• সোমবার , ১৩ মে ২০২৪

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-ফখরুল সকালে পাকরাও বিকেলে জামিন


প্রকাশিত: ৯:৪৯ পিএম, ৩০ মার্চ ১৬ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৩ বার

আদালত প্রতিবেদক:  রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা নাশকতার মামলায় বিএনপির khalada-www.jatirkhantha.com.bdচেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এ আদেশ দেন।আজ এ মামলায় অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।

mirza fakrul-www.jatirkhantha.com.bdগত বছরের ৬ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত শেষে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে পুলিশ। আজ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আদালত পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। আদালত আগামী ২৭ এপ্রিল পরোয়ানা জারি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। এ মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জাতিরকন্ঠকে বলেন, এ মামলায় ঘটনার দিন খালেদা জিয়া পুলিশ দ্বারা অবরুদ্ধ ছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শেষে তাঁকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগপত্র দিয়েছে।

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী মাছুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তা নাকচ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাঁর বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা আছে, তিনি সবগুলোতেই হাজির হয়েছেন।

এই মামলাটিতেও আইনগতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল বলেন, অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আদালত খালেদাসহ পলাতক ২৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, হাবিব-উন-নবী খান, সালাউদ্দিন আহমদ, সালাউদ্দিন আহমেদ ও তাঁর ছেলে তানভীর আহমেদ, সুলতান সালাউদ্দিন, নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ।
এ মামলায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, শওকত মাহমুদ, সেলিম ভুইয়া ও রফিকুল ইসলাম জামিনে আছেন। চারজন কারাগারে আটক আছেন।

২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী। ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা করে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ।

মির্জা ফখরুল সকালে মহাসচিব-বিকালে জামিন

মির্জা ফখরুল সকালে মহাসচিব, দুপুরে হাজতে, বিকালে জামিন নাশকতা মামলায় দুপুরে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর তিন ঘণ্টা পর জামিন পেয়েছন বিএনপির নতুন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিন সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি।

এর আগে বুধবার দুপুরে পল্টন থানার নাশকতার তিন মামলার মধ্যে দুটিতে জামিন নামঞ্জুর করে ফখরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম নবীর আদালত। অন্য মামলাটিতে জামিন পান তিনি। এরপর এজলাস থেকে তাকে নেয়া হয় কোর্ট হাজতখানায়। সেখান থেকে কারাগারে নেয়ার প্রস্তুতির মধ্যেই তৎপর হন বিএনপির আইনজীবীরা। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিন নাকচের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে আইনজীবীরা ফের যান আদালতে। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে একই বিচারক জামিন দিয়ে দেন ফখরুলকে।

মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, বিকেল চারটায় শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন একই আদালত। সকালে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মির্জা ফখরুল।  শুনানি শেষে দুই মামলায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুলকে ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় পল্টন থানার নাশকতার ওই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেলে আপিল বিভাগ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন এবং জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এছাড়াও হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেন। হাইকোর্ট গত বছরের ২৪ নভেম্বর রুল নিষ্পত্তি করে ওই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে তিন মাসের জামিন দেন।