‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকলে সরকার রামপাল থেকে ফিরবে’
স্টাফ রিপোর্টার : সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে রাজধানীতে হরতাল পালনকারীদের পুলিশ বাধা দেওয়ায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকলে সরকার রামপাল থেকে ফিরবে।
তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘সরকার নিজেই পরাজিত ও ভীত। মানুষের এই আন্দোলন যেন সক্রিয়তার রূপ না পায় সে কারণে পুলিশ দিয়ে তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালাচ্ছে।বৃহস্পতিবার এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনও জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভেতরে নেই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছি।
তারপরও পুলিশ সকাল থেকে একের পর এক টিয়ারশেল, রাবার বুলেট জল কামান নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। অনেকে এতে আহত হয়ে হাসপতালে যেতে হয়েছে।’আনু মুহাম্মদ দাবি করেন, হরতালে যান চলাচলের জন্য পুলিশ বুধবার রাত থেকেই বিভিন্ন গ্যারেজ ও বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে যান চলাচলে বাধ্য করেছে।
আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি তাদের মুনাফার জন্য দেশ ও জনগণের ক্ষতি জেনেও সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কাজ চালিয়ে যাবে- সেটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমাদের এ আন্দোলন চলবে।’
‘বৈজ্ঞানিক তথ্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে বাংলাদেশের জলবায়ু হুমকির মুখে পরবে’ এমন কথা উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকলে সরকার জনগণের দাবি মেনে নিতো।’
উল্লেখ্য, সুন্দরবনের পাশে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবিতে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালন করছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। গত ২৬ নভেম্বর শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। জাতীয় কমিটির ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি।
এর বাইরে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠন বিবৃতি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছে।বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে রাজধানীতে বিচ্ছিন্নভাবে হরতাল চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকা, শাহবাগ, আজিমপুরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হরতালের সমর্থকরা অবস্থান নেন।
বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন কেউ কেউ। হরতালের সমর্থনে বেশ কয়েকটি স্থানে মিছিলও করতে দেখা গেছে। তবে এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শাহবাগে জলকামান ও টিয়ারশেল ব্যবহার করা হয়েছে।
ঢাবি ক্যাম্পাস ও তার আশপাশের এলাকায় এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘শাহবাগে বড় দুটি হাসপাতাল রয়েছে। রোগীরা চলাচল করে। এই দুটি রাস্তা আমরা বন্ধ করতে দিতে পারি না।
মিছিল করতে করতে হরতালের সমর্থরা শাহবাগ বন্ধ করতে এসেছিল। আমরা তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’এদিকে প্রেস ক্লাবের সামনে, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলার মোড় ও মতিঝিলের দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হরতারের সমর্থনে বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল করার চেষ্টা দেখা গেলেও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মিরপুরে প্রায় সব পয়েন্টে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।