লেক বানাতে যমুনা-বসুন্ধরার সঙ্গে আপস নয়: প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা:
২০১৩ সালের এপ্রিলে কুড়িল ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-
যমুনা ও বসুন্ধরার মতো কোনো আবাসন নির্মাতা কোম্পানির সঙ্গে আপস না করে কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশে লেক বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারো আপত্তিতে কান না দিয়ে ‘দ্রুত’ কাজ শেষ করতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।রোববার সকালে সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিব ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের ওখানে যেখানে দুটো লেক করার কথা, আমি জানি অনেক বাধা আছে। ওখানে পুলিশের কিছু জায়গা পড়েছে তারা বাঁধা দেয়। তারপরে যমুনা ও বসুন্ধরা- তাদেরও ঘোর আপত্তি। তবে এই আপত্তিতে কিছু যায় আসে না।মূল প্ল্যানে আছে দুটো লেক হবে। কাজেই এটা খুব দ্রুত করা দরকার। কারো আপত্তি মানার কোনো প্রয়োজন নাই।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ওই লেকের সঙ্গে সরাসরি নদীর যোগাযোগ থাকবে। বন্যা বা ভারী বৃষ্টির সময় ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্যই ওই লেক জরুরি।এর আগে গত ২৫ অগাস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকেও কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পগামী রাস্তার দুই পাশে লেক তৈরির ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী, যে লেকের সঙ্গে বালু নদীর সংযোগ থাকবে।
১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি জলাশয়ে ‘সাইনবোর্ড টাঙিয়ে’ ভূমি দখলকারী আবাসন নির্মাতাদের ‘ভূমিখেকো’ আখ্যায়িত করেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়কে ‘শক্ত’ হতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।রোববার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশের ওই এলাকায় লেকের বদলে ‘বক্স কালভার্ট’ করতে চাইছে যমুনা বা বসুন্ধরা গ্রুপ।
কোথাও কোনো বক্স কালভার্ট হবে না। সব লেক হবে, ওপেন লেক হবে। দরকার হলে লেকের পাশ দিয়ে ব্রিজ করে নেবে তারা। তাদের পয়সার তো অভাব নাই।শেখ হাসিনা বলেন, কোনোমতেই এখানে কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। কাজেই বিষয়টা আপনাদের দেখতে হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি এটা শুরু করতে হবে।বিভিন্ন সময়ে ঢাকার জলাধারগুলো নষ্ট করার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মতিঝিলের এক সময় একটি ঝিল থাকলেও আইয়ুব খান সেটি বন্ধ করে দেন। পরে বিভিন্ন সরকারের সময়ে শান্তিনগর খাল, পান্থপথ খালসহ বিভিন্ন খাল বন্ধ করে দেয় অথবা বক্স কালভার্ট নির্মাণ করে।অথচ এই খালগুলি একটা শহরের শিরা উপশিরার মতো। আপনারা আমাদের একটা অনুরোধ রক্ষা করবেন, বক্স কালভার্ট যেন শহরের ভেতর আর না করা হয়।সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বক্স কালভার্ট তুলে দিয়ে খাল উদ্ধারের চেষ্টা করতেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।