মায়ের ভালবাসায় তুচ্ছ ১১ হাজার ভোল্ট
কুমিল্লা সংবাদদাতা : সন্তানকে বাঁচাতে নিজের জীবনের মায়া তুচ্ছ করলেন মা। ১১ হাজার ভোল্টের লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ছেলেকে বাঁচাতে জোরে টান দিয়ে ছাড়িয়ে আনলেন তিনি। এতে ছেলের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও সে প্রাণে বেঁচে গেছে।বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা নগরীর সংরাইশ এলাকায় ওলিউল্লাহ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণে বেঁচে যাওয়া সাত বছরের ছেলেটির নাম আবদুল্লাহ। আর তার মায়ের নাম মমতাজ বেগম। আহত আবদুল্লাহকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বার্ন ইউনিটের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মির্জা মুহম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে কব্জি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আনেন ওর অভিবাবকরা। প্লাস্টারসহ প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই আমরা।কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা জানান, কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আবদুল্লাহ শুধু বলছিলো- আমার হাত কই। ছেলেটির চিৎকারে উপস্থিত সবার চোখে পানি জমে।
আহত আবদুল্লাহকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।শিশুটির বাবা শামীম জানান, আবদুল্লাহ বর্তমানে কিছুটা সুস্থ আছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে ওর হাতে একটি অপারেশন হবে।
মমতাজ বেগম বলেন, ‘ছয় তলাবিশিষ্ট ভবনটির চারতলায় আমরা ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করি। সকালের দিকে খেলতে খেলতে আবদুল্লাহ হঠাৎ করেই দালানের ফাঁক দিয়ে ১১ হাজার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্পর্শ করে।আমি উপায় না পেয়ে ছেলেকে জোরে টান দেই। এতে আমার ছেলের কব্জি ছিঁড়ে বৈদুতিক লাইনে ঝুলতে থাকে। তারপর আমার ছেলেকে ওর বাবা কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে ভবনের পাশে এমন অনিরাপদ বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন থাকার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের অনেকে ক্ষোভ এবং এমন আরও দুর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করেন।স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস সালাম বলেন, আমরা বহুবার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।