• শুক্রবার , ১৫ নভেম্বর ২০২৪

সন্দেহ করছে সবাই-ক্ষমতার রাবণদের কারণে মানুষের অনাস্থা: হাসনাত


প্রকাশিত: ১০:৪৬ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৫ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এত বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকার থাকার একটা প্রভাব আমাদের মধ্যে রয়েছে। আমরা এখন ক্ষমতাকে ভয় পাই। সবাই মনে করে ক্ষমতায় যে যায়, সে রাবণ হয়।তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা যেটা ফেস করছি, সবাই আমাদের সন্দেহ করছে। কেন সন্দেহ করছে, কারণ আমরা যে ফরমেটে রয়েছি, এই ফরমেটে অতীতে যারা ছিল, তারা এই সুযোগটাকে ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে ক্যাশ করার চেষ্টা করেছে বা ক্যাশ করেছে। যে কারণে মানুষের একটা অনাস্থা তৈরি হয়েছে। তারা কেন আমাদের বিশ্বাস করবে? এটা জনগণের কোনও ভুল না। এটা তাদের অভিজ্ঞতার কারণে হয়েছে।

রবিবার (১৫ সেপ্টম্বর) টিআইবি আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন‌: তরুণদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা হয়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফ সোহেল, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব। এছাড়া উন্মুক্ত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যমকর্মী ও উপস্থাপক ফারাবি হাফিজ, তরুণ কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন, রম্যলেখক ও গণমাধ্যমকর্মী শিমু নাসেরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

হাসনাত বলেন, আমি মনে করি, কোথাও না কোথাও আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আমি যদি সব ফর্মের ক্ষমতাকে ডিসওন করা শুরু করি তাহলে পরিবর্তন কাদের মধ্য দিয়ে আসবে? কোনও একটা ক্ষমতার ওপর তো আমাদের নির্ভর করতেই হবে। কোথাও না কোথাও তো আমাকে নোঙর ফেলতেই হবে।হাসনাত বলেন, জনগণ বিভিন্ন সময় আস্থা দিয়ে আহত হয়েছে। ৪৭ এ হয়েছে, ৭১ এ হয়েছে, ৯০ পরবর্তীতে হয়েছে। এখন ২৪ পরবর্তীতে মানুষ আমাদের মধ্যে আস্থা ইনভেস্ট করতে ভয় পাচ্ছে। এটা জনগণের কোনও ভুল না। এটা তাদের অভিজ্ঞতার কারণে হয়েছে।

তবে দেশের জনগণ নিয়ে আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক। তিনি বলেন, মানুষ এখন যেভাবে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করছে, দ্বিমত পোষণ করছে। আমার অর্থের উৎস কোথায় সেই প্রশ্ন করা হয়। এটা আমার ভালো লাগে। প্রশ্ন করার এই চর্চাটা অনেক ইতিবাচক। কারণ আপনি যদি নিকট অতীতে যান, এসব প্রশ্নের বিনিময় মূল্য ছিল। কিন্তু আমাদের যে প্রশ্নগুলো করা হচ্ছে, এর কোনও বিনিময় মূল্য নেই। এটা নিছকই ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার একটি দৃষ্টান্ত এবং এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এই প্রশ্ন করার চর্চাটা আমাদের অব্যহত রাখতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে নতুন রাজনৈতিক শক্তির বিকাশের অপরিহার্যতা রয়েছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতানুগতিক রাজনৈতিক দল দিয়ে এই চেতনার বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নয়, বরং ব্যক্তিগত জায়গা থেকে এই মতামত দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নয়, বরং ব্যক্তি হিসেবে আমি মনে করি, যে চেতনা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে, সেই চেতনার ধারক হিসেবে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তির বিকাশের অপরিহার্যতা রয়েছে। এখন এটি কখন হবে, কীভাবে হবে, কারা নেতৃত্ব দেবে সেটি আমাদের দেখার বিষয়। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং আমি সকলকে চাই। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অংশ নিতে হবে। প্রত্যেককে দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের শুধু বললেই হবে না– আগের মতো হচ্ছে কেন? অন্যথায় কনভেনশনাল পলিটিক্যাল ফোর্সের দ্বারা সেটি বাংলাদেশে হবে এটা আমার পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন।