• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

মেলবোর্নে কোহলি-ফকনারের তোলপাড় স্লেজিং-যুদ্ধ !


প্রকাশিত: ৪:০৭ পিএম, ২৩ জানুয়ারী ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮০ বার

333অনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার: ক্লার্ককে ‘ঠান্ডা’ করেছিলেন শেবাগ।বিরাট কোহলি: খামোখা শক্তি খরচ করছ।
জেমস ফকনার: শান্ত হও। কোহলি: এর কোনো মানে হয় না। ফকনার: কেন, মজা পাচ্ছ না?
কোহলি: তোমাকে বহুবার তুলোধুনো করেছি। বেশি বকবক করো না। যাও বল করো।
মেলবোর্নে তৃতীয় ওয়ানডের ৩৫তম ওভারে কোহলি-ফকনারের বাগ যুদ্ধ! না দেখে থাকলে ভিডিওটা আরেকবার দেখে নিতে পারেন। কিন্তু যুগে যুগে চলা ক্রিকেটের স্লেজিংয়ের সব ভিডিও তো আর চাইলেই পাবেন না। সে ক্ষেত্রে বরং নিচের ঐতিহাসিক কথার লড়াইগুলোয় চোখ বুলিয়ে নিন। যেখানে ইটের জবাব পাথরেই দেওয়া হয়েছে!

১. রবি শাস্ত্রীর ‘সাহস’
১৯৯১/৯২ মৌসুমে ভারত গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া সফরে। সিরিজের একটি টেস্টে বাঁহাতি অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার মাইক হুইটনি খেলেছিলেন দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে। ফিল্ডিং করেছিলেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। একপর্যায়ে শাস্ত্রী চেষ্টা করছিলেন সিঙ্গেল বের করার। বল দ্রুত কুড়িয়েই হুইটনি শাস্ত্রীকে ক্রিজে থাকার হুমকি দিলেন। নইলে ‘ব্যাটসম্যানের মাথা ভেঙে দেবেন’!
শাস্ত্রী কালবিলম্ব না করেই জবাব দিলেন, ‘তুমি যদি এমন ঝাঁজ দিয়ে কথার পাশাপাশি বলটাও করতে পারতে, তাহলে দ্বাদশ খেলোয়াড় হয়ে থাকতে হতো না।’ শক্তিমত্তায় অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় ঢের পিছিয়ে থাকা ভারতীয় দলের এক ব্যাটসম্যানের জবাব ছিল বিরাট সাহসের পরিচয়।

ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে ওয়ার্ন জিতলেও কালিনানের জবাবটা ছিল বলার মতোই।২. বোথামের সরস জবাব
যুগে যুগে অস্ট্রেলীয়রা স্লেজিংকে নিয়ে গেছে শিল্পের পর্যায়ে। তার অধিকাংশই হয়তো ছাপার অক্ষরে প্রকাশযোগ্য নয়। তারপরও এই ‘ভদ্রগোছে’র স্লেজিংটা বলাই যায়। এক অ্যাশেজের ঘটনা। ব্যাট করতে এসেছেন ইয়ান বোথাম। রড মার্শ এগিয়ে গিয়ে তাঁকে ‘স্বাগত’ জানালেন, ‘হাই ইয়ান, তোমার বউ আর আমার বাচ্চারা কেমন আছে?’ বোথামের জবাব, ‘বউ ভালোই আছে। কিন্তু বাচ্চারা সব প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মেছে দেখছি!’ মার্শের ‘জিন’ নিয়েই প্রশ্ন!

৩. ‘কোন জাতের কুকুর’ ক্লার্ক?
বীরেন্দর শেবাগের জিব যে ধারালো, সচরাচর কোনো ফিল্ডারই ঘাঁটতে চাইতেন না। তা-ই নয়, শেবাগ উইকেটে থাকলে অপর প্রান্তে থাকা শচীন টেন্ডুলকারকেও স্লেজিং করার সাহসও নাকি পেতেন না অনেকে। কেন? মাইকেল ক্লার্কের ঘটনাটা কী ভোলা যায়? ২০০৩-০৪ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি খেলতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিল ভারত। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের সঙ্গে ম্যাচে ড্রেসিংরুমে দীর্ঘক্ষণ পিঠের চোটের শুশ্রূষা নিয়ে টেন্ডুলকার এসেছিলেন ব্যাট করতে। কিন্তু ভারতীয় কিংবদন্তিকে নানাভাবে খোঁচাতে লাগলেন তরুণ ক্লার্ক। টেন্ডুলকারকে ‘বুড়ো’ও বলে ফেললেন।
শেবাগ তখন ক্লার্ককে থামাতে বললেন, ‘তোর বয়সের চেয়ে তাঁর সেঞ্চুরির সংখ্যা বেশি।’ তবুও ক্লার্ক থামলেন না। শেবাগ এবার খেপেই গেলেন, ‘তুই কোন জাতের কুকুর যে সতীর্থরা তোকে ‘পাপ’ বলে ডাকে’! বাপরে!

৪. ‘শাশুড়ি-পুরাণ’
এখন যেমন কোনো দল পাকিস্তান সফরে রাজি নয়, তেমনি অতীতেও নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগেছে দলগুলো। আশির দশকে পাকিস্তান সফর থেকে ফেরার পর বোথাম ঘোষণা দিলেন, ‘পাকিস্তান এমন একটা দেশ, যেখানে আপনি আপনার শাশুড়িকে পাঠিয়ে দিতে পারেন।’ ইঙ্গিত পরিষ্কার, ব্রিটিশদের জামাই-শাশুড়ির চিরায়ত দ্বন্দ্ব দিয়ে পাকিস্তানের পরিস্থিতি বোঝানো। সেটা ভালোই বুঝেছিলেন পাকিস্তানের আমির সোহেল। প্রতিশোধ নিয়েছিলেন ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে। প্রতিটা রানের জন্য যুঝতে থাকা বোথামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বদলে তোমার শাশুড়িকে ব্যাট করতে পাঠাও। নিশ্চয় তিনি তোমার চেয়ে ভালো করবেন।’

৫. ‘বানি’র কামড়
শেন ওয়ার্নের সবচেয়ে বড় ‘বানি’র নাম নিশ্চয় জানা। ড্যারিল কালিনান ওয়ার্নকে ব্যাটে জবাব না দিতে পারলেও কথায় একবার ভালোই দিয়েছিলেন। একবার মাত্র ব্যাটিংয়ে নামা কালিনানকে দেখেই ওয়ার্ন বললেন, ‘তোমাকে আউট করতে দুই বছর ধরে অপেক্ষা করছি।’
অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি লেগ স্পিনারের ইটের জবাবে মোক্ষম পাথরই ছুড়েছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান, ‘দেখে তো মনে হচ্ছে পুরো সময় খেয়েই কাটিয়েছ’। কালিনানের ইঙ্গিতটা ছিল ওয়ার্নের মুটিয়ে যাওয়া শরীরের দিকে!