সিলেটের আতিয়া-মহল জঙ্গি আড়তে অভিযানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত
সিলেট থেকে মাসুদার রহমান : সিলেটের জঙ্গি আড়ত আতিয়া মহলে আজ রাতে সেনা অভিযানে প্রস্তুতি থাকলেও বাড়তি সতকর্তার কারণে অভিযান হয়নি। আজ শনিবার সকাল সাতটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার ওই বাড়িতে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানার প্রবেশপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান নিয়ে আছে। সকাল আটটার দিকে পৌঁছেছে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ফোর্স।
তাঁরা সেখানে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে এলাকার জনসাধারণ ও সংবাদকর্মীকে সরে যেতে বলা হয়েছে। এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।
এদিকে রাতে সিলেটে বজ্রসহ বৃষ্ঠির কারণে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। আজ ভোর রাতে সেখানে পৌঁছেন কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
এখন চলছে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় যেকোনো মুহুর্তে অভিযান শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন শৃঙ্থলা বাহিনী। এর আগে পুরো জঙ্গি আস্তানাটি কর্ডন করা ছিল। ধীরে ধীরে জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’র কাছে ভিড়তে দেখা গেছে প্যারা কমান্ডো ও সোয়াত বাহিনীকে। তারা পার্শ্ববর্তী কয়েকটি ভবনের ভেতরে ও ছাদে অবস্থান নিয়েছেন।
রাতে অভিযান চালালে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে বিধায় ভোরে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র জানায়, রাতে দফায় দফায় বৈঠক ও কৌশল নির্ধারণের পর সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো এবং সোয়াত টিম অভিযানের কৌশল নির্ধারণ করেছে। অভিযানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে প্যারা কমান্ডোর। কিন্তু ভোরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার পরপরই আকস্মিক বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়।
এর আগে জঙ্গিরা অবস্থান করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাঁচতলা বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। গতকাল দিনভর বারবার মাইকে আহ্বান জানিয়েও ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ভেতর থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।
অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটের একটি দল গতকাল বিকেলে সিলেটে পৌঁছায়। রাতভর সোয়াট ও স্থানীয় পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রাখে। সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি যায়। পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া গতকাল জানান, পুলিশকে সহায়তা দিতে সেনাসদস্যরা এসেছেন।
পুলিশের ধারণা, আতিয়া মহল নামের বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে। ভেতরে একজন নারী থাকার কথা নিশ্চিত হলেও মোট কতজন আছে, সেটা জানা যায়নি। তবে পুলিশের ধারণা, ভেতরে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাইনুল ওরফে মুসা রয়েছেন।আতিয়া মহল নামে পাঁচতলা ওই বাড়িটিতে মোট ২৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে।