাতিরকন্ঠকে জানালেন,   যে মানুষটি পদ্মা পারের মানুষের স্বপ্ন সার্থক করে চলেছেন, তাঁর নামে মানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নামেই নামকরন করা হোক। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা আসমা খন্দকার বললেন,  পদ্মা সেতুর জন্যে শেখ হাসিনার অবদান আমরা কোনদিন ভুলবনা। তাঁর কারণেই আমাদের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।কাজেই আমরা চাই সেতুর নাম শেখ হাসিনার নামেই হোক।

padma-3-www.jatirkhantha.com.bdসরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে মাওয়া আসার পথে শ্রীনগরের দোগাছি এলাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। মাওয়া চৌরাস্তা থেকে সোজা তাকালে চোখে পড়বে স্বপ্নের মূল পদ্মা সেতুর কাজ। দেখা যাবে কুমারভোগ এলাকায় পদ্মা পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড। সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে  গেলেই চোখে পড়বে, হাজার হাজার ব্লকের সারি। চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড তৈরি করছে এসব ব্লক- নদীশাসনের জন্য।  অপারেটর জুয়েল রানা বললেন, মোট ৭৫ লাখ ব্লক তৈরি হবে।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জাতিরকন্ঠকে জানালেন, মূল পদ্মা সেতুর কাজ করছে চায়নার রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ অব কোম্পানি লিমিটেডের (এমবিইসি)। ইতিমধ্যে ৩০ ভাগ কাজ এগিয়ে গেছে।আমরা টার্গেট অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি।

padma-www.jatirkhantha.com.bd-----জানা গেছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু হবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু। মোট ৪২টি পিলারের ওপর সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকবে। এর মধ্যে ৪০টি নদীর ভেতর এবং দুটি সংযোগ সেতুর জন্য। নদীর ভেতরের একেকটি পিলারের জন্য ছয়টি পাইল থাকবে। আর বাইরের দুটির জন্য দুটি করে পাইল। এভাবে মোট ২৬৪টি পাইল থাকবে।’২০১৮ সালে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা।

দ্বিতল এই সেতুর পুরোটা হবে স্টিল আর কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর ওপরের তলায় থাকবে চার লেনের মহাসড়ক আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন। রেলের গতি হবে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার।

নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জাতিরকন্ঠকে  জানালেন, পাঁচটি প্রধান ভাগে হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাজ। যতটা সম্ভব দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাঠামো। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ৭ নম্বর পিলারের কাছে ইতিমধ্যে একটি সাপোর্ট পাইল তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী শনিবার ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর ৭ নম্বর পিলারের মূল পাইলিংয়ের উদ্বোধন করবেন। এরপর থেকেই দৃশ্যমান অবকাঠামো দাড়িয়ে যেতে থাকবে। চোখে পড়বে পদ্মার কাজ। মোট ৪২টি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বা শেখ হাসিনা সেতু।

এদিকে  মন্ত্রিসভার বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজের অগ্রগতি ও সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি স্থান পায়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই সভায়  আগামী শনিবার পদ্মা সেতুর মূল পাইলিং ও নদীশাসন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মন্ত্রিসভার সদস্যদের আমন্ত্রণ জানান। এ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতু যাতে না হয়, ষড়যন্ত্রকারীদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এটা নির্মাণের জন্য সরকার যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল, তা সফল হতে যাচ্ছে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, মূল সেতু নির্মাণের ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীশাসনের কাজ প্রায় ১৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়কের মধ্যে শরীয়তপুরের জাজিরায় ৫৯ শতাংশ এবং মাওয়ায় ৬৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যেভাবে কাজ চলছে, তাতে ২০১৮ সালের শেষেই এ সেতুতে যান চলবে বলে আমরা আশাবাদী।’