সিলেটের জঙ্গি আস্তানার কাছে বিস্ফোরণ-নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়
সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ ঘিরে অভিযান চলাকালে শনিবার সন্ধ্যা ও রাতে দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয়জনে। এর মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। বাকি চারজন বেসামরিক নাগরিক।
শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জাতিরকন্ঠকে জানান, ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম মারা গেছেন। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।এ ছাড়া ওই ঘটনায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফাহিম নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাশেদুল ইসলাম।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রুহুল আমিন বলেন, দুই দফা বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে এখন হাসপাতালে ৪৩ জন আছেন। এ ঘটনায় নিহত চারজনকে মৃত অবস্থায় এই হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বলেন, বিস্ফোরণে আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনক একটি বেসরকারি হাসপাতালে চলে গেছেন। রুহুল আমিন জানান, বিস্ফোরণের ঘটনার পর হাসপাতালের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ওসমানী হাসপাতালের উপপরিচালক দেবপদ রায় তাদের হাসপাতালে চারজনের মরদেহ থাকার কথা জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক।
রাত পৌনে ১০টার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আকতারুজ্জামান বসুনিয়া একজন পরিদর্শকসহ দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। একজন হলেন সিলেট মহানগর পুলিশের পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু ফয়সাল। আরেকজনের নাম ওয়াহিদুল ইসলাম অপু (২৬)। তাঁর বাড়ি চাঁদনীঘাটে। তিনি মদনমোহন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বলে জানিয়েছেন তাঁর বন্ধু জয়শর্মা চৌধুরী। বন্ধুর ভাষ্য, দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ওয়াহিদুল সবার বড়। অপরজন হলেন শহীদুল ইসলাম (২৮)। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলার ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিক শিরিন মিয়া ও দক্ষিণ সুরমা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জনি লাল দের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহতদের মধ্যে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।