৭ জনের করুণ মৃত্যু নির্বাচনী সহিংসতায়
নির্বাচনী সহিংসতায় জামালপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় সাতজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জামালপুরে তিনজন, নোয়াখালীতে দুইজন, চট্টগ্রামে সদস্য প্রার্থী এবং কুমিল্লায় চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হয়েছেন। খবর জাতিরকন্ঠ জেলা প্রতিনিধিদের।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকার বড় উঠান ইউনিয়নে ভোট চলার মধ্যে ছুরিকাঘাতে এক মেম্বার প্রার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত মো. ইয়াছিন (৪০) ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদে প্রার্থী ছিলেন। পুলিশ জানায়, শনিবার বেলা সোয়া একটার দিকে ইউনিয়নের শাহ মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাশে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় ইয়াছিন প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইয়াছিনের পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
নোয়াখালী : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের পাশের একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে এক ব্যক্তি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেছেন। নিহত সৈয়দ আহমেদ (৬৫) পাশ্ববর্তী আলাদিনগর গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের স্বজনরা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে রায়গঞ্জ বাজার থেকে ওই ভোট কেন্দ্রের পাশ দিয়ে শহীদ বাড়ি ফিরছিলেন।
এ সময় ওই কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হওয়া লোকদের সরিয়ে দিতে আইন শৃঙ্খলার বাহিনী ধাওয়া করে। এ সময় দৌঁড়ে স্থান ত্যাগ করার সময় শহীদ পাশের একটি দেয়ালে ধাক্কা খায়। এতে শহীদ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে একই উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের কালীকাপুর হাইস্কুল কেন্দ্রে আমওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই মেম্বার প্রার্থী সংঘর্ষের সময় শাকিল (১৬) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা নেয়ার পথে দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকালে ভোটগ্রহণের সময় উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খুঁটিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হলেন-নুরুল ইসলাম (৫৫) ও তার ছেলে জিয়াউল হক (৩৫)। তাদের বাড়ি উপজেলার কুতুবের চরে। অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি।
দেওয়ানগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল হান্নান জানান, সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা বাধা দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। সংঘর্ষ চলাকালে কোনো এক পক্ষের গুলিতে দুজনের মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা : কুমিল্লার তিতাসে ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে কুপিয়ে ও টেটাবিদ্ধ করে কামাল উদ্দিন (৫০) নামে বিএনপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। ওই চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানায়, নিহত ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
নাগেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বলরামপুর কেন্দ্রে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন বালুর মাঠ এলাকায় বিকাল ৩টার দিকে তাকে কুপিয়ে ও টেটাবিদ্ধ করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তিতাস হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মুঠো ফোনে ঘটনাস্থল থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) ইকবাল হোসেন হাজারী ও তিতাস থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।