• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

টান টান উত্তেজনায় টাইগারদের জয়


প্রকাশিত: ১:৫৩ এএম, ১৫ জুলাই ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৬ বার

স্পোর্টস রিপোর্টার : বল পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে নবির হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। এরপর ক্রিজে এসেই বাইরের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেন তাসকিন; পরের বলে নাসুমও অধৈর্য হয়ে ভুল করেন। ফলে হ্যাটট্রিক পেয়ে যান করিম।এমনি টানটান উত্তেজনায় শেষমেষ ম্যাচ জেতায় শরীফুল।আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ নবির ফিফটির উপর ভর করে ১৫৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। ১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খেলেও তাওহিদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারীর ব্যাটিং নৈপুণ্যে ম্যাচে ফেরে টাইগাররা। ম্যাচ যখন হাতের মুঠোয় তখনই করিম জানাতের হ্যাটট্রিক! ফলাফল, নাটক জমিয়ে ম্যাচ জিততে হলো টাইগারদের।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন ছিল ৬ রান। করিম জানাতের প্রথম বলে এক্সট্রা কাভারের উপর দিয়ে চার হাঁকান মিরাজ। সমীকরণ দাঁড়ায় ৫ বলে ২ রানের। ঠিক তখনই জানাতের বল পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে নবির হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। এরপর ক্রিজে এসেই বাইরের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেন তাসকিন; পরের বলে নাসুমও অধৈর্য হয়ে ভুল করলে হ্যাটট্রিক পেয়ে যান করিম। সমীকরণ যখন ২ বলে ২ রান- ম্যাচে তখন যেকোনো ফলই সম্ভব; কিন্তু পয়েন্টে বাউন্ডারি হাকিয়ে নাটকের অবসান ঘটান একাদশে ফেরা শরিফুল ইসলাম। ১ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় সাকিব বাহিনী।

এর আগে, সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ। তার পরিবর্তে জায়গা পান পেসার শরিফুল ইসলাম।

ব্যাটিংয়ে নেমেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুমের বলে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জাজাই। এরপর চতুর্থ ওভারে তাসকিনের করা স্লোয়ারে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন গুরবাজ। এই আফগান ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান।

এরপর ইব্রাহীম জাদরানকে দ্রুত ফেরান শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি করা বলটি একটু বাড়তি বাউন্স পায়। সেটি কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ তুলে দেন জাদরান।

এরপর বোলিং আক্রমণে এসেই ৩ রান করা করিম জানাতকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান সাকিব আল হাসান। ৫২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা আফগানদের ত্রাতা হয়ে উঠেন মোহাম্মদ নবি ও নাজিবউল্লাহ জাদরান।

এই দু’জনে যোগ করেন ৩৫ রান। মিরাজের করা শর্ট ডেলিভারিতে ২৩ বলে ২৩ রান করা নাজিবউল্লাহ কাট করতে গিয়েছিলেন। যদিও তা ঠিক মতো হয়নি। উল্টো ব্যাটের নিচের কানা ছুঁয়ে ঊরুর সামনের অংশে লেগে বল যায় উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে। লিটনও ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক দৃষ্টিনন্দন ক্যাচ নেন।

এরপর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ঝড় তুলে দেন মোহাম্মদ নবি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এর মধ্যে সাকিবের করা ১৯তম ওভারে টানা দুই বলে ছয় হাঁকান আজমতউল্লাহ। অবশ্য ওভারের শেষ বলে সাকিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন তাসকিনের হাতে। শেষ ওভারে ৩ রান করা রশিদ খানকে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। শেষ পর্যন্ত নবি ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে আফগানিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।

রশিদ খানের দলের দেয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। ইনিংসের শুরুতেই ওপেনার রনি তালুকদারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৫ বলে ১ বাউন্ডারিতে মাত্র ৪ রান করে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডানহাতি এই ওপেনার। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১২ বলে এক ছক্কায় করেছেন ১৪ রান।

লিটন কুমার দাস চেষ্টা করেছিলেন শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে। কিন্তু তিনিও ফিরে যান ১৯ বলে মাত্র ১৮ রান করে। ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। ফরিদ আহমেদের বলে করিম জানাতকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এর আগে ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ১৯ রান।

এরপর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাওহিদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারী। দুজনে মিলে গড়েন ৪৩ বলে ৭৩ রানেরজুটি। আফগান বোলারদের তেমন কোনো সুযোগই দেননি তারা। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করেন শামীম। অন্যদিকে, ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ৪৭ রান করেন ম্যাচসেরা হৃদয়।