সঙ্গীতে জীবন ফিরে পেল তরুণী
ডেস্ক রিপোর্টার : সঙ্গীতে জীবন ফিরে পেল তরুণী! শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শুনে কোমা থেকে ফিরে আসলেন এক তরুণী। টানা ৩১ দিন কোমায় থাকার পর অবশেষে মৃত্যুকে হারাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। গতকাল শুক্রবার বিচিত্র এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরবঙ্গে।টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৬ নভেম্বর হঠাৎই চোখ উল্টে সংজ্ঞাহীন পড়েন সঙ্গীতা দাস (২১)। এর তিনদিন পর জানা গেলো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত তিনি। পরে এমআরআই করে জানা যায়, তার মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে একাধিক কোষ মারা গেছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে দেখেননি চিকিৎসকরা। সংক্রমণ আর রক্তক্ষরণের ধাক্কায় মস্তিষ্কের এত কোষ মরে গেছে যে থ্যালামাস আর সাড়া দিতে পারছিল না। সে সময়েই শুরু হয় মিউজিক থেরাপি।
এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক সন্দীপ কর পণ্ডিত এন রাজনকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেরাপির কথা বলেন।এ প্রসঙ্গে আইটিইউ ইনচার্জ রজত বলেন, ‘এ রোগীকে ফেরাব কী করে, ভেবে কূল পাই না। কারণ, এর আগে পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে এমন জটিলতার নজির এ পর্যন্ত এ দেশে আর একটিই। ২০১২-তে সে রোগীকে বাঁচাতে পারেনি।’
রজত আরও জানান, চিকিৎসক সন্দীপ কর তাকে মিউজিক থেরাপির পরামর্শ দেন। তিনিই বেছে দেন, ঠিক কী শোনাতে হবে। সন্দীপের কথায়, ‘মস্তিষ্কে দরবারি কানাড়ার সুফল প্রমাণিত। যেহেতু সঙ্গীতার পছন্দ-অপছন্দ জানতে পারিনি, তাই ভরসা রেখেছিলাম দরবারি কানাড়াতেই। এত ভালো ফল মিলবে, সত্যি ভাবিনি।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়ে, সঙ্গীতার ওষুধের সঙ্গেই চলে মিউজিক থেরাপি। আধ ঘণ্টা করে দিনে তিন বার এই থেরাপি দেওয়াতেই গভীর কোমা থেকে ফিরে এসেছেন সঙ্গীতা। ঠিক ৩১ দিনের পর কোমা থেকে বেরিয়ে এখন চোখ মেলে দেখছেন চারদিক। সামান্য নাড়াতে পারছেন হাত-পা। ঘোরাতে পারছেন ঘাড়। খুলে দেওয়া হয়েছে ট্র্যাকিয়োস্টোমির টিউব, এমনকি রাইলস টিউবও। বাবার হাতে এ দিনই প্রথম খাবার খেলেন তিনি।
মেয়ের মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসাতে আবেগপ্রবণ সঙ্গীতার বাবা শিবপ্রসাদ। তিনি বলছেন, ‘আমি নৈহাটি পুরসভার অ্যাম্বুলেন্স চালাই। রোগী ঘাঁটা আমার অভ্যাস। আমি জানি, কোন অতল খাদ থেকে সঙ্গীতাকে তুলে এনেছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। ডাক্তারবাবুরা সত্যিই ভগবান!’