রিজভী কার লোক! কার পারপাস সার্ভ করছে প্রশ্ন বিএনপির!
শফিক রহমান : একাই একশো রিজভী কার পারপাস সার্ভ করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনীতির মাঠে! ডিবি পুলিশ প্রধান হারুন অর রশিদ বলেছেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। যে কোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হবে? কিন্তু দেখা যাচ্ছে কিছুই হচ্ছেনা রিজভীর! তা হলে কি রিজভী কারো পারপাস সার্ভ করছেন যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জোরাদারভাবে খোদ বিএনপিতে? একাধিক বিএনপি নেতা দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানিয়েছেন, রিজভী ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন!!
রিজভী চান না মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কনটিনিউ করুক বিএনপিতে! বিএনপি মহাসচিব জেল থেকে মুক্ত হোক এটাও তিনি চান না। এ কারণে সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অবরোধ হরতাল দিলেও ফখরুলের মুক্তির দাবিতে কোনো হরতাল আহবান করেননি রিজভী।
দেখা গেছে, প্রতিদিন তিনি অনলাইনে এসে ব্রিফিং করছেন, সরকারকে শাসাচ্ছেন, গালাগালি করছেন, আবার হুমকিও দিচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি অবরোধ হরতাল উপলক্ষে হঠাৎ করে ঝটিকা মিছিল করছেন। অথচ রিজভী একাধিক মামলার আসামি। ভাবা যায় তবু তিনি মুক্ত!! পুলিশ গোয়েন্দারা তাকে ধরছে না। অথচ পুলিশ গোয়েন্দারা অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে থাকা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ধরে এনে জেলে ভরছেন। কিন্তু রিজভী ছরি ঘুরিয়ে চলেছেন? আন্দোলন চালাচ্ছেন, অবরোধ হরতাল দিয়ে চলেছেন।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা নাম না প্রকাশ করে দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেছেন, বড় নেতারা যখন কারাগারে আটক ঠিক সেই সময়ে রিজভী বাইরে। দলের সিনিয়র নেতাদের যখন পলাতক অবস্থা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে, তাদের মামলাগুলো দ্রুত বিচার হচ্ছে, তখন রুহুল কবির রিজভীর মামলা নিষ্ক্রিয়। ভাবা যায় ঘটনাটা!! তিনি অবরোধে মিছিল করলেও সেই মিছিলে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে না!! এমনকি তাকে গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে না!!
বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার অবস্থান জানে না এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। কিন্তু তারপরও রিজভীর ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি উদারতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে রিজভীর প্রতি। আর এই উদারতাটি বিএনপি নেতাদের জন্য এক ধরনের অস্বস্তির কারণ বলেও তারা জানাচ্ছেন।এমনকি এখন বিএনপি নেতারা রুহুল কবির রিজভীকে সন্দেহের চোখে দেখছে,অনেকে রিজভীকে গুপ্তচর কিনা এটাও বলাবলি করছেন?
তবে অনেকেই মনে করেন যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হওয়ার জন্য রুহুল কবির রিজভী একজন বড় দাবিদার। আর সে কারণেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু ঘটনা এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে রিজভীর গ্রেপ্তার না হওয়াটার সঙ্গে সরকারের যে যোগ সাজশ থাকতে পারে বা সরকারের সঙ্গে যে রিজভীর একটা গোপন আঁতাত রয়েছে, এরকম গুঞ্জনকে কেউ উড়িয়ে দিচ্ছেন না বর্তমানে।
যদিও বর্তমানে বিএনপির বিভিন্ন মহলের কাছে রিজভী একজন হিরো, একজন সাহসী মানুষ, দলের একজন ত্রাণকর্তা কিংবা দলের একশ’তে একশ ভাগ শহীদ জিয়ার আদর্শের নেতা কিন্তু তারপরও তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে আন্দোলন ঘিরে!
তৃণমূলের অনেকে নেতা বলেন, তিনি এই কঠিন সময়ের মধ্যে দলের হাল ধরে আছেন। দলকে তিনি মূলত এই মুহূর্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করছেন, দলের নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন, বিভিন্ন জায়গায় যেন মিছিল সমাবেশ হয় সে ব্যাপারেও নির্দেশনা প্রদান করে চলেছেন দলের আদর্শবান নেতা হিসেবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস কিংবা আমির খসরুর মাহমুদের মতো নেতাদেরকে পুলিশ আত্মগোপন থেকে গ্রেপ্তার করেছে, তখন রিজভীকে কেন গ্রেপ্তার করছে না? তাহলে কি রিজভীর সঙ্গে সরকারের একটা গোপন সম্পর্ক রয়েছে? রিজভী কি সরকারের কাছে বিএনপির গোপন পরিকল্পনা বা অন্য তথ্যগুলো ফাঁস করে দিচ্ছেন? এই কারণেই রিজভীকে কৌশলগত কারণে বাইরে রাখছে সরকার!!
চারদিন দিন আগে রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় দেখা গেছে যে বিএনপিতে যারা কট্টর, যারা সরকারের বেশি সমালোচক, তাদের সাথে সরকারের গোপন সখ্যতা তৈরি হয় এবং তাদেরকে সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ দিয়ে এই সমস্ত নেতাদের কাছ থেকে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়!
বিএনপির পরিকল্পনা কি, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে, সামনের দিনগুলোতে বিএনপি কি ধরনের কর্মসূচি দেবে ইত্যাদি মহামূল্যবান তথ্যগুলো কি রিজভী সরকারকে সরবরাহ করছেন? সাম্প্রতিক সময়ে এই সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে কিছু ঘটনায়। বিএনপি নেতারাই বলেছেন, রুহুল কবির রিজভী বিএনপির কয়েকজন নেতাকে অবশ্যই রাজপথে নেমে অবরোধ কর্মসূচির পক্ষে মিছিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনা অনুযায়ী যারা অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গেছেন, তাদের কয়েক জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এক্ষেত্রে বিএনপি নেতারাই রিজভীকে সন্দেহ করছেন। কারণ, বিএনপির ওই মহল মনে করছেন রিজভী ছাড়া তাদের অবস্থানের কথা কেউ জানত না এবং তারা যে মিছিলে যাবেন এই তথ্যটি শুধুমাত্র রিজভী’ই জানতেন! তাহলে রিজভী কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এইসব তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন!
নাকি রিজভীর বিরুদ্ধে যে সমস্ত গুঞ্জনগুলো শোনা যাচ্ছে তার সবই আসলে অপপ্রচার নাকি বিরোধী দলের আন্দোলনকে ম্লান করে দেওয়ার জন্য সরকারই এধরনের অপপ্রচার করছে!! নাকি রিজভীকে সরকার তাদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে সেটাই এখন প্রশ্ন বিএনপির পোড়খাওয়া নেতাদের!!