• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

রাজধানীতে অপহরণকারী ফাঁদ


প্রকাশিত: ১২:৫৩ এএম, ২১ এপ্রিল ২৩ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৩ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : কম ভাড়ায় গাড়িকে চড়তে গিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন এক প্রবাসী। জানা গেছে, অপহরণকারী চক্র প্রবাসীকে গাড়িতে তুলে সবকিছু কেড়ে নেওয়ার পর মুক্তিপণ দাবি করে গাড়িতে নিয়ে ঘোরার সময় পুলিশের নিরাপত্তাচৌকিতে তল্লাশীকালে ধরা পড়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারীরা। গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারী ব্যক্তিরা হচ্ছে সুদেব, তামিম চৌধুরী, আবু সাঈদ ও ফিরোজ আশরাফ।

জানা গেছে, নিরাপত্তাচৌকি বসিয়ে যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করছিল পুলিশ। এমন সময় একটি প্রাইভেটকারের চালক পুলিশের আদেশ অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করেন। এতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সন্দেহ হয়। তাঁরা সামনে-পেছনে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়িটি থামান। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে একজনের চিৎকার শুনতে পান।

ওই ব্যক্তি ‘স্যার আমাকে বাঁচান, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’ বলে চিৎকার করছিলেন। তাঁকে উদ্ধারের পরে জানা যায়, তাঁকে অপহরণ করে সঙ্গে থাকা টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছে গাড়িতে থাকা দুর্বৃত্তরা। আরও মুক্তিপণ আদায়ে তাঁকে জিম্মি করে রেখেছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তুরাগে এ ঘটনা ঘটে।

তুরাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, অপহরণে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপহরণে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার, ছয়টি মোবাইল ফোন, নগদ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও গাড়ির চাকা খোলার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অপহৃত শরীফ হোসেন মালয়েশিয়া প্রবাসী। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরে। তিনি মিরপুর ১১ নম্বরে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গাজীপুরে চাচার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। বাসের জন্য তিনি কালশী এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় একটি প্রাইভেট কার এসে থামে। গাড়িটির চালক শরীফের কাছে জানতে চান, তিনি কোথায় যাবেন? গন্তব্য শুনে তিনি বলেন, উত্তরার আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত যেতে ১০০ টাকা ভাড়া লাগবে।

শরীফ ভাড়া কমাতে বললে চালক ৯০ টাকায় যেতে রাজি হন। এরপর তিনি গাড়িতে উঠে দেখেন, আরও দুই-তিনজন আগে থেকেই গাড়িতে বসে আছেন। গাড়ি চলতে শুরু করলে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা শরীফকে মারধর করার পর জিম্মি করে। তাঁর সঙ্গে থাকা টাকা, মুঠোফোন ও অন্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এরপর আরও দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে তাঁর এক স্বজনকে ফোন করে। টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। আর তাঁকে নিয়ে গাড়িটি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে।

একপর্যায়ে তুরাগের নিরাপত্তাচৌকিতে এলে গাড়ি থামাতে বলে পুলিশ। তবে চালক গাড়ি না থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের এএসআই সোহেল রানা বাধা দেন। একই সঙ্গে সেখানে থাকা এএসআই গোলাম রাসুল ও আসাদুল হক মোটরসাইকেল নিয়ে সামনে-পেছনে অবস্থান নিয়ে গাড়ি থামাতে বাধ্য করেন। পুলিশ জাানায়, দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য গাজীপুরে শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে।