মাশরাফির বিদায় সাকিবের শুরু এবার জেতার টার্গেট টাইগারদের
স্পোর্টস রিপোর্টার : ম্যাচ হারার আগেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মাশরাফি। অন্যদিকে হারের ম্যাচ দিয়েই নতুন যাত্রা করতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এবার জেতার টার্গেট টাইগারদের।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি (বিসিবি) নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ফরম্যাটে নতুন অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হবে।
বিসিবি সভাপতি মঙ্গলার দিবাগত রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে এ কথা জানান। বর্তমানে সাকিব আল হাসান দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে টস করার সময় মাশরাফি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি খেলেই ২০ ওভারের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন বলেও জানিয়ে দেন। সাকিব আল হাসান এর আগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক থাকাকালে টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ৪ ম্যাচে। ২০০৯ এবং ২০১০ সালে ওই চার ম্যাচের কোনোটিতেই অবশ্য জিততে পারেনি টাইগাররা।
কুশল পেরেরায় যেভাবে হারলো বাংলাদেশ-
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরার ৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারাল স্বাগতিকরা। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৫ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৭ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা।
জয়ের জন্য নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার কুশল পেরেরা ও উপুল থারাঙ্গা। প্রথম তিন ওভারেই ২৪ রান তুলে নেন তাঁরা। ছয় ওভারেই স্কোরটাকে ৫০ পার করে স্বাগতিকরা। অবশেষে দলীয় ৫৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দারুণ খেলতে থাকা উপুল থারাঙ্গাকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি। শর্ট থার্ড ম্যানে দারুণ ক্যাচ ধরেন মুস্তাফিজ। ২৪ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক।
এরপর দিলশান মুনাবিরাকেও ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৭৯। তবে অপর প্রান্তে দুর্দান্ত খেলতে থাকেন কুশল পেরেরা। ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। বাংলাদেশের তৃতীয় সফলতা আসে রান আউটের মাধ্যমে। দুর্দান্ত থ্রোয়ে গুনারত্নের উইকেট ভেঙে দেন সাব্বির রহমান। লঙ্কানরা জয় থেকে তখন ৫৬ রান দূরে।
১৯তম ওভারে কুশল পেরেরা আউট হলেও বাকি পথটা নির্বিঘ্নেই পার করে লঙ্কানরা। ৫৩ বলে ৫৭ রান করেন কুশল পেরেরা। মাশরাফি বিন মুর্তজা টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি মাশরাফির দলের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মালিঙ্গার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ তখনো রানের খাতা খোলেনি।
এরপর প্রেমাদাসায় শুরু হয় সৌম্য-সাব্বির শো। মালিঙ্গা-কুলাসেকারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন এই দুজন। মাত্র ২৮ বলে ৫৭ রান আসে এই জুটি থেকে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রান আউট হয়ে ফিরে আসেন সাব্বির রহমান। ভিকুম সঞ্জয়ার বলে রান নিতে গিয়ে সেকুগে প্রসন্নর রান আউটের শিকার হন সাব্বির। ১৪ বলে ১৬ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
একই ওভারে বিদায় নেন সৌম্যও। সঞ্জয়ার বলে উঁচিয়ে মারতে গিয়ে থিসারা পেরেরা তালুবন্দি হন টাইগার ওপেনার। ২০ বলে ২৯ রান করেন সৌম্য। বাংলাদেশের রান তখন ৫৭।
উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। দলীয় ৭০ রানে গুনারত্নের বলে স্কুপ করতে গিয়ে আউট হন মুশফিকুর রহিম। এরপর স্কোরে আর ১২ রান যোগ হতে ফিরে যান সাকিব আল হাসানও। মুশফিক ৮ ও সাকিব ১১ রান করেন।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংসটা সামলান অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। মালিঙ্গার ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে সৈকত করেন ৩৪ রান। বিদায়ী সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৫ বলে ৯ রান করেন মাশরাফি। লঙ্কানদের মধ্যে মালিঙ্গা নেন দুটি উইকেট।