রাহুর কবলে ইসলামি ব্যাংক-লুটপাট ৩০ হাজার কোটি
কোর্ট রিপোর্টার : ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া ও এস আলম গ্রুপের ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনায় রিট করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনলে বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পরামর্শ দেন।আদালতে বিষয়টি নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।তিনি এ সময় আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করেন। তখন হাইকোর্ট বলেন, প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে রিট আবেদন আকারে কোর্টে আসুন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আমরা আজই আদালতে রিট করবো।এর আগে গত ২৭ নভেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে উঠে আসা দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়। ব্যাংকটির পাঁচ জন গ্রাহকের পক্ষে ওই চিঠি পাঠানো হয়।তারা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ ও আব্দুল্লাহ সাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি, এলএলএম বিভাগের শিক্ষার্থী শাইখুল ইসলাম ইমরান ও যায়েদ বিন আমজাদ।
চিঠিতে বলা হয়, ‘নিবেদন এই যে আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ লিমিটেডের নিয়মিত গ্রাহক। ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় আমাদের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। আমরা সাধ্যমতো ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করে থাকি। বিগত ২৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, ইসলামী ব্যাংক থেকে নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা অসাধু চক্র তুলে নিয়েছে। এই রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সংক্রান্তে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের আমানতকারী হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বীকৃতমতে, বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে। এ মঅবস্থায়, এই ধরনের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনে আমরা সংক্ষুব্ধ।’
‘অতএব, উপরিউক্ত বিষয়টি আমলে নিয়ে গভীরভাবে খতিয়ে দেখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। আশা করি, উক্ত বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করে আমাদের কৃতার্থ করবেন।’
চিঠিতে গত ২৪ নভেম্বর ‘ইসলামী ব্যাংকে ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রকাশিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) নিউ এইজ পত্রিকায় এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি ঋণ নিয়েছে- এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনটিও আদালতের নজরে আনা হয়।