‘রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দিন’
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া কয়েক লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি এই আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী মানবতা ও ইসলামিক ভাতৃত্ববোধে মহানবী (সাঃ) এর আদর্শে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন: রোহিঙ্গাদের প্রতি এমন সহিংসতায় মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যজোট ওআইসি নিশ্চুপ থাকতে পারে না।
রোহিঙ্গা সংকট এবং প্যালেস্টাইনের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ওআইসিকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা মন ও সীমান্ত খুলে দিয়েছি। একই সঙ্গে আমি প্যালেস্টাইনের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ওআইসিকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাই।শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে মুসলিম দেশগুলোর সংকট তুলে ধরে বলেন, মুসলিমদেশগুলোকে এখনকার মতো এতো সহিংস পরিস্থির শিকার আর হতে হয়নি।
ইসলামভীতি বা ইসলামোফোবিয়ার বৈশ্বিক বাস্তবতায় মুসলিমদের বিব্রত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের জন্য এখন মুসলিম পরিচয়ের কারণে নানা দেশে শান্তিপ্রিয় মুসলিমদেরও বিব্রতকর পরিস্থিতি , অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে।বর্তমান সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের পথ সুগম করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বে পারস্পারিক বিদ্বেষ, সংকট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আমাদের সহনশীল মনোভাব দরকার। ভাইয়ে-ভাইয়ে রক্তপাত থামাতে হবে। নিন্দুকদের হস্তক্ষেপের সুযোগ না দিয়ে নিজেদের সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ নিজেদেরই খুঁজে নিতে হবে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় শেখ হাসিনা ওআইসিতে দেয়া তার আগের বক্তব্য পুনরায় দিয়ে বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে সবচেয়ে প্রথমে তাদের হাতে অস্ত্র দেয়া বন্ধ করতে হবে, অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে, মুসলিম দেশগুলোকে নিজেদের বিভেদ দূর করতে হবে এবং সকলের পক্ষে সুবিধাজনক আলোচনার পথ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামিক ঐক্যকে সক্রিয় দেখতে চাইলে যৌথ ইসলামিক কর্মকৌশল ঢেলে সাজাতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা বর্জন করতে হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।মুসলিম দেশগুলোকে ইসলামের শ্বাশত মূল্যবোধ থেকে শক্তি-প্রেরণা নিয়ে আধুনিক সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলার আহ্বান জানিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।