• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

১৫ জেলায় বন্যা


প্রকাশিত: ৮:৩৫ পিএম, ৬ জুলাই ২৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪০ বার


ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষ: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি : পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১৫ জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।শনিবার সচিবালয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, ফেনী, রাঙ্গামাটি, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার- এই ১৫ জেলা বন্যার কবলে পড়েছে।

বন্যা আক্রান্ত মানুষের জন্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে মহিববুর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত ১৫ জেলায় এ পর্যন্ত নগদ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, ৮ হাজার ৭০০ টন ত্রাণের চাল, ৫৮ হাজার ৫০০ বস্তা শুকনো ও অন্যান্য খাবার, শিশু খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তবে ১৫টি জেলার সব মানুষ পানিবন্দি নয়। কোনো কোনো জেলা আংশিক বন্যাকবলিত। এখন পর্যন্ত আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৩৬ হাজার ২২৩ জন মানুষ রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনগুলো থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তবে কেউ মারা যায়নি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সামনে আরও বিস্তৃত এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। তখন সেসব জায়গাতে আমরা কাজ করাব। বন্যার কারণে দক্ষিণ দিকের বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হতে পারে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রও দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়ার আভাস দিচ্ছে।

কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টায় দেশের ১০টি নদীর পানি ২১টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছিল। ওই সময় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪২টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬৩ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচ পয়েন্টে।আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরা-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বাড়ার আভাস এসেছে।বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে। ৭ জুলাইয়ে দিকে উন্নতির দিকে যাবে, তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ১১ জুলাই পর্যন্ত লেগে যাবে।

নতুন করে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখছেন কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী মহিববুর বলেন, আগামী মাস (অগাস্ট) কিংবা তার পরের মাসেও (সেপ্টেম্বর) এ রকম আরেকটা বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বন্যার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।বন্যাকবলিত কয়েক লাখ মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানিসহ ত্রাণের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

তবে ত্রাণ সংকট নিয়ে যেসব খবর আসছে, সে বিষয়ে তার দৃষ্টি আকষণ করা হলে তিনি বলেন, সবার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। তারপরও বিভিন্ন সময় পত্রিকায় দেখি, কোনো কোনো জায়গায় খাদ্য পায়নি। এ জন্য আমরা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব। স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্য, ডিসি, ইউএনও, যে যখন যেটা চাচ্ছে আমরা দিচ্ছি। ত্রাণের সংকট থাকার কোনো কারণ নেই।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি বন্যাদুর্গত এলাকায় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত।

এবার জুনের শুরুতে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত ১৭ জুন কোরবানির ঈদের আগের দুদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণাসহ আশেপাশের জেলার অনেক এলাকা ডুবে যায়।উজানের ঢলে জুলাইয়ের শুরুতে নতুন করে বন্যা দেখা দেয় ওই তিন জেলায়। তারপর বন্যা দেখা দেয় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। বন্যা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোববার বন্যাকবিলত টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে যাচ্ছেন সেখানকার অবস্থা দেখতে।