• বৃহস্পতিবার , ১৪ নভেম্বর ২০২৪

গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে খালেদা জিয়ার দুর্বিষহ জীবন যাপন


প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ১৫ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২৯ বার

khalada-3333আসমা খন্দকার.ঢাকা:
গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে খালেদা জিয়া দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। ১৯ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ করেই গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চলে গেলে অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান হয়।দশম সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তি ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি ঘোষণার পর ৩ জানুয়ারি নিজ কার্যালয়ে গিয়ে আটকা পড়েন খালেদা জিয়া।ওই রাতে এবং ৫ জানুয়ারি বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তাকে বেরোতে দেয়া হয়নি। এ দুটি সময় ছাড়া ১ মাসে কার্যালয়ের দোতলায় নিজের অফিস ঘর ও পাশের একটি কক্ষেই সীমাবদ্ধ রয়েছে তার চলাচল। দীর্ঘ এই সময়ে প্রথম ১৬ দিন পুলিশের ট্রাক ও জলকামানসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেষ্টনী তৈরি করে তার কার্যালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে।

এদিকে প্রায় ২০ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেও গুলশান কার্যালয়ে এখনো দেওয়া হয়নি টেলিফোন নেট ও ডিস সংযোগ। পুলিশি পাহারায় অবরুদ্ধ অবস্থায় কার্যালয়ে সর্বোচ্চ শোকাচ্ছন্ন অবস্থা, বিদ্যুৎহীন অন্ধকার, গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে এক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন খালেদা জিয়া। টেলিফোন নেট ও ডিস সংযোগ না থাকায় আন্দোলনরত সারাদেশের নেতাকর্মী লন্ডনে থাকা তারেক রহমান, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সদ্য বিধবা পুত্রবধূ ও দুই নাতনির খোঁজখবর নিতে পারছেন না তিনি।

khalada-2222১৯ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ করেই গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চলে গেলে অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান হয়। ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকো ইন্তেকাল করেন। ছেলের মৃত্যুতে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। এই শোক কাটিয়ে উঠতে-না উঠতেই গত শুক্রবার তার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, টেলিফোন, টিভি, ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ ছিন্ন করা হয়। ১৯ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হলেও অন্যান্য সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া।

এদিকে, সোমবার কার্যালয়ে প্রবেশে নজিরবিহীন কড়াকড়ি আরোপ করে পুলিশ। দিনভর কাউকে ঢুকতে এবং ভেতর থেকে কাউকে বেরও হতে দেয়া হয়নি। এমনকি সাংবাদিকদেরও ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ।

গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, ৩ জানুয়ারি রাত থেকেই গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে অবস্থান করছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, মিডিয়া উইং কর্মকর্তা সাইরুল কবির ও শামসুদ্দিন । খালেদা জিয়াকে সহায়তা করার জন্য তার গৃহকর্মী কুলসুম রয়েছেন প্রথমদিন থেকেই।

সূত্র মতে, বিভিন্ন সমস্যায় জীবনযাপন করছেন খালদা জিয়া। তিনি বাসার অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাড়ির তৈরি করা খাবার এলেও খাবার এক রকম খান না বললেই চলে। আগেই পরিমিত খাবার খেতেন। কোকোর মৃত্যুর পর তা হয়ে গেছে একেবারে অনিয়মিত। তিনি এখন জায়নামাজে পার করেন। দুকক্ষের মধ্যেই একরকম বন্দি জীবন পার করতে হচ্ছে তাকে। তার কক্ষে অ্যাটাচড বাথরুম থাকলেও তা বড় নয়। এ নিয়ে কিছুটা অসুবিধায় রয়েছেন তিনি। গুলশানের বাসায় দিনের কিছু সময় দোতলার বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করতেন তিনি। এছাড়া বাসার কক্ষগুলো ছিল বড়। কিন্তু কার্যালয়ে তার কক্ষটি অনেক ছোট। সব ধরনের যোগাযোগ থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন। খবরাখবর আহরণে তাদের একমাত্র মাধ্যম এখন পত্রপত্রিকা। তাই সকালে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।