• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্পিকার ও সাবের চৌধুরীর সংবর্ধনা- বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্ব সংসদের আস্থা প্রকাশ


প্রকাশিত: ৭:০৮ পিএম, ২৩ অক্টোবর ১৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৬ বার

 

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন এবং সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় গতকাল তাঁদেরকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা l ছবি: বাসস 
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা:
সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনে আমাদের ভোট দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্ব সংসদ আস্থা প্রকাশ করেছে। এ দুটি সংগঠন গণতন্ত্র, সুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করে। সুনাম রক্ষা করতে হলে আমাদের এ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশ একটি কল্যাণময় রাষ্ট্র হয়।’

মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনসভার সর্বোচ্চ দুটি সংগঠনের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচন করে জিতেছেন বাংলাদেশের প্রার্থী। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরীকে জাতীয় সংসদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার এ কথা বলেন। শিরীন শারমিন কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাঁদের গতকাল সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত এই সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বোচ্চ দুটি সংগঠনের সর্বোচ্চ দুটি পদে দুজনকে মনোনয়ন দেওয়ায় আমাদের অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। এখন প্রমাণিত, আমরা মনোনয়ন দিয়ে ভুল করিনি। যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছি। এই জয় গণতন্ত্রের। গণতন্ত্রের বিজয় মানে মানুষের বিজয়। তাই এই অভিনন্দন দেশের মানুষের প্রাপ্য। ব্যক্তিগতভাবে কে কী পেলাম, তা বিবেচ্য নয়। দেশের মানুষ কী পেল, সেটাই বিবেচ্য।’
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের মডেল। উন্নয়নের এই যাত্রা অব্যাহত রাখতে সিপিএ ও আইপিইউতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন আরও সুসংহত হয়।’

আইপিইউর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, পতাকা বহন করা বা মন্ত্রী হওয়া বড় কথা নয়। সংসদ সদস্যপদকে হালকাভাবে নেবেন না। ইতিবাচক মনোবল ও সদিচ্ছা থাকলে শুধু সাংসদ হয়েই অনেক বড় কাজ করা সম্ভব। বাধা আসতে পারে। কিন্তু সাহস হারানো চলবে না।’

সাবের হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনে আমাদের ভোট দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্ব সংসদ আস্থা প্রকাশ করেছে। এ দুটি সংগঠন গণতন্ত্র, সুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করে। সুনাম রক্ষা করতে হলে আমাদের এ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশ একটি কল্যাণময় রাষ্ট্র হয়।’

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই বলে অনেক কথা হচ্ছে। গণতন্ত্র না থাকলে এই দুটি নির্বাচনে বাংলাদেশ জিতল কীভাবে? এ দুটি নির্বাচনে জিতে স্পিকার শিরীন শারমিন ও সাবের হোসেন চৌধুরী ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। এতে বোঝা যায়, দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন আছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ একই সময়ে বড় দুটি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে বিশাল সাহসের পরিচয় দিয়েছে। ভারত এ নির্বাচনে বাংলাদেশের পাশে ছিল। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশই আমাদের বলেছে, বাংলাদেশকে কেন দুটি পদ ছেড়ে দিতে হবে? যেকোনো একজনকে প্রত্যাহার করতে বলো। আমরা বলেছি, বাংলাদেশ নির্বাচন করবে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। এ বিজয় শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো উপমহাদেশের।’

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী ও সংসদ সচিবালয়ের সচিব আশরাফুল মকবুল। অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে শিরীন শারমিন ও সাবের হোসেন চৌধুরীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন ফজলে রাব্বী মিয়া এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আ স ম ফিরোজ।

জমকালো এই আয়োজনকে সফল করতে চার-পাঁচ দিন আগে থেকেই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয় সংসদ ভবন এলাকায়। সেই বর্ণিল আলোর ছটায় গতকাল সন্ধ্যার পর আলোকিত হয়ে ওঠে সংসদ ভবন।

আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান করেন শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মমতাজ ও কোনাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী, সাংসদ, অতিথিরা তা উপভোগ করেন।
এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।