‘সিটিং চিটিং নৈরাজ্য চালাচ্ছেন নেতারা’
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীজুড়ে গণপরিবহন নৈরাজ্য নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, আমরা পুরো সিস্টেমটার পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছি। কিন্তু সমস্যা এখানে এতো আন্ডার মানি পে করে, নেতারা এতো আন্ডার মানি পেতেন, সেটা ভাঙতে কষ্ট হচ্ছে।
আশা প্রকাশ করে মেয়র বলেন, তবে আমরা চেষ্টা করছি, অনেক দূর এগিয়েছি। এবছরই রাজধানীতে ৬ থেকে ৭টি হোল্ডিং কোম্পানিতে বাস নামানো হবে। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকালে গুলশান-২ নং সার্কেল এলাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের অবৈধ ব্লক অপসারণ অভিযান চলাকালে এ মন্তব্য করেন মেয়র।
মেয়র আনিসুল হক বলেন, রাজধানীতে প্রায় ২০০টি রুটে ২০০ জন মালিকের ৬ হাজার ৩৯০টি গাড়ি রেজিস্ট্রি করা আছে। এই দু’শ’ রুট মানে এখান থেকে ফার্মগেট, গুলশান-২, গুলশান-২ থেকে গুলশান-১, গুলশান-১ থেকে নতুনবাজার। আমরা চেষ্টা করছি এতোগুলো মালিককে ৬ থেকে ৭টি হোল্ডিং কোম্পানিতে নিয়ে আসতে। তখন আর তার বাসে কে উঠলো, না উঠলো এটা কোনো ব্যাপার থাকবে না। এটা করতে পারলে বাসের মারামারি কবে যাবে।
তিনি বলেন, এজন্য আমাদের ৬ থেকে ৭টি রুট তৈরি করতে হবে। গ্রিন রুট, রেড রুট। এটা করতে পারলে তখন রাস্তায় বাসে মারামারি করবে না। কারণ সেই বাসে যদি একজন যাত্রীও না ওঠেন, তারপরেও সেই কোম্পানি শেয়ারের মতো তার টাকা পাবেন। রাস্তার মারামারিটা বন্ধ হয়ে যাবে। আর বাসগুলো এই ৬ থেকে ৭টি হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
কাজটা সহজ না জানিয়ে মেয়র বলেন, রাজধানীতে ৬ হাজার ৩৯০ বাসের মধ্যে ৪ হাজার নতুন বাস থাকবে। বর্তমানে রাস্তায় ১ থেকে দেড় হাজার নতুন বাস আছে। এই বাসগুলো রাস্তায় রেখে বাকিগুলো তুলতে হবে। আমরা এই দেড় বছরে প্রায় ২৬টি মিটিং করেছি বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে।
‘এর পেছনে বিরাট একটি চক্র আছে। যেমন ছিলো সাত রাস্তাতে, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে। এখানে এতো আন্ডার মানি পে করে। আশার কথা এই চক্র থেকে অ্যাসোসিয়েশনের মালিকরা বুঝেছেন যে শহরে শৃঙ্খলা আনতে হলে একটা নতুন পদ্ধতি বের করতে হবে। অনেক বড় বড় দেশ আছে যারা ভালো কাজ করছে। সেই সব দেশ রাজি হয়েছে। আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে এসেছি। ’
তিনি বলেন, রাজধানী থেকে প্রায় দুই হাজার বাস তুলে নিতে হবে। কি হবে সেটাও এখনও জানি না। ‘ইটস এ বিগ ফাইট’। কিন্তু আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আমরা একমত হয়েছি এটাই হলো বড় কথা। আশা করি আগামী মাসে আমরা অ্যাসোসিয়েশনের মালিকদের সঙ্গে বসে স্বাক্ষর করবো। তারপর সংবাদ সম্মেলন করে জানাবো। এখন যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে রুট ঠিক করা, ইলেকট্রনিক্স পদ্ধিতিতে টিকিটিং করা।
এছাড়া ড্রাইভারদের সমস্যা দূর করতে আমার একটা বড় ড্রাইভারস একাডেমি করতে চাই। টার্মিনাল, ওয়ার্কশপ করা হবে। এ চিন্তাভাবনা নিয়ে এক বছর আগে যেখানে ছিলাম, সেখান থেকে অনেক দূর এগিয়েছি। তবে সময়ের ব্যাপার। আশা করি এ বছরেই কিছু বাস নেমে যাবে। বাকি ৪ হাজার বাস কিনতে এক দেড় বছর লেগে যাবে।