• বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যে নোবেল পেলেন কাজুও ইশিগুরো


প্রকাশিত: ৭:৩৬ পিএম, ৫ অক্টোবর ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৮৩ বার

 

বিশেষ প্রতিনিধি :  সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন ব্রিটিশ সাহিত্যিক কাজুও ইশিগুরো (৬৩)। বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেলজয়ী হিসেবে তার নাম kazuo-www.jatirkhantha.com.bd----ঘোষণা করা হয়। আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে ইশিগুরোর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কার হিসেবে তিনি ৮০ লাখ ক্রোনার পাবেন।

ইশিগুরোকে নোবেল বিজয়ী ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি জানায়, তার অসাধারণ আবেগময় উপন্যাসগুলোর মাধ্যমে বিশ্বের সাথে যোগাযোগে তিনি আমাদের অপার্থিব অনুভূতির গভীরতম প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

পুরস্কার ঘোষণার সময় একাডেমির সারা ড্যানিয়াস ইশিগুরোর লেখার স্টাইল সম্পর্কে বলেন, তার লেখা জেন অস্টিন এবং ফ্রান্ৎজ কাফকার মিশ্রণ, তবে এর সাথে তোমাকে কিছুটা মার্সেল প্রুস্তকেও মেশাতে হবে এবং তারপর তুমি নাড়াবে, কিন্তু খুব বেশি নয় এবং তারপর তুমি পাবে তার লেখাগুলো।

এর আগে ১৯৮৯ সালে ‘দ্য রিমেইনস অব দ্য ডে’ উপন্যাসের জন্য তিনি ‘ম্যান বুকার’ পুরস্কার পেয়েছিলেন। জাপানি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ লেখকের জন্ম জাপানের নাগাসাকিতে ১৯৫৪ সালের ৮ নভেম্বর। ১৯৬০ সালে ঔপন্যাসিক, চিত্রনাট্যকার এবং ছোট গল্প লেখক কাজুও-র বয়স যখন ৫ বছর তখন তার পরিবার ইংল্যান্ডে চলে আসে।

আটটি বই লিখেছেন কাজুও ইশিগুরো, আর এই আটটি বই মোট চল্লিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
কাজুও ইশিগুরোর উপন্যাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ‘দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে’ এবং ‘নেভার লেট মি গো’। এ দুটো উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রও তৈরি করা হয়েছে। সাহিত্যে নোবেল জয়ের পর কাজুও ইশিগুরো বিবিসি’কে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, “আমি অবাক হয়েছি, হতবিহ্বল হয়ে পড়েছি। এখনো নোবেল কমিটির কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা ভুয়া কোনো খবর কিনা সে বিষয়েও তিনি নিশ্চিত নন।

“এটা অবশ্যই দারুণ সম্মানের বিষয়, এমন পুরস্কার জয় করা মানে বড় বড় লেখকদের পাশে আমাকে দাঁড় করানো।যারা বিশ্বজুড়ে দামী লেখক, তাদের কাতারে আমাকে রাখা হচ্ছে, এটা অবশ্যই অনেক প্রশংসনীয়।” গত বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন প্রখ্যাত মার্কিন সংগীতশিল্পী ও গীতিকার বব ডিলান। যুক্তরাষ্ট্রের সংগীত ঐতিহ্যে নতুন কাব্যিক ধারা সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে ডিলানকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয় বলে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো।

তবে ডিলানের নোবেল পুরস্কার নিয়ে অনেক নাটকীয়তা হয়েছিল। পুরস্কার ঘোষণার পর এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি। স্টকহোমে গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নোবেল পুরস্কার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যাননি তিনি। কেবল একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। ওই অনুষ্ঠানের তিন মাসেরও বেশি সময় পর নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেন ডিলান।

এর আগের বছর ২০১৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন সভেতলানা আলেক্সিয়েভিচ  নামের একজন নারী সাংবাদিক। বেলারুশের ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তি এবং প্রথমবারের মতো সাংবাদিক হিসেবে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। সোভিয়েত যুগের আনবিক দূষণ নিয়ে ডকু-ফিকশন ‘এ মনুমন্টে টু সাফারিং অ্যান্ড করেজ ইন আওয়ার টাইম’ বইয়ের জন্য এ পুরস্কার পান তিনি।

১৯০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাহিত্যে ১১৪ জনকে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন ১৪ জন নারী। দুইজনকে যৌথভাবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেছে ২ বার। সাহিত্যে নোবেল পাওয়া সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হলেন রুডইয়ার্ড কিপলিং। ৪১ বছর বয়সে ‘দ্য জাংগল বুক’ এর জন্য তাকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। আর সাহিত্যে নোবেলজয়ী সর্বোজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হলেন ডোরিস লেসিং। ২০০৭ সালে যখন লেসিংকে পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয় তখন তার বয়স ছিল ৮৮ বছর।