মায়ের দোয়ায় গাজীপুরে চ্যালেঞ্জে নামল জাহাঙ্গীর
স্টাফ রিপোর্টার/গাজীপুর প্রতিনিধি : মায়ের দোয়া নিয়ে মাঠে নামলেন গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পাওয়ায় মায়ের দোয়া নিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন তিনি। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আজ বুধবার রির্টানিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে তার মা জায়েদা খাতুনও মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। জাহাঙ্গীর আলম নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর কাছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাই, আরেকবার পরীক্ষা দিচ্ছি, মায়ের দোয়া নিয়ে। তিনি বলেন, নির্বাচনে সাধারণ জনগণকে যে ওয়াদা দিয়েছিলাম, তিন বছরের মধ্যে তাকে বরখাস্ত করে সেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল।তাই বাকী কাজ শেষ করতে তিনি চ্যালেঞ্জটা নিতে যাচ্ছেন মায়ের দোয়া নিয়ে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা মনোনয়ন ফরম জমা দেবেন বলে জানান গেছে। এর আগে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণফ্রন্টসহ বেশ কয়েকজন মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে। তবে বিএনপির কেউ এখন পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেনি।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ালে জাহাঙ্গীর আলমের ওপর দলীয় চাপ আসতে পারে। তাই বিকল্প হিসেবে মাকে ভোটের মাঠে রাখতে চাচ্ছেন তিনি।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত মেয়র পদে ১৩ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৯৮ জন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ৩৪০ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
তিনি আরও জানান, তফসিল অনুযায়ী আগামীকাল পর্যন্ত মনেনয়ন ফরম ক্রয় ও জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই, ৮ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন, ৯ মে প্রতীক বরাদ্দ এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ মে।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ভোট নেওয়ার জন্য ৪৭৮টি কেন্দ্র থাকবে, কক্ষ থাকবে ৩ হাজার ৪৯১টি। এ ছাড়া অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৮৬টি। প্রিজাইডিং অফিসার থাকবেন ৪৭৮জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৩ হাজার ৪৯১ জন এবং পোলিং অফিসার থাকবেন ৬ হাজার ৯৮২ জন।
প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আজমত উল্লাহ খান ছিলেন টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত মেয়র। পরে টঙ্গী পৌরসভা ও গাজীপুর পৌরসভা নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনে তার অবদানও ছিল উল্লেখ করার মতো। ২০১৩ সালে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও দল থেকে তাকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তবে ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর কাছে ধরাশয়ী হন তিনি।
এ ব্যর্থতায় পরেরবার আজমত উল্লাহ খানকে মনোনয়ন দেয়নি দল, দেওয়া হয়েছিল জাহাঙ্গীর আলমকে। এরপরও থেমে থাকেনি তিনি। নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে রাজনীতির মাঠে ছিলেন সক্রিয়।
হঠাৎ করে জাহাঙ্গীর আলম বেকায়দায় পড়লে ফের আলোচনায় আসেন আজমত উল্লাহ খান। অবশেষ নানা নাটকিয়তার পর গাজীপুর সিটির তৃতীয় নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।