রাজনীতি করবে নাকফুল মুসকিল লীগ বেকার সমাজ ইত্যাদি পার্টি-
স্টাফ রিপোর্টার : রাজনীতি করবে নাকফুল মুসকিল লীগ ইত্যাদি পার্টি। এদের মধ্যে কথিত প্রগতিশীল নারীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে নাকি নাকফুল পার্টি! আর মুসকিল লীগ সব মুসকিল আসান করবে। আর ইত্যাদি-সব সমস্যার সমাধান করবে রাজনীতিতে!! বিভিন্ন উদ্দেশ্য ও দেশ ও জনতার সেবার প্রত্যয় নিতে এরা নিবন্ধনের আবেদন করেছে। নয়া রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে নাকফুল পার্টি-বেকার সমাজ, বৈরাবরী পার্টি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও ননপ্রবাসী কল্যাণ দল, সর্বজনীন দল, গজো প্রভৃতি;
শেষ দিন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), সদস্যসচিব নুরুল হক নুরুর গণঅধিকার পরিষদসহ বেশ কয়েকটি দল নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করেছেন। আবেদনকারী দলের বেশিরভাগই নামসর্বস্ব। কোনো দলের সাইনবোর্ড থাকলেও নিজস্ব অফিস নেই। অনেকেই নিজের বাসার ঠিকানা বা দোকানের ঠিকানায় দলীয় অফিস দেখিয়েছেন।
এছাড়াও রয়েছে মুসকিল লীগসহ ইত্যাদি পার্টি। এরকম আরো বাহারি নামের রাজনৈতিক দল গঠনের অনুমতি চেয়ে নিবন্ধনের জন্যে ইসি কার্যালয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে মোট ৮০ টি রাজনৈতিক দল। নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে চার মাসের আবেদনের সময় শেষে হয়েছে। রোববার (৩০ অক্টোবর) ছিল এর শেষ দিন। আর শেষ পর্যন্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হরেক রকম নামের অন্তত ৮০টি নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। এর মধ্যে রয়েছে- মুসকিল লীগ, ইত্যাদি পার্টি, নাকফুলসহ বিভিন্ন নাম।
নির্বাচন কমিশনের সূত্র জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ে ৮০টি দলের আবেদন পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো দেখবে। তারপর তা ইসির বিবেচনার জন্যে উপস্থাপন করা হবে।আগামী বছর জুনের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হবে জানিয়ে সূত্রটি জানায়, নতুন নিবন্ধনে দলগুলো শর্ত পূরণ করছে কিনা তা পরীক্ষা করতে দলিলাদি মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে-নতুন নিবন্ধন পেতে যে শর্ত রয়েছে তা হচ্ছে-গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়।
নতুন কোনো দলকে নিবন্ধন পেতে হলে শেষ শর্তটিই পূরণ করতে হয়। এগুলো হলো-ক, আবেদনকারী দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, খ), দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ, (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং গ), সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মহানগর থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল।সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল আবেদন করলেও নিবন্ধনের যোগ্য একটিও বিবেচিত হয়নি। অবশ্য আদালতে গিয়ে ২০১৯ সালে দুটি দল আদেশ নিয়ে এলে যুক্ত হয়।সব মিলিয়ে ৪৪টি দল নিবন্ধন পেলেও ফ্রিডম পার্টি, জামায়াতে ইসলাম, জাগপা, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপি- এই পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়।
ইসির যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান আরজু বলেন, সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালেও নামসর্বস্ব ৭৬ দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। সেসময় কিছু হাস্যকর নাম ছিল। কিন্তু এবার সংখ্যাটা বেশি। ওই সময় নাকফুল বাংলাদেশ, ঘুস নির্মূল পার্টিসহ অদ্ভুত নামের অনেক রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল।তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল।
তবে অভিযোগ উঠেছে উচ্চ আদালতের রায়ে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে দলটি। ২৬ অক্টোবর নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে বিডিপি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি মো. কাজী নিজামুল হকের সই করা আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়। আবেদনের সঙ্গে ইসির শর্ত সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংযুক্তি আকারে দেওয়া হয়েছে।তবে ইসির সব শর্ত পূরণ করলে জামায়াতে ইসলামী অন্য নামে আবেদন করলে নিবন্ধন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।