• বৃহস্পতিবার , ২ মে ২০২৪

কোরবানির গরু থেকে শুরু করে মটরসাইকেল পর্যন্ত অনেকে কিনে থাকেন অনলাইনে:হাসিনা


প্রকাশিত: ৮:৩১ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ১৫ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৩ বার

pm-internet-www.jatirkhantha.com.bdবিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা:   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইন্টারনেট ব্যবহারে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে সরকার। তিনি বলেন, এখন কোরবানির গরু থেকে শুরু করে মটরসাইকেল পর্যন্ত অনেকে কিনে থাকেন এই অনলাইনে।এ্টাই বর্তমান ডিজিটাল সরকারের কৃতিত্ব।শনিবার বিকেলে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট সপ্তাহ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণবভনে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় ছিলো বাংলাদেশে বিনা পয়সায় ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক পেয়েছিলো। তখন যারা সরকারে ছিলেন তারা সেটা নেন নাই। কারণ তারা মনে করেছেন এই সংযোগটা করলে বাংলাদেশের তথ্য সব পাচার হয়ে যাবে। আর এখন আমরা এটা নিয়ে নতুন করে উদ্যোগ গ্রহণ করলাম।

110তিনি বলেন সব দেশে সাবমেরিন কেবল সংযোগ হয়েছে শুধু বাংলাদেশ ছাড়া। স্বাভাবিক ভাবে একটা দেশের জন্য আনতে গেলে প্রচুর খরচের ব্যাপার থাকে। তবুও আমরা এর উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সীমিত সময় পাঁচ বছর। আর এই পাঁচ বছরের মধ্যে এটা করা সম্ভব নয়। তবে আমরা এর আয়োজনটা করে রেখে যাব। ধীরে ধীরে মানুষ যখন কম্পিউটার চালানো অভ্যস্ত হয়ে ওঠে সে কাজটা আমরা করেছিলাম।

আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই ১৯৭৩ সালে স্বাধীনতার পরপরই আমাদের দেশের মহান পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনি শুধু আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়েই যাননি তিনি বলেছেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যা যা করণীয় তার প্রত্যেকটি পদক্ষেপই  তিনি নিয়েছিলেন। এবং তার নেতৃত্বেই ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলি যোগাযোগ সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। পাশাপাশি ৭৩ সালে বাংলাদেশে শিক্ষা নীতিমালা তৈরি করবার জন্য তিনি একটি কমিশন গঠন করেছেন এবং প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র বেতবুনিয়াতে স্থাপন করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এভাব্ইে কিন্তু আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি কিভাবে আমাদের দেশকে সামনের দিকে আরও এগিয়ে নেয়া যায়। আমরা যখন ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হই তখন সে নির্বাচনে ইশতেহারে আমরা ঘোষণা দিয়েছি যে আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলবো।

আর ডিজিটাল কথাটা আমার জানার কথা না। কারণ আমি বিজ্ঞানের ছাত্রী না। আমি একদম খাটি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী। আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করেছি। আর এটা জয় আমাদের উপহার দিয়েছে। আমরা তারই পরামর্শ নিয়েছি এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমাদের বাংলাদেশকে অনেকটাই ডিজিটাল করেছি। কাজেই সে দিক থেকে কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের প্রতিটি সেবাকেন্দ্রে আমরা যে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি সেখানে যে কাজটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে আমাদের ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আজকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এই ডিজিটাল সেন্টারে অনেকেই কাজ করছে। আমরা প্রায় ২’শ ধরনের সেবা অনলাইনে দিতে পারছি।

এখন গ্রামের মানুষও অনলাইনে কেনাকাটা করেন। অনেকে কোরবানির গরু থেকে শুরু করে মটরসাইকেল পর্যন্ত কিনে থাকেন অনলাইনে। আর আমাদের দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় গুণটা হচ্ছে প্রত্যেকে কিন্তু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আগ্রহী। অনলাইনের মাধ্যমে কেউ কাউকে ঠকাতে পারে না।

তিনি আরও বলেন আমরা কিছু প্রকল্প নিয়েছি যেটা ডিজিটাল কানেক্টিভিটি। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার দুইশ ৫০টি ইউনিট ফাইবার অপটিক্যাবলের আওতায় আসবে। ইতোমধ্যেই বিটিসিএল এক হাজার ইউনিটের ফাইভার অপটিক্যাবল সংযোগ দেয়ার কাজ করছে। আমরা মনে করি ২০১৭ সালের মধ্যে আমাদের চার হাজার পাঁচশ ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ করতে সক্ষম হবো।

তবে আজকে যে মেলা হচ্ছে এর মাধ্যমে সকলের ভিতরে সচেতনতা হচ্ছে এবং যেভাবে দ্রুত কাজ হচ্ছে, এরোকম চলতে থাকলে আমি আশা করি এর আগেই সফল হতে পারবো। আমরা জানি আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দেশের মানুষের জীবন যাত্রাকে আরও সহজ করতে চাই। কাজেই সেই কথা চিন্তা করেই আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সাথে একটা কথা বলতে চাই আমি যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তখন আমরা পেয়েছিলাম মাত্র ২০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর এখন সেই ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজার। ১৬ কোটি মানুষের দেশ আমাদের। তার মধ্যে ৫ কোটি মানুষই ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

তিনি আরও বলেন, তবে একটা বিষয় নিয়ে আমি বলবো যেটা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন আমরা। সেটা হচ্ছে প্রযুক্তি যেমন মানুষের জীবনকে সহজ করে দেয় তেমনি এর কিছু খারাপ দিকও আছে। আমাদের দেশের শিশুরা নিজে নিজে টিপে কোথায় কোথায় চলে যায় তার কোনো ঠিক নেই। তাই আমি চাই এখানে কোনো একটা ব্যবস্থা করা দরকার।

আমরা ইন্টারনেটের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটা আইনও করতে যাচ্ছি। তার একটা হচ্ছে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসী ব্যবহার করে এবং পরে তারা এই কাজগুলোকে ছড়িয়ে দেয়। অন্যটা হচ্ছে সামাজিক ক্ষেত্রে ছোট শিশুরা এর মাধ্যমে অনেকেই অনেক কিছু করে ফেলে। যার ফলে তাদের চরিত্র গঠনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ইন্টারনেট বৃদ্ধির প্রসার যেমন আমরা ঘটাবো, সেই সাথে তার নিরাপত্তার বিষয়টাও আমরা দেখবো।