হবির নেশা মানুষ খুন
ভাড়াটে কিলার পাকড়াও করেছে ময়মনসিংহ ডিবি-
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : টাকা পেলে মানুষ খুন করে ভাড়াটে কিলার হবি। পুরো নাম হাবিবুর রহমান হবি। মানুষ করাই হবির পেশা। তবে সে এ পর্যন্ত কয়টা খুন করেছে তা সে সম্পর্কে মুখ খোলেনি। ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ বলেছে, আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ হাবিবুর রহমান হবি নামের এক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বলেছে গ্রেপ্তারকৃত হবি চুক্তিতে খুন করতেন।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা। পরে বিকেলে আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন হবি।জেলার গফরগাঁও উপজেলার দত্তেরবাজার ইউনিয়নের বিরুই গ্রামের মৃত সোলাইমান শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান হবি (৪৮)। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
২০০৩ সালের একটি হত্যা মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হবি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। কিশোরগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে বসবাস করতেন হবি।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে ময়মনসিংহ ডিবির একটি দল গফরগাঁও উপজেলার খুরশিদ মহল সেতু এলাকায় চেকপোস্ট বসায়। সেই চেকপোস্টে আটক করা হয় হবিকে। ওই সময় তার কাছ থেকে একটি রিভলভার, একটি একনলা বন্দুক, রিভলবারের চার রাউন্ড গুলি ও বন্দুকের ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ১০ জানুয়ারি দত্তের বাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিনের ছেলে লিটন মিয়াকে গুলি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি এখন সুস্থ আছেন। এ ঘটনাটির সঙ্গে হবি নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফরিদ ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত জাহাঙ্গীর মেমার, আলাল সান ও সোহেল মিলে ২ লাখ টাকায় লিটনকে খুনের চুক্তি করে হবির সঙ্গে। চুক্তির ৫০ হাজার টাকা ফরিদ তুলেও দেয় হবির কাছে। চুক্তি অনুযায়ী একনলা বন্দুক দিয়ে লিটনকে রাতের আঁধারে গুলি করে হবি। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। হবিকে গ্রেপ্তারের পর লিনটকে খুনের চুক্তি ও গুলি চালানোর কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে। পরে হবির তথ্য অনুযায়ী বিএনপি নেতা ফরিদকে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়।
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, হবি মূলত একজন প্রফেশনাল কন্ট্রাক্ট কিলার। তিনি ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যায়, রাজনৈতিক বিরোধে হবিকে চুক্তি করা হয় লিটনকে খুন করার জন্য। এ ছাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারও লক্ষ্য ছিল। এ ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছিল। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।