• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

আইসিসির দালাল আম্পায়ারদের ১৯ ভুলে জেতা ম্যাচ হারল টাইগাররা


প্রকাশিত: ১:৫২ পিএম, ২৫ অক্টোবর ১৬ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৬২ বার

 

প্রিয়া রহমান : আইসিসির দালাল আম্পায়ারদের ১৯ ভুলে জেতা ম্যাচ হারল টাইগাররা। আর এই কারণে ইংল্যান্ডের 1বিপক্ষে ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে গিয়েও হেরেছে মুশফিক বাহিনী। তবে ইংলিশদের ঘাম ছুটিয়েছেন টাইগাররা।এর আগের ৮ টেস্টে যতো সহজে ইংল্যান্ড জিতেছে, এবার যেন তাদের টুটি চেপে ধরেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।

২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রথমটা ২২ রানে জিতেছে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছিল আম্পায়ারও। আর এবার ভারতের আম্পায়ার এস রভি এবং শ্রীলংকান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি থেকে কয়েকবার বিশ্বসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পেয়েছেন ধর্মসেনা। তবে তিনি ওই পুরস্কারের মর্যাদা রাখতে পেরেছেন কি না তা নিজেই ভেবে দেখতে পারেন।
9
চট্টগ্রাম টেস্টে বার বার ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ধর্মসেনা। এ কারণে বার বার ‘ক্ষমাও’ চাইতে হয়েছে তাকে। কিন্তু বাংলাদেশ যখন জয় থেকে মাত্র ২২ রান দূরে ছিল তখন ধর্মসেনা এবং রভি দুজনে দুই উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের জয়ের পথে কাটা হয়ে দাঁড়ান।

৩৩ রানের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ৫ম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। উইকেটে ছিলেন সাব্বির রহমান এবং তাইজুল ইসলাম। দুজনেই ভালোভাবে ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড এবং বেন স্টোকসকে মোকাবেলা করছিলেন।

তাদের এই স্বাচ্ছ্যন্দে ব্যাটিং করাটা যেন পছন্দ হলো না দুই আম্পায়ারের। তাদেরও যেন রোদ আর গরমে আম্পায়ারিং করতে ভালো লাগছিল না। তারাও তো ৫ দিন ধরে আম্পায়ারিং করছেন! তাই তাড়াহুড়ো করে দুই বলে দুইটা বাজে সিদ্ধান্ত দিয়ে বাংলাদেশকে পরাজয়ের স্বাদ নিতে বাধ্য করলেন টিভি আম্পায়ারের দায়িত্বে থাকা রভি এবং অন ফিল্ড আম্পায়ার ধর্মসেনা।
33
দিনের চতুর্থ ওভারের খেলা চলছিল। বেন স্টোকসের প্রথম বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যাট মিস করে তাইজুলের পায়ে বল লাগে। ফিল্ড আম্পায়ার ধর্মসেনা নট আউট ঘোষণা করলেও রিভিউ নিয়ে সফল হন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক।

তবে এক্ষেত্রে কৃতিত্ব দিতে হয় টিভি আম্পায়ারের দায়িত্বে থাকা এস রভিকে। বাইরে পিচ করা ও লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের অংশে লাগা বলেই তাইজুলকে আউট দিলেন রভি।

কিন্তু এ ধরনের বলে অন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই সঠিক বলে রায় দেয়ার নিয়ম। তবে রভি তা না করে ধর্মসেনার সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করে তাইজুলকে আউট দিতে বাধ্য করেন।

স্টোকসের তৃতীয় বলে আবারও বল পায়ে লাগে শফিউলের। তবে এবারও পিচের বাইরে পড়ে বল। বলটি অফ স্ট্যাম্পে হালকা স্পর্শ করত। তবে এবারও ধর্মসেনা অনেক চিন্তা-ভাবনা করে শফিউলকে আউট দিলেন।
1
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনো ক্রিকেটার যদি শুধু পা এগিয়ে দিয়ে বল আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ওই বল যদি স্ট্যাম্পের কোথাও লেগে যায় তাহলে সেটা আউট। এক্ষেত্রে শফিউল পায়ের সঙ্গে ব্যাটও এগিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ব্যাটটা পরে বলের দিকে যায়।

শফিউল ইসলাম রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি। টিভি আম্পায়ার ধর্মসেনার সিদ্ধান্তকে সঠিক রায় দিয়ে শফিউলকে আউট ঘোষণা করেন। আর বাংলাদেশকে মেনে নিতে হলো ২২ রানের পরাজয়।

এই টেস্টে মোট ২৬ বার রিভিউ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়েছে ১১ বার। তবে ধর্মসেনার সিদ্ধান্তই ভুল প্রমাণিত হয়েছে ৮ বার। বাকি তিনটি ক্রিস গ্যাফেনির।কুমার ধর্মসেনার বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এ নিয়ে হইচই হয়েছে বেশিই।

টুইটারে এমনই একটি টুইট করেছেন ক্রিকেট ম্যাগাজিন ‘দ্য ক্রিকেটার’ এর সম্পাদক সাইমন হিউজ।তিনি লিখেছেন, ‘স্টোকসের চমৎকার বোলিং, তবে বাজে আম্পায়ারিং করেছেন ধর্মসেনা। তার দুটি সিদ্ধান্তই ভুল গেছে। শফিউল শট খেলতেই গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ভালো ছিল না।’

ফেসবুকেও অনেকেই এই বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছন। বিশেষ করে টাইগার ভক্তরা।সাহেদ খান নামের একজন তার ফেসবুকে লেখেন, বাজে আম্পায়ারিং … যেন দুর্বলের বিরুদ্ধে সবল মোড়লের ম্যাচ; একদিন আমরাও মোড়ল হব; সেদিন বেশি দূরে নয়!

রাসেল মাহমুদ নামের আরেকজন লেখেন, বার বার বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার কেন হতে হবে? যে দুইটা এলবি দেয়া হয়েছে সেটা কোনোভাবেই এলবি হতে পারেনা। দলকানা পাড়ার আম্পায়ারও এমন সিদ্ধান্ত দেবেনা।ফেসবুকে মহসিন ভুইয়া নামের এক ক্রিকেটভক্ত লেখেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে এত বাজে আম্পায়ারিং ভাবা যায়!

মোহাম্মদ ইরফান খান লেখেন, বাংলাদেশ বাজে আম্পায়ারিংয়ে কারণেই হারল এই ম্যাচ। তাদের ডিসিশন সবসময় ছোট দলগুলোর বিপক্ষেই বেশি যায়। আইসিসি দালালি থেকে আর বের হতে পারল না।মুনশি আল আমিন মুমিন লেখেন, আমি মনে করি আজকে আমাদেরকে হারানো হয়েছে। আমি শফিউলের আউট নিয়ে বলব না।

কিন্তু তাইজুলের আউটা নিয়ে আমি সন্ধিহান। কারণ আম্পায়ারের নট-আউট সিদ্ধান্তের পরও লেগ স্ট্যাম্পে সামান্য লাগা বলটা কিভাবে টিভি আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেয়। আমি যত খেলা দেখেছি, সবগুলাতেই দেখেছি যে ফিল্ড-আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত শুধু মিডেল স্ট্যাম্প ছাড়া টিভি আম্পায়ার পরিবর্তন করে না।

কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় ঘটেছে তার উল্টোটা।বাংলাদেশ এবারই বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়েছে তা নয়। এর আগে গত নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে খেলার সময় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে যায়। তখন আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন ইয়ান গোল্ড এবং আলিমদার।