• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বর্ণে বিনিযোগ সবসময় লাভজনক বাজুস ফেয়ার উদ্বোধনকালে বসুন্ধরা এমডি


প্রকাশিত: ১:৫০ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২৩ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৮ বার

স্টাফ রিপোর্টার : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেছেন, স্বর্ণ কিনলে খাঁটি স্বর্ণ কিনবেন। কারণ, স্বর্ণ খাত বাংলাদেশে বিনিয়োগের নিরাপদ ক্ষেত্র, এই বিনিযোগ সব সময় লাভজনক। এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বাজুস প্রেসিডেন্ট বলেন, গত ২০ বছরে স্বর্ণের দাম ১৫ গুণ বেড়েছে। তাই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ কিনলে খাঁটি স্বর্ণ কেনার পরামর্শ দেন বাজুস প্রেসিডেন্ট।

আজ বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে তিনদিনব্যাপী বাজুস ফেয়ার-২০২৩ এর উদ্বোধন করেন বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘নারীর ঐতিহ্য, নারীর গহনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক কবি শাহনাজ মুন্নী। সঞ্চালনা করেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাবরিনা সোবহান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, অভিনেত্রী জোতিকা জ্যোতি, ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুলি, ইডেন ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়াল, বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুস প্যানেল ল’ইয়ার ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন উইমেন অ্যাফেয়ার্স ভাইস-চেয়ারম্যান সোহানা রউফ চৌধুরীসহ বাজুস নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদসের নারী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘আমি বাজুস মেলায় এসে আনন্দিত। দ্বিতীয়বারের মতো এ মেলা শুরু হওয়ায় সবাইকে শুভকামনা জানাই। এখানে একটি বিষয় বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে সেটা হলো—স্বর্ণের দাম বেশি, কিনতে গেলে দাম বেশি, বিক্রি করতে গেলে দাম কম। ’

সবাইকে বুঝে শুনে স্বর্ণ কেনার পরামর্শ দিয়ে বাজুস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি পিওর গোল্ড কেনেন তাহলে বিক্রির সময় দামে ব্যবধান হবে না। জুয়েলারি কেনার সময় দেখতে হবে কাচের টুকরো, মিনা বা ডায়মন্ড আছে কিনা। ভ্যালুয়েশন কিন্তু এভাবে হয়। সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ কিনলে পিওর গোল্ড কিনতে হবে। কাঁচের টুকরা সঙ্গে নেবেন না। তাহলে বেচার সময় এই দুঃখটা থাকবে না। ’

সায়েম সোবহান আনভীর আরও বলেন, ‘স্বর্ণের দাম আমরা নির্ধারণ করি না, আন্তর্জাতিক বাজারে নির্ধারণ হয়। সেটার আঙ্গিকে দেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশে ২০ বছর আগে স্বর্ণের দাম প্রতি ভরি ছিল ৬ হাজার টাকা। বর্তমানে ভরি ৯০ থেকে ৯২ হাজার টাকা। অর্থাৎ ১৫ গুণ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই যদি স্বর্ণকে সম্পদ হিসেবে চিন্তা করেন তাহলে আগামী ২০ বছরে কী হতে পারে? এখন ৯০ হাজার, ৯ লাখও হতে পারে এটা। এভাবে চিন্তা করতে হবে। শুধু দাম বাড়লো সেটা নিয়ে হতাশ। যারা আগে কিনেছেন তারা কত লাভবান হয়েছেন, সেটাতো কেউ চিন্তা করেননি। সেটা চিন্তা করেন। ’

বাজুস প্রেসিডেন্ট বলেন, স্বর্ণ এবং ভূমিতে বিনিয়োগ পৃথিবীতে কখনো লোকসান হয়নি। যে বুদ্ধিমান, যার অলস অর্থ আছে… আপাতত বাংলাদেশে দুইটা জায়গা আছে নিরাপদ বিনিয়োগের। একটা হলো জমি, যা গত ২০ বছরেও দাম কমেনি। আর একটা হলো স্বর্ণ, এটাও গত ২০ বছরে দাম কমেনি। আমি আশা করি, আপনারা সবাই এই দুইটা মাধ্যমে থাকবেন।

