ম্যাসের কানপরা’য় ফিজের জাদু’তে-
আবুধাবী থেকে লিটন এরশাদ : ম্যাস এর কানপরা আর ফিজের জাদু’তে রবিবার গভীররাতে বাংলাদেশ জেতার নেপথ্যে কি ছিল যে তানিয়ে আলোচনা চলছে আবুধাবীসহ সারাদেশে। কেন এবং কিভাবে হঠাৎ জ্বলে উঠল ফিজ ওরফে মুস্তাফিজ তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। কি কানপরা দিয়েছিলেন ম্যাস ওরফে মাশরাফি?
আবুধাবীর বাংলাদেশীরা তখন শুধু হা-হুতাশ করছিল! মুস্তাফিজ কি পারবেন ম্যাচ জেতাতে? প্রশ্নটা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে সারা বাংলাদেশের দর্শকদের’ও। কারণ, আইপিএলে শেষে বল করে মুস্তাফিজ যে হতাশ করেছেন ভক্তদের! তারপরও ম্যাস এর আস্থা ছিল মুস্তাফিজের ওপর। শেষ ডেথ ওভার বোলিং শুরুর আগে ম্যাস পিঠ চাপড়ে দিলেন মি. ফিজের-! ব্যাস-তাতেই কেল্লা ফতে..। সেই কানপরাই কাজে দিয়েছে-।তারপরও আফগানদের বিপক্ষে ৪৮তম ওভারে বল হাতে নিয়ে দিয়েও ফেললেন ১২ রান।
শেষ ওভারে আফগানদের দরকার মাত্র ৮ রান! আটকাতে পারবেন মুস্তাফিজ? হ্যাঁ, পারলেন। ‘জাদুকরী’ এক ওভারে জয় এনে দিলেন দলকে। ম্যাচ শেষে কাটার মাস্টারকে ’জাদুকরই’ বলে গেলেন অধিনায়ক মাশরাফি।মুস্তাফিজ শেষ ওভারে শুধু রান আটকালেন না, তুলে নিলেন একটি উইকেটও। শেষ ওভারে দিলেন মাত্র ৪ রান। এর মধ্যে দুই রান আবার এসেছে লেগ বাই থেকে। আর তাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আফগানদের হারিয়েছে ৩ রানে।
শেষ ওভারে ৮ রান তুলতে আফগানদের হাতে ছিল ৪ উইকেট। কিন্তু কাটার মাস্টার মুস্তাফিজের শেষ ওভারে তারা সেই রান করতে পারেনি। ফলে ৩ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পায় বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে বেঁচে রইলো বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। তবে তার জন্য অঘোষিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারাতে হবে টাইগারদের।
রোববার আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৪৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে মাহমুদুল্লাহ ৭৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। এছাড়া ইমরুল কায়েস খেলেন হার না মানা ৭২ রানের ইনিংস। তার আগে দলের শত রান হওয়ার আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে দলকে বের করে আনেন মাহমুদুল্লাহ এবং ইমরুল কায়েস।
জবাবে ব্যাট করতে নামা আফগানদের শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এরপর শাহজাদ ও হাসমতউল্লাহ শাহেদি ৬৩ রানের জুটি গড়েন। শাহজাদকে ৫৩ রানে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মাহমুদুল্লাহ। এরপর আবার শাহেদি এবং আসগর জুটি দাঁড়িয়ে যান। শাহেদিকে ৭১ রানে এবং আসগরকে ৩৯ রানে ফেরান মাশরাফি। শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য আফগানদের দরকার ছিল ৪২ রান। কিন্তু মুস্তাফিজ-সাকিবরা সে রান নিতে দেননি। কিন্তু শেষদিকে সাকিব-মুস্তাফিজ দারুণ বল করেন।
বাংলাদেশের হয়ে এ ম্যাচে ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬২ রানে ২ উইকেট নেন মাশরাফি। এছাড়া মুস্তাফিজ ২টি ও মাহমুদুল্লাহ একটি উইকেট নেন। আফগানিস্তানের হয়ে ১০ ওভারে ৫৪ রানে ৩ উইকেট নেন আফতাব আলম। রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান নেন একটি করে উইকেট। ব্যাটে-বলে এবং ফিল্ডিংয়ে দারুণ পারফর্ম করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ।