‘শিগগির কারাগারে মোবাইল ফোনের সুবিধা পাবেন বন্দিরা’
গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার প্রাঙ্গণে আয়োজিত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।এসময় তিনি বলেন,আমাদের সরকার কারা বিভাগের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। যার ফলে কারা বিভাগের অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে কারা সপ্তাহ উপলক্ষে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার প্রাঙ্গণে আয়োজিত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় আজ কারাবন্দিদের মোবাইল বা টেলিফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় স্পর্শকাতর বন্দিদের কারাগার থেকে আদালতে ভিডিও কনফারেন্সিং পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। কারা প্রশাসন র্যাবের সহযোগিতায় বন্দিদের ডাটাবেজ তৈরি করছে। যাতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘কারা বিভাগের জন্য তিন হাজার ১০৭ জন জনবলের সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছে এবং আশা করি, অতি শিগগিরই এর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তা ছাড়া সরকারি অন্যান্য পোশাকধারী সংস্থার সঙ্গে মর্যাদা ও পদোন্নতির সামঞ্জস্য খতিয়ে দেখে গ্রেড উন্নতিকরণের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একসময় কারাগার শুধু সাজা কার্যকরের স্থান হিসেবে পরিগণিত হতো। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশ জেল তার পূর্বতন ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে নতুন পথের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আজ বাংলাদেশ জেলের সদস্যরা কারাবন্দিদের সংশোধন করে সমাজের পুনর্বাসন করার চেতনা ধারণ করে কারা সাপ্তাহ উদযাপন করছে, যা শুধু কারা বিভাগের নয়, আমাদের সরকারের সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এর আগে সকালে মন্ত্রী কারাগার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল হাসান উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী একটি খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কারা সপ্তাহের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সেরা জেল ও বিভাগকে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ক্রেস্ট প্রদান করেন। এ সময় তিনি কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য আটজনকে পুরস্কার দেন।
পরে মন্ত্রী কারারক্ষীদের মনোমুগ্ধকর শারীরিক কসরত প্রদর্শন উপভোগ, কেন্দ্রীয় প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন, রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন, প্রিজন পপুলেশন স্ট্যাটিসটিকস ২০১৭ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং বিশেষ দরবারে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণসহ কারা বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তারা।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরে কারা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের জন্য ‘কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি’ রাজশাহী, কারা নিরাপত্তা আরো শক্তিশালী করতে ‘কারা নিরাপত্তা আধুনিকায়ন প্রকল্প’, মহিলা কারারক্ষীদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে ‘মহিলা কারারক্ষী আবাসন প্রকল্প’ এবং ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্প’ সরকার একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুমোদন দিয়েছে। পরে মন্ত্রী কাশিমপুর কারা ক্যাম্পাসে আয়োজিত কারা মেলা পরিদর্শন করেন।