মূল বক্তব্যে নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী বলেন, তিন হাজার বছর আগে থেকে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি ও ব্যবহার শুরু হয়। এরপর মোঘল আমল থেকে স্বর্ণালঙ্কারের সাথে দামি রত্নের ব্যবহার শুরু হয়। ১৮ শতক থেকে গহনার আধুনিক যুগ হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশে সব সময় স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা ছিল। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে স্বর্ণের ভরি ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। কালের বিবর্তনে স্বর্ণের দাম বেড়েছে বহুগুণ, সাথে পরিবর্তন এসেছে স্বর্ণালঙ্কারের ডিজাইনে। গহনা পছন্দ করে না এমন নারী খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজকে যে বাজুসের ফেয়ার হচ্ছে, সেখানে নানা ধরনের গহনা এসেছে। আমি আশা করবো বাজুস ফেয়ার সাফল্য পাবে।

বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন দ্বিতীয় বাজুস ফেয়ার ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাজুস ফেয়ার ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাজুস ফেয়ারে প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকিট লাগবে না।
বাজুস ফেয়ারে ক্রেতাদের জন্য র‌্যাফেল ড্র’র ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতারা যে প্রতিষ্ঠানের অলঙ্কার ক্রয় করবেন, সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই র‌্যাফেল ড্রর কুপন সংগ্রহ করবেন। জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে বিশেষ অফার দিচ্ছে। এবার বাজুস ফেয়ারে ৮টি প্যাভিলিয়ন, ১২টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৩০টি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে – আমিন জুয়েলার্স লিমিটেড, আপন জুয়েলার্স, অলংকার নিকেতন (প্রা.) লিমিটেড, কুঞ্জ জুয়েলার্স, রয়েল মালাবার জুয়েলার্স (বিডি) লি., ভেনাস জুয়েলার্স লিমিটেড, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড ও জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেড। মিনি প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া ১২টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে – ভিনায়েক গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড, গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড, গৌরব জুয়েলার্স, নিউ ফেন্সী জুয়েলার্স, দি পার্ল ওয়েসিস জুয়েলার্স, জায়া গোল্ড, জারা গোল্ড, আলভী জুয়েলার্স, রিজভী জুয়েলার্স, রয়েল ডায়মন্ড, ড্রিমজ ইন্সট্রুমেন্ট টেকনোলজি ও রাজ ঐশ্বরী গোল্ড।

স্টলে অংশ নেওয়া ৩০টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে – এল কে জুয়েলার্স, চৌধুরী গোল্ড, গীতাঞ্জলী জুয়েলার্স, রিয়া জুয়েলার্স, আনন্দ জুয়েলার্স, ডায়মন্ড হাউজ, আফতাব জুয়েলার্স, ফারিহা জুয়েলার্স, আই. কে জুয়েলার্স লিমিটেড, রজনীগন্ধা জুয়েলার্স লিমিটেড, সুলতানা জুয়েলার্স (প্রা.) লিমিটেড, নিবিড় জুয়েলার্স, সিরাজ জুয়েলার্স, ডায়মন্ড বাজার অ্যান্ড গোল্ড, অনন্যা জুয়েলার্স, ডায়া গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড, ডি. ডামাস দি আর্ট অব জুয়েলারি, ডি. ডায়মন্ড, কুইন পার্ল হাউজ, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্স, সোল জেমস অ্যান্ড ডায়মন্ড, পলাশ জুয়েলার্স, ক্লাসিক গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড জুয়েলারি, ডায়মন্ড কর্ণার, গোল্ড কিং জুয়েলার্স, দি সোনারগাঁ জুয়েলার্স, মনিমালা জুয়েলার্স, আর এন মাইক্রোটেক, বাংলাদেশ ডাইস হাউজ ও এসজিএল ল্যাব বাংলাদেশ লিমিটেড।