• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

রাতের আঁধারে ৭ পাক জঙ্গি আস্তানা-খতম ভারতের লোমও ছিড়তে পারলনা পাকিরা


প্রকাশিত: ৮:১৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩২৬ বার

 

মীরা নায়ার ভারত থেকে : সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে রাতের আঁধারে সেনারা ৭ পাক জঙ্গি আস্তানা খতম করে ফিরে india-paratroup-www-jatirkhantha-com-bdআসলেও ভারতের লোমও ছিড়তে পারলনা পাকিস্তান।ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, নিখুঁত দক্ষতায় রাতের অন্ধকারেই অভিযান শেষ করে ফিরে এল ভারতের স্পেশ্যাল ফোর্স।

রাতের অন্ধকারে হানা। নিঃশব্দে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়া। তার পর সাত জঙ্গি ঘাঁটিতে বিধ্বংসী আঘাত ভারতীয় সেনার। তছনছ হয়ে গিয়েছে লস্কর, হিজবুল আর জইশ-এর মোট ৭টি জঙ্গি শিবির। অপরিসীম দক্ষতায় নিখুঁত অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় india-patatroup-2-www-jatirkhantha-com-bdসেনার স্পেশ্যাল ফোর্স।

ঠিক কী ভাবে চালানো হল এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে:

1১. ভয়ঙ্কর আঘাত হানা হবে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে, সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল আগেই। তাই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভিমবার, হটস্প্রিং, লিপা এবং কেল সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গিদের সাতটি লঞ্চিং প্যাডের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। গত এক সপ্তাহে যে প্রতিটি লঞ্চিং প্যাডে ৩০-৪০ জন করে জঙ্গি জড়ো হয়েছে, ভারতীয় বাহিনীর কাছে সে খবর ছিল।

২. জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রস্তুতি শুরু হয় কয়েক দিন আগে থেকে। খুব নিঃশব্দে শুরু হয় এই প্রস্তুতি। তৈরি থাকতে বলা হয় স্পেশ্যাল ফোর্সকে। তৈরি থাকতে বলা হয় ভারতীয় বায়ুসেনাকেও।

attack-pak-kasmir-www-jatirkhantha-com-bd৩. বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে যাওয়ার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় অভিযান।

৪. ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার স্পেশ্যাল ফোর্সকে নিয়ে পৌঁছয় নিয়ন্ত্রণ রেখায়। নিয়ন্ত্রণ রেখার এ পাশে অর্থাৎ ভারতের দিকেই প্যারাড্রপ করে বাহিনীর জওয়ানদের নামানো হয়। ফলে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার কোনও প্রশ্নই ওঠেনি। এতই সন্তর্পনে হয়েছে এই প্যারাড্রপিং যে নিয়ন্ত্রণ রেখার অন্য পাশে পাহারায় থাকা পাক বাহিনী কিছুssssই বুঝতে পারেনি।

৫. প্যারাড্রপিং-এর পর পায়ে হেঁটেই নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে ভারতের স্পেশ্যাল ফোর্স। নিয়্ন্ত্রণ রেখা বরাবর প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল জঙ্গিদের লঞ্চিং প্যাডগুলি। সীমান্ত থেকে মোটামুটি ২ কিলোমিটার ভিতরে সেগুলির অবস্থান ছিল। অন্ধকার হওয়া সত্ত্বেও দ্রুত জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে পৌঁছয় ভারতীয় সেনা।

পরিকল্পনা এত নিখুঁত ছিল যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর ঢুকে পড়ার কথা পাক সেনা বা জঙ্গিরা ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি। এর পর বিধ্বংসী হামলা চালানো হয় জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে। শিবিরগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।৩৮-৪০ জন জঙ্গি সংঘর্ষে মারা পড়ে।

৬. ভারতীয় বাহিনী অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে বলে বুঝতে পারে পাক সেনা। আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে গোলাগুলি চালাতে শুরু করে তারা। কিন্তু ভারতীয় বাহিনীর অবস্থান ঠিক কোথায়, একেবারেই তা বুঝতে পারেনি পাক বাহিনী। অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো করে তারা গোলাগুলি চালাতে থাকে।

৭. চার ঘণ্টার মধ্যে অভিযান শেষ করে ভোর হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ রেখার এ পারে ফিরে আসে ভারতের স্পেশ্যাল ফোর্স। পাক বাহিনীর গোলাগুলির পাল্টা জবাবও দেওয়া হয় তার মধ্যেই। এতে পাক সেনার দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়। ভারতীয় সেনার কোনও ক্ষতি হয়নি।

ভারতীয় বাহিনীর কাছে নির্দেশ ছিল, অভিযান চালাতে গিয়ে ভারতীয় বাহিনীর কারও মৃত্যু হলে, তাঁর দেহ ফেলে আসা যাবে না। নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু সে পরিস্থিতি তৈরিই হয়নি। কারণ ভারতীয় বাহিনীর কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারেনি পাক সেনা।

৮. বুধবার রাত থেকে ভারতীয় বায়ুসেনাকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন বিমানঘাঁটিতে। স্পেশ্যাল ফোর্সের কাছ থেকে ইঙ্গিত পেলেই আকাশপথেও হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত ছিল বায়ুসেনা। তবে তার দরকার পড়েনি।