• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

২০-দলীয় জোট কালো পতাকা মিছিল-নির্বাচনের কথা নেই


প্রকাশিত: ১১:২৯ পিএম, ১৬ আগস্ট ১৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২২ বার

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল বের করে। ছবি: সাজিদ হোসেন

 প্রিয়া রহমান, ঢাকা: 

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে কালো পতাকা মিছিল করেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী মিছিলে অংশ নেন।

আজ শনিবার বিকেল চারটার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। প্রতিবাদ জানাতে নেতা-কর্মীরা বুকে কালো ব্যাজ পরে, হাতে  কালো পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন।

মিছিল চলাকালে নয়াপল্টন থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঢাকার বাইরে সব মহানগর ও জেলা সদরেও কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মিছিল শুরুর আগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকে বানানো অস্থায়ী মঞ্চে  সংক্ষিপ্ত  বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাঁরা সারা বিশ্বকে জানাতে চান বাংলাদেশের মানুষ গাজায় নিগৃহীত মানুষের সঙ্গে আছে। স্বাধীন ভূখণ্ডের সংগ্রামে ফিলিস্তিনের মানুষ  জয়ী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই মিছিল সরকারের বিরুদ্ধে নয়, গাজায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে। তাই এখানে সরকারবিরোধী কোনো স্লোগান হবে না।’

মিছিলে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ইসলামী ঐক্যজোট, গণতান্ত্রিক জাতীয় পার্টিসহ ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

কালো পতাকা মিছিলে ২০-দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম, আব্দুল মঈন খান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য সেলিম উদ্দিন , কল্যাণ পার্টির সভাপতি মো. ইবরাহিম প্রমুখ।

বিএনপি-জোটের আন্দোলন-  নির্বাচনের কথা নেই

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট মিছিল-সমাবেশসহ নতুন কর্মসূচি দিয়েছে। তবে নির্দলীয় সরকারের অধীন নতুন নির্বাচনের দাবিতে নয়, সম্প্রচার নীতিমালা ও গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জোটের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ আগস্ট এই কালো পতাকা মিছিল এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে ১৯ আগস্ট ঢাকাসহ সারা দেশে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এ ছাড়া ২১ থেকে ৩১ আগস্ট জেলা ও মহানগরে গণসংযোগ করবেন জোটের নেতারা।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর এই জোট প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দিল। এর আগে রমজান মাসে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঈদের পরই সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন শুরুর কথা বলেছিলেন। এ ব্যাপারে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁদের এসব কর্মসূচি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলনেরই অংশ। জনগণের সামনে যে সমস্যা ও দুর্ভোগ আসে, তা নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করবে বলে তিনি দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল জানান, গত সোমবার ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে নতুন এসব কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। ওই বৈঠকে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা তানভীর আদেল খান ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা শফিকুল ইসলামসহ (মাসুদ) জোট নেতাদের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও মুক্তির দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান, পদ্মায় লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের জন্য শোক এবং সম্প্রচার নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
মির্জা ফখরুল জানান, ১৬ আগস্ট কালো পতাকা মিছিল শুরু হবে বেলা তিনটায় নয়াপল্টন থেকে। ঢাকার বাইরে সব মহানগর ও জেলা সদরেও এ কর্মসূচি পালন করা হবে। সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে ১৯ আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং অন্যান্য মহানগর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়াসহ জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি: জোটের কর্মসূচি ঘোষণার আগ দিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগামী ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর মধ্যে রয়েছে ৩১ আগস্ট আলোচনা সভা, ১ সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও প্রামাণ্য আলোকচিত্র প্রদর্শনী। ২ সেপ্টেম্বর শোভাযাত্রা বের করা হবে। এ কর্মসূচির স্থান ও সময় পরে জানানো হবে।