সাবাস টাইগার:বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে পূজা-
রাজশাহী প্রতিনিধি : সাবাস টাইগার সংঘ! এবার এই টাইগাররা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আদলে পূজা মন্ডপের প্যান্ডেল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। দূর্গা উৎসবের এই প্যান্ডেল দেখতে সকলে ভিড় করছে রাজশাহীর রানীবাজারে।এবার সারাদেশের ন্যায় ১৫ অক্টোবর থেকে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। টাইগার সংঘ প্রত্যেক বছর নতুন বিষয় নিয়ে প্যান্ডেল সাজায়। ২০১৬ সালে ক্রিকেটে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদানকে স্মরণ করে বাঘের মুখের আদলে প্যান্ডেল সাজিয়েছিল। ২০১৭ সালে ‘বাহুবলী’ সিনেমার পোস্টারের প্যান্ডেল করেছিল। আর এবার সাজিয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর আদলে।
টাইগার সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর আদলে প্যান্ডেল সাজানোর একমাত্র উদ্দেশ্য আমাদের দেশের অর্জনকে হাইলাইট করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে এত বড় সাফল্য দেশবাসীকে উপহার দিয়েছেন মূলত আমরা সেটিকেই আরও ভালোভাবে সবার সামনে তুলে ধরতেই এই কাজ করেছি।’
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আদলে করা পূজার প্যান্ডেল তিনি আরও বলেন, টেলিভিশন, পত্রপত্রিকা তো সমাজের এক শ্রেণির মানুষ দেখে বা পড়ে। সমাজের অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ, ছোট ছোট বাচ্চারা এ সম্পর্কে এখনও ভালোভাবে জানে না। তাদের প্যান্ডেলে যারা আসবে তাদের মধ্যে এটা সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হবে। তাই প্রতি বছরের মতো আরও একটি ব্যতিক্রমী বিষয়কে বেছে নিয়েছেন তারা।টাইগার সংঘের সদস্য পলাশ রায় বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি। এর একটা প্রচার হিসেবে প্যান্ডেল এভাবে সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশ ভালো কিছু করেছে, সেটিকে স্বাগত জানিয়েই সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি।’
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালাইসিস্ট বিমলেন্দু শেখর সরকার ছেলে সোহম সরকারকে নিয়ে টাইগার সংঘের প্যান্ডেলে প্রতিমা দেখতে এসেছেন। এখানে কেন এসেছো-জানতে চাইলে ছয় বছরের সোহম উত্তর দেয়, ‘প্রতিমা দেখতে।’ প্রতিমা ছাড়া আর কী দেখতে পাচ্ছো-জানতে চাইলে সে বলে, ‘একটা পৃথিবী আর একটা স্যাটেলাইট।’ তুমি স্যাটেলাইট সম্পর্কে জানো? ‘জানি, মোবাইলের ভালো নেটওয়ার্ক আর কম্পিউটারের কাজে লাগে।’
প্যান্ডেলে প্রতিমা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা এমন আয়োজন সম্পর্কে বিমলেন্দু বলেন, ‘এটি অনেক ভালো উদ্যোগ। কয়েকদিন ধরে দেখছিলাম গম্বুজের মতো কিছু একটা করার চেষ্টা করছে। পরে দেখলাম স্যাটেলাইট। এভাবে প্যান্ডেল সাজিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টিকে তুলে ধরার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।’
প্যান্ডেল দেখতে এসেছেন বিম্বজিত দত্ত। তিনি বললেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে চমৎকার একটি উদ্যোগ। টাইগার সংঘ প্রতিবছর নতুন কিছু করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিজ্ঞান মেলা বা কোনও প্রদর্শনীতে এত বড় পরিসরে এমনভাবে দেখানোর সুযোগ থাকে না, আর সেখানে সবাই যেতেও পারে না। এটি সর্বসাধারণের আসার জায়গা। আমি চাই মানুষের জীবনকে যে বিষয়গুলো আরও আধুনিক করে, যুগোপযোগী ও আরও সহজ করে এমন আরও নতুন নতুন বিষয় যেন আগামীতে এভাবে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হয়।’
রাজশাহীর পূজা মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে দেখলেন দিপক সাহা। তিনি বলেন, ‘স্যাটেলাইটের এমন দৃশ্যমান চমৎকার একটি সাজসজ্জা দেখে আমি অভিভূত। অনেক ছবি তুলেছি বন্ধুদের দেখাতে চাই এবং বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে আবার আসতে চাই।’টাইগার সংঘ ৩৭ বছর ধরে পূজার আয়োজন করছে। প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে সাজানো হয়েছে এই প্যান্ডেল। অর্থের জোগান সম্পর্কে আয়োজকরা জানান, ডোনার, সিটি করপোরেশন, মেয়রের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে টাকা পেয়েছে তারা। আর সরকারি অনুদান হিসেবে ১০০ কেজি চাল বরাদ্দ হয়েছে। বাকিটা সংঘের সদস্যরা দিয়ে থাকে।