• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

১ম-২য় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল


প্রকাশিত: ৭:২৫ পিএম, ৩ অক্টোবর ১৮ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৮ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে সচিব কমিটি যে সুপারিশ করেছিল, তাতে সায় দিয়েছে সরকার।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার/বাতিলে’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।

সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “কমিটির রিপোর্ট মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। তিনটি সুপারিশ ছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, কোটা বাতিল এবং কোটা বাতিলের ফলে বিদ্যমান জনগোষ্ঠীর বিষয়ে যথাপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।”

মন্ত্রিসভা সচিব কমিটির তিনটি সুপারিশই অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে শফিউল বলেন, যদি কখনও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য কোটার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তবে সরকার তা করতে পারবে।তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা বহাল আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আজ-কালের মধ্যে আমরা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। আশা করছি দুই-তিন দিনের মধ্যে (প্রজ্ঞাপন) হয়ে যাবে।”

সরকারি চাকরির নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেয়।

ওই কমিটির সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর বুধবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোলা হয়।সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এতদিন ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

এই কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। তাদের সেই আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। তবে পরে সংসদে তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাই কোর্টের রায় আছে।

এদিকে নতুন করে আন্দোলন দানা বাঁধার প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গত ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার।শফিউল আলম গত ১৩ অগাস্ট সাংবাদিকদের বলেন, তারা সরকারি চাকরির কোটা ‘যতটা সম্ভব’ তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করবেন। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটার বিষয়ে যেহেতু আদালতের রায় আছে, সেহেতু এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া হবে।

সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মতামত চাওয়া হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার মতামত সরকারকে জানান।সব কাজ শেষে সরকারি চাকরির নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ জমা দেয় সচিব কমিটি।প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর বুধবার তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে কোটা বাতিলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়।