• রোববার , ১৯ মে ২০২৪

দল ও সরকারের ইজ্জত পাংচার করলেন বাঁশখালির এমপি মুস্তাফিজ


প্রকাশিত: ১:৫৪ এএম, ৪ জুন ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৭৯ বার

চট্টগ্রাম থেকে ফিরে এস রহমান / সাইফুল বারী মাসুম  :  এমপির বিরুদ্ধে মামলা হওযায় এলাকায় Mp-Mustafij-www.jatirkhantha.com.bdরব উঠেছে এমপি মোস্তাফিজের পক্ষে? তাঁরা বলছে সাবাস বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এলাকায় সবাই বলাবলি করছেন,এমপি সরকার ও আওয়ামী লীগকে যে বাঁশ দিলেন তাতে তিনি টক অব দ্যা কান্ট্রির মর্যাদা পেয়ে গেলেন?

এলাকাবাসির মতে, বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর আগে এমপি বদি ছিলেন এই মারকুটে লা্ইনে। কিন্তু দুদকের মামলায় পড়ে এমপি বদি এখন ব্যস্ত তাঁর নিজের উইকেট নিয়ে।এ অবস্থায় ব্যাটিং করা শুরু করেছেন বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।

কিন্তু তিনি মারকুটে ব্যাটিং চালিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎ বোল্ড হয়ে গেলেন মি. ফিজের বোলিংয়ে ? অতঃপর যা হবার তাই হলো। এলাকাবাসী বললেElection-officer-of-Banshkhন, সরকার ও আওয়ামী লীগকে ডোবাতে এমপি বদি’র লাইনে এধরনের একটা দুইটা মোস্তাফিজ’ই যথেষ্ঠ?

যাহোক জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আখতার জানান, শুক্রবার দুপুরে বাঁশখালী থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।মামলায় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ‘ফর্দ অনুযায়ী’ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ‘নিয়োগ না দেওয়ায়’ গত বুধবার ওই সাংসদ ও তার লোকজন ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করেন।
সাংসদ মোস্তাফিজ ছাড়া বাকি দুই আসামি হলেন- ৪ নম্বর বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় ওলামা লীগ নেতা মাওলানা আখতার।

বাঁশখালী থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা মামলার এজাহার পেয়েছি। সে হিসেবেই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।

জাহিদুল ইসলাম বলছেন, ৪ জুন নির্ধারিত ভোট গ্রহণের দিন ওই ইউনিয়নের নয়টি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের জন্য ২০০ জনের ‘একটি তালিকা’ দেন চেয়ারম্যানপ্রার্থী তাজুল ইসলাম। সে অনুযায়ী কাজ না করায় তাকে মারধর করা হয়।

গত এপ্রিলে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর আলোচনায় আসা এমপি মোস্তাফিজ মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা ওই নির্বাচন কর্মকর্তার দিকে ‘তেড়ে গিয়েছিল’ শুধু; নির্বাচনী কর্মকর্তা জাহিদুল ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সহানুভূতি পেতে’ ঘটনাকে ‘অতিরঞ্জিত’ করেছেন।

ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা জাহিদুলকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের এই এমপি। মারধরের ঘটনায় সমালোচনার মধ্যে সাংসদের অনুসারীরা বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার অপসারণ চেয়ে উপজেলা সদরে মিছিলও করে।

গত ১ জুন ওই ঘটনার পরপরই নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল বাঁশখালী থানার ওসি ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ পাঠালে বাঁশখালীর ১১ ইউনিয়নে শনিবার অনুষ্ঠেয় ভোট স্থগিত করা হয়।

সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই মামলা করবেন।চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, জাহিদুল ইসলাম যে অভিযোগ করেছিলেন, তা যুক্ত করে ইসি থেকে মামলা নেওয়ার একটি নির্দেশনা বৃহস্পতিবার রাতে বাঁশখালী থানায় পৌঁছায়।

নির্বাচনী কার্যক্রমে সাংসদসহ অন্য আসামিরা অবৈধ হস্তক্ষেপ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন এবং সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের যে তালিকা দিয়েছেন সেটাও অবৈধ। সব বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।

নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ২০০২-০৬ সাল মেয়াদে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য ছিলেন।নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ২০০২-০৬ সাল মেয়াদে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

‘প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছিলেন’

গত বুধবার মারধরের সময় সাংসদ মোস্তাফিজুর প্রাণনাশেরও হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম।ঘটনার দিন নির্বাচন কমিশন সচিবকে লেখা অভিযোগে তিনি বলেন, এমপি মহোদয় বারবার তেড়ে এসে আমাকে আঘাত করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন- ছাত্রলীগ নেতাদের ডাক, ওকে নগ্ন করে উপজেলায় ঘোরা।

এরপর তিনি আমার কাছে অঙ্গীকার দাবি করেন। তিনি বলেন, ১৪টি ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে হবে, অন্যথায় ৫ তারিখ তোর লাশ পড়বে।ইসিতে পাঠানো চিঠিতে এই নির্বাচনী কর্মকর্তা লিখেছেন, “আমি তাকে সবিনয়ে জানাই- স্যার, জনগণ ভোট দিলে আপনারা নির্বাচিত হবেন। কাউকে জিতিয়ে বা হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।

মামলা নিতে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত যে নির্দেশনা বাঁশখালী থানায় পাঠানো হয়েছে, প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি সেখানেও এসেছে।নির্বাচনী কর্মকর্তাকে ‘শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও প্রাণনাশের হুমকির বিষয়ে’ দ্রুততম সময়ে মামলা নিতে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।