• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

নৌ পুলিশে লুকিয়ে ছিল ৭ খুনের আসামি হাবিব


প্রকাশিত: ১০:০৭ পিএম, ৩১ মার্চ ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৫ বার

হিজলা থেকে সাইফুল আলম :  চারদিকে ম্যানেজ করে নৌ পুলিশে লুকিয়ে ছিল ৭ খুনের আসামি হাবিব। নারায়নগঞ্জের বহুল আলোচিত ৭ খুনের ২টি মামলায় ২৭ বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি 111 গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশালের হিজলা থানা পুলিশের সহায়তায় শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে হিজলার ট্যাক (উপজেলা সদর) নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করেন নড়িয়া থানা পুলিশের একটি দল।

গ্রেফতারকৃত কনস্টেবল হাবিব নড়িয়া থানার কাঞ্চনপাড়া গ্রামের আহাদ বক্সের ছেলে। সাত খুনের ঘটনার সময় পুলিশ কনস্টেবল হাবিব ওই মামলার প্রধান আসামি র‌্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার চাকুরীচ্যুত লে. কর্নেল তারেক সাঈদের দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

নারায়নগঞ্জের ওই ঘটনার পর র‌্যাব থেকে বের হয়ে বরিশাল নৌ পুলিশে চাকুরী করছিলেন হাবিব। সাজা পরোয়ানা নিয়ে পুলিশের খাতায় পলাতক অবস্থায় এতদিন হিজলা নৌ পুলিশে কর্মরত ছিলেন কনস্টেবল হাবিব। শুধু চাকুরিই নয়, পদোন্নতি পেয়ে সহকারী উপ-পরিদর্শকও হন হাবিব।

গ্রেফতারের পরপরই হাবিবকে নড়িয়া নিয়ে যায় ওই থানার এসআই মনিরুজ্জামান ও এসআই আব্দুল বারেক। এর আগে হাবিবের সাজা পরোয়ানা গত ১৪ ফেব্রুয়ারী তার পৈত্রিক বাড়ি অর্থাৎ নড়িয়া থানায় পৌঁছে।

বরিশাল নৌ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে বরিশাল নৌ পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আব্দুল মোতালেব এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

হিজলা থানার ওসি মো. মাসুদুজ্জামান জানান, হাবিব এতদিন পুলিশের নজরদারীতে ছিলো। আজ দুপুরে তিনি (ওসি) ঘুমিয়ে ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না তা তিনি জানেন না।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, দুপুরে নড়িয়া থানা পুলিশ হিজলায় এসে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তা হিজলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৭ খুন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

রায় ঘোষণার পরও পুলিশের খাতায় পলাতক কনস্টেবল হাবিব কিভাবে এতদিন পুলিশ বিভাগে চাকরি করেছেন জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, সে (হাবিব) খুবই চালাক এবং ধূর্ত প্রকৃতির। তথ্য গোপন করে দণ্ড মাথায় নিয়েও সে এতদিন পুলিশে চাকরি করেছে।

নারায়নগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় গত ১৬ জানুয়ারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন প্রধান ৪ আসামিসহ ২৬ জনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া ৯জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেয়া হয়। যাদের মধ্যে পুলিশের চোখে পলাতক পুলিশ কনস্টেবল হাবিবকে ২৭ বছর দণ্ডাদেশ দেন আদালত।

দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১২জন পলাতক। এছাড়া ওই ঘটনায় আরেকটি মামলায় তার ১০ বছরের দণ্ড হয়। সাত খুন মামলার পর কৌশলে র‌্যাব থেকে বের হয়ে পুলিশ বাহিনীতে ফিরে এসে সে বরিশাল জেলা নৌ পুলিশে পদায়ন পায়।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার সহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ।

পরদিন আরেকটি লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বাকিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়ি চালক মো. ইব্রাহীম।