• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

সরকার অচল চক্রান্ত ফাঁস করলো জয়


প্রকাশিত: ৯:২৬ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ১৭ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৪ বার

এস রহমান  :  সরকার অচল করার একটি চক্রান্ত ফাঁস করলেন সজিব ওয়াজেদ জয়। সরকারকে অচল করে দেয়ার একটি ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের joyজানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। পদত্যাগকারী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ঘিরে এই চক্রান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।সোমবার ধানমন্ডিতে বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে জয় এ কথা বলেছেন বলে অংশগ্রহহণকারী একাধিক নেতা নিশ্চিত করেন।

বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন জয়। তুলে ধরেন সাম্প্রতিক এক জরিপের কথা। জয়ের দাবি, তার করা জরিপ বলছে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যত ব্যবধানে জিতেছে, এখন নির্বাচন হলে জয়ের ব্যবধান হবে আরও বেশি।রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় জয় বলেন, ‘বড় ধরনের একটা ষড়যন্ত্র ছিল, সরকার অচল করে দেয়ার জন্য। আপনাদের সাহসী পদক্ষেপে এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে পারায় আপনাদের ধন্যবাদ।’

গত ১০ নভেম্বর বিদেশ থেকে পদত্যাগ করা সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিষয়টি নিয়ে তার আগের কয়েক মাস ধরে দেশ ছিল সরগরম। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায়ে তার লেখা বিভিন্ন মন্তব্য ক্ষুব্ধ করে সরকারি দলকে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান নানা মন্তব্যে।এর মধ্যে ২ অক্টোবর এক মাসের ছুটি চান সিনহা। ছুটি অনুমোদন করেন রাষ্ট্রপতি। আর ১৩ অক্টোবর এক মাসের সফরে দেশের বাইরে যান সিনহা। তার আগেই ছুটির মেয়াদ ১০ দিন বাড়ান হয়।

যাওয়ার সময় সিনহা বলে যান, ‘পালিয়ে যাচ্ছি না, আবার ফিরে আসব।’ তবে ছুটি শেষে ১০ নভেম্বর তিনি সিঙ্গাপুর দূতাবাসের মাধ্যমে পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়ে দেন।
সিনহা দেশের বাইরে যাওয়ার পর দিন সুপ্রিম কোর্ট থেকে এক বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, নৈতিক স্খলনসহ ১১টি গুরুতর অভিযোগ থাকার কথা জানানো হয়।

এসব অভিযোগ উঠায় আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি সিনহার সঙ্গে বসে বিচার কাজ না করার কথা তাকে জানিয়েছেন বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।জয় সিনহাকে ঘিরে চক্রান্ত চললেও সেটি কী ধরনের ছিল সে বিষয়ে নেতারা কিছু জানাতে চাননি।ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে কে নেতৃত্ব দেবে, সেটা দেখতে দলের নেতাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষায় থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

‘লিডার -ফিউচারে’
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জয়কে দলের ‘ফিউচার লিডার’ বলে উল্লেখ করেন। এ সময় জয় বলেন, ‘আগে ফিউচার আসুক। ফিউচার আসলে ফিউচারে দেখা যাবে।’ ২০১৬ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছিলেন শেখ হাসিনা। এমনকি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন নেতৃত্ব নির্বাচনের সময়ও তিনি নতুন কাউকে বেছে নেয়ার অনুরোধ করেন। তবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলররা শেখ হাসিনা ছাড়া আর কারও নাম প্রস্তাব করেননি। পরে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

এই সম্মেলনের পরও দলের এক আয়োজনে বলেছেন, এবারেই শেষ। আর দলের নেতৃত্ব থাকতে চান না তিনি। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফকে জয় বলেন, ‘আপনাকে এখন কথাবর্তা কম বলতে দেখা যায় কেন?’।জবাবে হানিফ বলেন, ‘দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তো কথা বলেন।’ এর জবাবে জয় বলেন, ‘শুধু ওবায়দুল কাদের কথা বললেই হবে না। কেন্দ্রীয় নেতা সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে কথা বলতে হবে।’

সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপ্রচারের’ জবাব দিতে ‘অলআউট ক্যাম্পেইনিং’ এ নামতেও দলের নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পুত্র। বলেছেন, ‘আমাদের মিডিয়া দখলে রাখতে হবে।’‘মানুষের মধ্যে এখন মাইন্ডসেট হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক কিন্তু বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে সেই মানুষের মাইন্ডসেট ভেঙে দিতে চইছে। এটা মোকাবেলায় আমাদের মিডিয়া দখল রাখতে হবে।’

জয় বলেন, ‘৭৫ পরবতী সময়ে বিএনপিসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তিরা মিডিয়া দখল করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অব্যাহত রাখে। এটা আর হতে দেয়া যাবে না।’
‘বিএনপি সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের দল; খুনিদের আড্ডাখানা এই দলে। এগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।’জয় বলেন, ‘সরকারে দৃশ্যমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তুলে ধরতে হবে। আমাদের দৃশ্যমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা অব্যাহত রাখতে পারলে ভবিষ্যত নিবাচনে বিএনপি নির্মূল হয়ে যাবে।’

কৌশল হিসাবে সব ধরনের সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ছাড়াও মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার বাড়ানোর  তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রচারের নামার ইচ্ছার কথাও নেতাদেরকে জানান জয়।ছয় মাসের মধ্যে কোন্দল মেটানোর তাগিদ বৈঠকে দ্রুত দলের কোন্দল মেটাতে নেতাদেরকে তাগাদা দেন জয়। বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে সর্বস্তরের কোন্দল নিরসন করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন শক্তি আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবে না।’সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও মতামত রাখেন দীপু মণি, আব্দুর রহমান, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। কথা বলেন, সহযোগী সংগঠনের নেতারাও।