বিমানের চোরাচালান সিন্ডিকেট ধরতে উড়োজাহাজ জব্দ
শফিক আজিজ.ঢাকা:
বিমানের চোরাচালান সিন্ডিকেট ধরতে এবার উড়োজাহাজ জব্দ করেছে কাস্টমস।দেড় বছর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১২৪ কেজি সোনা আটকের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০ কর্মীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
১০ বিমান কর্মী হলেন উড়োজাহাজ মেকানিক মাসুদুর রহমান, মেকানিক অ্যাসিসট্যান্ট আনিস উদ্দিন ভূঁইয়া, জুনিয়র ইন্সপেকশন অফিসার শাহজাহান সিরাজ, জুনিয়র সিকিউরিটি অফিসার কামরুল হাসান, ক্লিনিং সুপারভাইজার আবু জাফর, মেকানিক মজিবর রহমান, প্রকৌশল হ্যাঙ্গারের মেকানিক ওসমান গনি, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার সালেহ আহমেদ, হ্যাঙ্গারের কর্মী রায়হান ও মাকসুদ। তাঁদের মধ্যে প্রথম ছয়জন বিভিন্ন সময়ে সোনা চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে আবার জামিনে মুক্তি পান।
বাকি আসামিরা হলেন ভারতের নাগরিক জ্যাসন প্রিন্স, পরবর্তী সময়ে ১২৪ কেজি সোনার দাবিদার নেপালের নাগরিক গৌরাঙ্গ রোসান ও তাঁর বাংলাদেশি এজেন্ট বাংলাদেশের এস এস কার্গোর চেয়ারম্যান মিলন শিকদার ও জসীম উদ্দিন।
ঢাকা কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জামাল গতকাল শুক্রবার রাতে বিমানবন্দর থানায় এ মামলাটি করেন। মামলায় বিমান কর্মীদের বাইরে বাকি চার আসামির মধ্যে একজন ভারতীয়, একজন নেপালের নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশি রয়েছেন।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, শুল্ক আইন অনুযায়ী চোরাচালান পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত বিমানের ওই এয়ারবাসটি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করতে হয়েছে। তিনি জানান, জব্দ করার পর এয়ারবাসটি শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। শর্ত হলো, শুল্ক কর্তৃপক্ষ যখনই চাইবে উড়োজাহাজটি হাজির করবে।
গত বছরের ২৪ জুলাই দুবাই থেকে আসা বিমানের একটি উড়োজাহাজের কার্গো হোল থেকে ১২৪ কেজি ওজনের এক হাজার ৬৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। শুল্ক বিভাগের হিসাবে যার মূল্য ৫৪ কোটি টাকা। এ যাবৎ ধরা পড়া সোনার চালানের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় চালান।
এ ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কমিটি এই সোনা পাচারের ঘটনায় জড়িত হিসেবে ১৪ জনকে চিহ্নিত করে গত ২৬ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে মামলা করার জন্য এনবিআর ২ ডিসেম্বর ঢাকা কাস্টম হাউসকে নির্দেশ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে মামলা করা হয়।
বিমান সূত্র জাতিরকন্ঠকে জানায়, ১০ বিমান কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার কথা তাঁরা শুনেছেন। পুলিশের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে।এজাহারভুক্ত সব আসামি এখন বাইরে আছেন। শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করা এখন পুলিশের দায়িত্ব।