সিংড়ায় সনদ জালিয়াতি-লুটপাট অর্ধকোটি
নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় ভূয়া সনদ এবং জালিয়াতি করে ৬জন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে আলহাজ জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের নজরুল ইসলাম (৫০) নামের এক সুপারকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া উপজেলা পরিষদ চত্ত¡র থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক নজরুল ইসলাম উপজেলার থাওইল গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।
দুদক রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম জানান, ২০১৬সালের ১৫ফেব্রয়ারী সিংড়ার আলহাজ জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে শূন্য পদে ৬জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণি, স্কীলস এবং ট্রেনিং এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট এর উপ-প্রকল্প পরিচালক জয়দেব সাহা সহ নিয়োগ বোর্ডের অন্য সদস্যদের অনুপস্থিতিতে স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া সনদ এবং জালিয়াতি করে ২০১১সালের ৩মার্চ থেকে ওই স্কুলের সিভিল কন্সট্রাকশনের ট্রেড ইন্সট্রাক্টর রবিউল করিম সহ ৬জন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়।
এতে ২০১৩ সালের জানুয়ারী থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত নিয়োগ প্রাপ্ত ৬জন শিক্ষক মোট ৪২লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। পরে দুদকের অনুসন্ধানে তথ্য বেরিয়ে আসলে বৃহস্পতিবার সকালে আলহাজ জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক কর্মকর্তারা। পরে অর্থ আত্মসাতের মামলায় সুপার নজরুল ইসলামকে উপজেলা চত্বর থেকে আটক করে কোর্ট হাজতে প্রেরন করে দুদক কর্মকর্তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, দুদক রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ, এএসআই গোলাম মোস্তফা। মামলার সূত্র জানায়, দুদক রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে ভ‚য়া সনদ এবং জালিয়াতি করে শিক্ষক ও সরকারী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তৎকালীন সিংড়া, বর্তমানে নওগাঁর পোরশা উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলী, বগুড়া টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ আহাম্মদ হোসেন, আলহাজ জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুপার নজরুল ইসলাম, কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হানিফুজ্জামান এবং সিভিল কন্সট্রাকশনের ট্রেড ইন্সট্রাক্টর রবিউল করিম এর নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
দুদক কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্ত বাকি ৫জন শিক্ষকের নামে আলাদা আলাদা মামলা দায়ের করা হবে। প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য ফেরদৌসি বেগম ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাহবুবুর রহমান জানান, নজরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠান প্রধান হওয়ার পর থেকে কোন অর্থনৈতিক হিসাব দেননি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ভূয়া নিবন্ধন ও ভূয়া সনদধারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রচুর অর্থ আত্মসাৎ করেছে সুপার। আর স্কুলে কোন নিয়ম কানুন নেই। এছাড়াও নাটোর আদালতে আটক সুপারের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের আরো একটি মামলা চলমান রয়েছেন বলে জানান তিনি।