হাউস অব লর্ডসের সংলাপে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকায় অংশ নেয়নি আ’লীগ
আন্তজার্তিক ডেস্ক রিপোর্টার : হাউস অব লর্ডসের সংলাপে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকায় অংশ নেয়নি আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দিপু মনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে আসছি জামায়াত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। ওই দলের সদস্যদের সাথে আমরা বসতে পারি না। কিন্তু এই সংলাপে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ফলে আমরা এই সংলাপে অংশ গ্রহণ করিনি।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সেমিনার কক্ষে মঙ্গলবার স্থানীয় সময়ে বিকালে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে বিএনপি প্যানেল অংশগ্রহণ করলেও অবশেষে সরকারিদল আওয়ামী লীগের প্যানেলটি আলোচনা থেকে সরে এসেছে।
বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে লজ্জিত। তাদের মুখ দেখানোর মতো কোনো অবস্থা নেই। কারণ তারা ৫ জানুয়ারি সংবিধানের অজুহাত দেখিয়ে একটি জগণ্য নির্বাচন করার পর বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওয়াদা করেছিল যে স্বল্পসময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তারা ক্ষমতার লোভে আজ পর্যন্ত সেই ওয়াদা রক্ষা করেনি।ফলে গণতন্ত্রকামী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।’
এদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ প্রসঙ্গে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমাদেরকে জানানো হয়েছিল যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উদ্যোগে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। পরে আমরা জানতে পারি যে এই সংলাপ একজনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে আমরা এতে অংশগ্রহণ সমীচীন মনে করে নি।
এছাড়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস অব কনজারভেটিব পার্টির উদ্যোগে দুপুরে ভূড়ি ভোজের আয়োজন ছিল সেখানে অংশ গ্রহণ করেছি।বুধবার আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার এন্ড কমার্সের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করবো।’
অপরদিকে সংলাপের আয়োজক হাউস অব লর্ডসের সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কারলাইল এপ্রসঙ্গে লিখিত বিবৃতি প্রধান করেন। এতে তিনি বলেন, ‘সরকারি দল আওয়ামী লীগ এই সংলাপে অংশগ্রহণ না করে আমাদেরকে হতাশ করেছে। এটা ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে অপমান ও অসম্মান করার সামিল।এহেন পিছুটান কাপুরুষিচিত বটে।’
ফরেইন এন্ড কমনওয়েলথ বিষয়ক স্টেট্ মিনিস্টার মার্ক ফিল্ড বলেছেন, ‘আগামীতে বাংলাদেশে সকল দলের অংশ গ্রহণে একটি ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য।’ উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারের আলোচ্য বিষয়ে ছিল ‘বাংলাদেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদ’।
আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহণ না করায় সংলাপটিতে বিরোধী দল হিসাবে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্ত্বে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন কবির ও সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বক্তব্য পেশ করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক নীতি নির্ধারক কর্মকর্তা মি. ডোরিন পালাঘিসিইউসি, যুক্তরাজ্যের ফরেইন এন্ড কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রধান নিক মেলার, মানবাধিকার কর্মী মীনাক্ষী গাঙ্গলীসহ হাউস অব কমন্সের কয়েকজন সদস্য এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।