সুমীর পরকীয়ায় পাগল নাগরী’র থলের বেড়াল বেরিয়ে আসছে:ওসি
বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কবি ও গীতিকার এবং সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন নাগরীর থলের বেড়াল বেরিয়ে আসছে ধীরে ধীরে। নাগরী শিকার করে নিয়েছেন তিনি সুমীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। সুমীর সঙ্গে সময় না কাটালে তার নাকি ঘুম হতোনা। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে নাগরী পুলিশকে বলেছে এজন্য অনুতপ্ত।
জিজ্ঞাসাবাদে নাগরী জানিয়েছেন, এই বয়সে পরনারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে তোলা ঠিক হয়নি। তিনি অনুতপ্ত। এই মামলার প্রধান আসামি নুরানী আক্তার সুমী জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সুমীর দাবি স্বামীর সম্মতিতে তিনি নাগরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার পর কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য দিচ্ছেন পুলিশকে। তবে পুলিশ মামলা তদন্তের স্বার্থে সেটি প্রকাশ করতে চাইছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউ মার্কেট থানার ওসি আতিকুর রহমান জাতিরকন্ঠকে বলেন, আমরা জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছি। নাগরীর থলের বেড়াল সব বেরিয়ে আসছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সব কিছু বলা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নাগরীকে গ্রেপ্তার করার সময় তিনি বিস্মিত হয়ে যান। যেন আকাশ থেকে পড়েন। রবিবার ভোর ৫টার দিকে পুলিশ নিকুঞ্জে তাঁর বাসায় অভিযান চালায়। পুলিশের সামনে গিয়ে তিনি জানতে চান তাঁকে পুলিশ কেন খুঁজছে। তাঁকে জানানো হয়, তিনি হত্যা মামলার আসামি।
শুনে যেন আকাশ থেকে পড়েন নাগরী। তিনি জানতে চান, কিসের হত্যা? কে কাকে হত্যা করেছে? ঠিক তখন পুলিশ নূরুল ইসলামের বোনের দায়ের করা হত্যা মামলার কপিটি দেখান তাঁকে। এ সময় নাগরী সেটিকে মিথ্যা, বানোয়াট বলে পুলিশকে এক ধরনের ধমক দিতে থাকেন। তখন পুলিশ বলে, থানায় চলুন। সেখানে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাবে। পরে তাঁকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
একটি সূত্র জানায়, থানায় নিয়ে যাওয়ার পরও নাগরী বলতে থাকেন, ঘটনাটির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি ওই বাড়িতে কোনো দিন যাননি। নূরুল ইসলাম বা সুমী নামের কাউকে চেনেনও না। পরে যখন পুলিশ কিভাবে তাঁর সঙ্গে সুমীর পরিচয়, প্রতিদিন কয়টার সময় তিনি ডম-ইনো ভবনে সুমীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতেন এবং কয়টার সময় বেরোতেন, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ছবির কথা নির্দিষ্ট করে বলতে শুরু করে, তখন তিনি নরম হতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন সুমীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও পরকীয়া প্রেমের কথা। বাড়িভাড়া থেকে শুরু করে সব খরচ চালানোর বিষয়টিও সত্য বলে মেনে নেন তিনি। এরপর ব্যক্তিজীবনের অনেক কথাই জানান পুলিশকে। তিনি পুলিশকে বলেন, ‘এই বয়সে এসব (পরকীয়া) করা ঠিক হয়নি। আমার নিজের সঙ্গে পরিবারেরও বড় ক্ষতি হলো। ’ তবে তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ নম্বর ডম-ইনো ভবনের একটি ফ্ল্যাটে রহস্যজনক মৃত্যু হয় নূরুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে বুঝতে পারে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় নূরুল ইসলামের স্ত্রী সুমী ও সুমীর গাড়িচালককে আটক করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ওই দিন ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন কবি শাহাবুদ্দীন নাগরী। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ।