৯৩ কোটি টাকার স্বর্ণ-হীরার কাগজ নেই আপন জুয়েলার্সে?
বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশে যে সোনার দোকানের মালিকের ছেলের বিরুদ্ধে দু’জন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে, সেই আপন জুয়েলার্সের দোকান থেকে ৯৩ কোটি টাকার বেশি স্বর্ণ ও হীরা সাময়িক জব্দ করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর, যার কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।
ঢাকার শুলশানে আপন জুয়েলার্সের বিক্রয়কেন্দ্রে সোমবার অভিযান চালানো হয়। রাতে অধিদপ্তরের ফেসবুক পাতায় আটকের এই তথ্য জানানো হয়।
রাতে শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের ফেসবুক পাতায় জানানো হয়েছে, দোকানটি থেকে ২১১ কেজি স্বর্ণ আর ৩৬৮ গ্রাম হীরা আটক করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের বৈধ সরবরাহের কোন কাগজ দেখাতে পারেননি আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ।আটককৃত স্বর্ণ ও হীরার মূল্য ৯৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আইনানুগভাবে সাময়িক আটক করে এগুলো দোকানের ভল্টে সিলগালা করে জিম্মা দেয়া হয়েছে।বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ও দোকান মালিক সমিতির প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে এই প্রতিষ্ঠানটির পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র সিলগালা করে দেয়া হয়। কিন্তু যে বিক্রয় কেন্দ্রটিতে আগে অভিযান চালায়নি শুল্ক গোয়েন্দারা, সেটিতে সোমবার অভিযান চালিয়ে এই বিপুল স্বর্ণালঙ্কার আটক করা হয়।
আপন জুয়েলার্স নামে ওই জুয়েলারিটিতে বিপুল পরিমাণ সোনা এবং হীরা মজুদ কোথা থেকে এলো সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যাখ্যা দিতে না পারার অভিযোগে আপন জুয়েলার্স এর মালিকদের আগামী ১৭ই মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।কিন্তু এর প্রতিবাদ জানিয়ে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে জুয়েলার্স সমিতি বলেছে, এ ধরণে অভিযানের মাধ্যমে সারাদেশে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ অবশ্য দাবি করছে জুয়েলারি খাতের অন্য ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বনানীতে দু’জন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ আপন জুয়েলার্স এর অন্যতম মালিক।
বনানীর ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার প্রেক্ষাপটে এই জুয়েলারির সোনা এবং হীরার মজুদ নিয়ে প্রশ্ন উঠে। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আপন জুয়েলার্সের বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি মালিকদেরও তলব করে।শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ড: ময়নুল খান বলেছেন, সোনা এবং হীরার মজুদ নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বলেই আপন জুয়েলার্সের মালিকদের তলব করা হয়েছে।
মি. খান বলেছেন, ধর্ষণের অভিযোগ এবং আপন জুয়েলার্সের বিক্রয়কেন্দ্রে অভিযান – দুটিকে এক বিষয় হিসেবে মোটেই দেখা হচ্ছে না। অন্য ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।বনানীর যে রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল বলে অভিযোগ এসেছে, সেই হোটেল কর্তৃপক্ষকেও অবৈধভাবে মদ রাখার অভিযোগে ১৭ই মে তলব করা হয়েছে।