• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘রাষ্ট্র সংস্কার করেন’-প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলেগুলোর সংলাপ


প্রকাশিত: ১২:০১ এএম, ৬ অক্টোবর ২৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৬ বার

 

 

লাবণ্য চৌধুরী : প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে সকলে প্রকাশ্যে নির্বাচন নিয়ে কথা বললেও রাষ্ট্র সংস্কার চেয়েছেন সকলেই। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা কালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঐক্যমত্তের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন চেয়েছেন। এরমধ্যে নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
একই সঙ্গে ভোটার আইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে অধ্যাদেশ জারি করে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বসার কথা রয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির।

ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন চাই :
ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ভোটার আইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার আইন করা হয়েছিল, তা অধ্যাদেশ জারি করে বাতিলের দাবি জানিয়েছি।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যুমনায় বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করার বিষয়ে কথা হয়েছে।

বিতর্কিত কোনো ব্যক্তিকে যেন নির্বাচন সংস্কারে গঠিত কমিটিতে রাখা না হয় তারও দাবি জানিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব ইউনিয়ন পরিষদ (চেয়ারম্যান-মেম্বার) বাতিল করতে বলেছি।২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভুয়া, বিতর্কিত ও পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনের সব কমিশনারদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

আগে সংস্কার পরে ভোট
: জামায়াত আমীর

স্টাফ রিপোটার : নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াত আমির বলেন, আমরা দুটি প্রস্তাব করেছি। প্রথমটি সংস্কার কত দিনে হবে? দ্বিতীয়টি নির্বাচন কবে হবে?

বিকাল সাড়ে তিনটার একটু আগে জামায়াতের প্রতিনিধি দল যমুনায় প্রবেশ করে। জামায়াতে ইসলামীর ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির আবু তাহের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, এমএম শামসুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পওয়ার।

ফ্যাসিবাদ যাতে আর না ফিরে সেজন্য সংস্কার প্রয়োজ
:গণতন্ত্র মঞ্চের মাহমুদুর রহমান

অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে বলেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, দরকার হলে নিয়মিত বৈঠকের একটা কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে। এটা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক হতে পারে। এ প্রস্তাবে সরকার একমত হয়েছে।শনিবার (৫ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে বসে গণতন্ত্র মঞ্চ। পরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মঞ্চের নেতারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা এবং নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট করে আমাদের মতামত দিয়েছি। আমরা বলেছি, সংস্কার আমাদের (রাজনৈতিক দল)। আমরা একটা সরকার বদলানোর আন্দোলন করছি না, নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি না, সামগ্রিকভাবে আন্দোলন করছি, যাতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়ায় একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করা যায়। আবার যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সে কারণে সংস্কার প্রয়োজন।’

এ ছাড়া আজ বিকাল সাড়ে তিনটায় গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিকাল চারটায় বাম গণতান্ত্রিক জোট, বিকাল সাড়ে চারটায় হেফাজতে ইসলাম, পাঁচটায় ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ, সাড়ে ৫টায় এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপে বসার কথা আছে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে আরো রয়েছেন-

জামায়াতে ইসলামী: জামায়েতে ইসলামের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন নায়েবে আমির আবু তাহের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, এমএম শামসুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ মোট ৭ জন।

গণতন্ত্র মঞ্চ: ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন মঞ্চের সমন্বয়ক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। প্রতিনিধি দলে থাকছেন- জেএসডির আসম আবদুর রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, আবুল হাসান রুবেল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, আবু ইউসুফ সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন এবং নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।

বাম গণতান্ত্রিক জোট: প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন জোটের সমন্বয়ক বাসদ (মার্কস বাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা। প্রতিনিধি দলে আছেন, সিপিবির শাহ আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের ইকবাল কবির, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মোশরেফা মিশু, বাসদের বজলুর রশীদ এবং সমাজতান্ত্রিক পার্টির আবদুল আলী।

ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ: ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন দলটির আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তার সঙ্গে আছেন, সিনিয়র নায়েবে আমির ফয়জুল করীম, মহাসচিব ইউনুস আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম।

হেফাজতে ইসলাম: ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন হেফাজতে ইসলামীর মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। প্রতিনিধি দলে আছেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর আমির মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আশরাফুল হক, মহাসচিব মাওলানা মোমিনুল ইসলাম।

এবি পার্টি: পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী। প্রতিনিধি দলে আছেন, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব মিনার, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সহকারী সদস্য সচিব নাসরিন সুলতানা মিলি।