শুক্রবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে কঠোর আইন আসছে, যাতে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা থাকবে। আইনটি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। অচিরেই এর বাস্তবায়ন হবে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালে গত এক মাসে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও যানবাহনে আগুন দেওয়া বা পেট্রোল বোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। নাশকতা ও সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা অর্ধশত পেরিয়ে গেছে, যাদের অনেকেই মারা গেছেন দগ্ধ হয়ে।
অবরোধের কারণে পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হরতালের কারণে এবারের এসএসসি পরীক্ষাও শুরু হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ দেরিতে।এই সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও ও প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। সংযমী হওয়ার আহ্বান এসেছে জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও।
হরতাল বন্ধের দাবি নিয়ে আওয়ামী লীগের গত সরকারেও সংসদে আলোচনা হয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের কর্মসূচির সমালোচনা করে আইন করার কথা বলেছেন।
হরতাল-অবরোধে ব্যবসা-বাণিজ্যের ‘অপূরণীয়’ ক্ষতির কথা জানিয়ে গতমাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদও বলেছেন, হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি বন্ধে তারা আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আলোচনা সভায় বলেন, খালেদা জিয়া পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে ছাত্রসমাজকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন এবং ছাত্রসমাজের কাছে ঘৃণিত হয়েছেন।
সংকট নিরসনে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা আবারও নাকচ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সন্ত্রাসে জয়ী হয়ে রাজনীতিতে চিরতরে পরাজিত হয়েছেন। যদি সন্ত্রাস ও সহিংসতার দায় স্বীকার করেন, তবে তার সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এর আগে নয়।অবশ্য অবরোধ-হরতালে নাশকতার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকারের লোকেরাই এসব ঘটিয়ে ২০ দলীয় জোটের কর্মীদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চলমান রাজনীতি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু একাডেমি’র এ আলোচনা সভায় সংগঠনের সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী, সংগঠনের উপদেষ্টা ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।