মান্না-খোকা কেলেংকারি-বিএনপি মিরজাফর সাদেক হো. খোকা ?
শফিক আজিজ.ঢাকা: নাগরিক ঐক্য’র মান্না-খোকা কেলেংকারি নিয়ে তোলপাড় চলছে।প্রশ্ন উঠেছে- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না সেনা হস্তক্ষেপে ভূমিকা রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা বলতে শোনা যায়, যিনি এক সময় ডাকসুর ভিপি ছিলেন, পরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।
দুই জনের সঙ্গে ওই আলাপচারিতার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে মান্না ফেইসবুকে নিজের পৃষ্ঠায় বলেন- কোথাও কোনো ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ নেই, উসকানি’ নেই।
“সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথা হয়েছে আলাপচারিতার মতো আন্দোলনের প্রসঙ্গ এসেছে আমি বলেছি, গণতন্ত্রের দাবিতে আমি আন্দোলনে সমর্থন করি। সহিংসতা সমর্থন করি না। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে ব্যাপক জনগণকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। সহিংসতা দায়িত্ব নিয়ে বর্জন করা উচিত।
“এ আন্দোলনে এখনও ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ও বিস্তৃত করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যদি পুলিশি বা সন্ত্রাসী হামলায় দু’চার জনের জীবনও যায় কিছু করার নেই।”
প্রশ্ন উঠেছে কে কার নেপথ্যে কাজ করছেন তা নিয়েও! চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। অভিযোগ উঠেছে, খোকাই ফাঁস করেছেন কথোপকথন। কারণ, বাংলাদেশে ভাইবার রেকর্ড করার মত প্রযুক্তি নেই।
তাহলে ভাইবারের কথা-বাইরে থেকে কে আঁড়ি পাতলো? এক্ষেত্রে দেশের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, খোকাই নিজের মামলা থেকে বাঁচাতে এ কর্মটি করেছেন?
তাহলে বিএনপি মিরজাফর খোকা? অন্যদিকে ঘটনার প্রেক্ষাপটে নাগরিক ঐক্য’র-মান্না নিজেই তাঁর ফেসবুক পেজে বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
দু’টি কথোপোকথন প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্য’র-মান্না বলেন-
সামগ্রিক ঘটনায় আমি বিস্মিত, দুঃখিত, মর্মাহত। এ পর্যন্ত আমার রাজনীতি জীবনে কখনও সহিংসতা, ষড়যন্ত্রকে প্রশ্রয় দেই নি। আমার অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে। যে দুটো সাক্ষাৎকার ছেপেছে পাঠকদের অনুরোধ করবো যেন ভালো করে সেটা শোনা এবং পড়ে দেখার। কোথাও কোনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ নেই, উস্কানি নেই। সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথা হয়েছে আলাপচারিতার মতো আন্দোলনের প্রসঙ্গ এসেছে আমি বলেছি, গণতন্ত্রের দাবিতে আমি আন্দোলনে সমর্থন করি। সহিংসতা সমর্থন করিনা।এ থেকে বেড়িয়ে আসার জন্যে ব্যাপক জনগণকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। সহিংসতা দায়িত্ব নিয়ে বর্জন করা উচিত। এ আন্দোলনে এখনও ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ও বিস্তৃত করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যদি পুলিশি বা সন্ত্রাসী হামলায় দু’চার জনের জীবনও যায় কিছু করার নেই। এমনিতেই তো মানুষ মরছে। আমার এই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেন আমি লাশ চাই। একইভাবে সেনাবাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা আমার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হলে বলব কি না সে কথা জানতে চাইলে, আমি বলেছি রাজি আছি। আমি রাজনীতি করি সবার সঙ্গে কথা বলতে হয়। এটা থেকে এক এগারো বা সামরিক কু’য়ের ষড়যন্ত্রের আবিষ্কার হয় কিভাবে? যেখানে এরকম কোনো বৈঠকই হয়নি।
দেশের এই যুগসন্ধিক্ষণে কারও চরিত্র হননের কাজ সংকটকে আরও ঘণিভূতই করবে। আমি আশা করি সবাই শুভ বুদ্ধিতে জাগ্রত হবেন এবং এই সংকটকে ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা করবেন।
তারেক রহমানকে নির্যাতনকারী লে. কর্নেলের সাথেও মান্নার ফোনালাপ —
সাম্প্রতিক সুশীল ও নাগরিক সমাজের সদস্য মাহমুদুর রহমান মান্নার দুটো টেলিফোনালাপ ফাঁস হয়ে গেছে। দুটো কথোপকথনেই ভাইবারের বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বেশ সতর্ক দেখা গিয়েছে। সাদেক হোসেন খোকার সাথে তিনি বলছেন, ভাইবার বলে তিনি এত কথা বলছেন। সাধারণ ফোনে কথা বলতে তার ভয় হয়। অপরদিকে তারেক রহমানকে নির্যাতনকারী এক লে. কর্নেলের সাথেও মান্নার ফোনালাপে ভাইবারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মান্না।
গোপন টেলিফোন আলাপের একটিতে বিএনপি নেতা খোকাকে মান্না বলেছেন-‘ইউনিভার্সিটিতে মারামারিতে গেলো দুই তিনটা। কিন্তু এতে পুরো বাংলাদেশ কেঁপে যাবে’। অর্থাৎ, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তিনটা ছাত্রের লাশ চাচ্ছেন, যাতে সরকার ও পুরো বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে! আর এভাবেই ওনারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চান।
অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে ভাইবার কথোপকথন রেকর্ডের প্রযুক্তি বাংলাদেশে নাই। তাহলে প্রশ্ন আসে কীভাবে এই কথোপকথন কারা রেকর্ড করে ছেড়েছে? এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্যসূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতার সাদেক হোসেন খোকার ফোনটি থেকেই মান্নার সাথে কথোপকথনটি রেকর্ড হয়েছে।
একাধিক বিএনপি নেতা বলেন, সাদেক হোসেন খোকা যেভাবে কথা বলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিলো তিনি সরকারি দলের লোক। চলমান আন্দোলনে তিনি হতাশার কথা উল্লেখ করেছেন কয়েকবার। আন্দোলন আর চালিয়ে নেয়া যাচ্ছে না বলেছেন তিনি। সন্দেহটি আরও পাকা হয় যে তারেক রহমানকে নির্যাতনকারী লে. কর্নেলের সাথে মান্নার ফোনালাপটিও একই সূত্র থেকে আসে।
অর্থ্যাৎ সাদেক হোসেন খোকার সাথে ঐ অফিসারের যোগাযোগ রয়েছে। চলমান আন্দোলনকে নসাৎ করতে সাদেক হোসেন খোকা একটি চক্রের সাথে মিলে এই আত্মঘাতী কাজটি করেছেন বলে দাবী করে বিএনপি সূত্রটি। সূত্রটি আরও জানায়, মামলা থেকে অব্যহতি পেতেই খোকা গোপনে সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন সরকারের কাছে ভাইবার রেকর্ড করার প্রযুক্তি থাকলে তারা কিছুদিন আগে ভাইবার, ট্যাঙ্গো বন্ধ করে দিতো না। ভাইবার ফোনালাপের দুপক্ষের কারো সহযোগিতা ছাড়া এইসব কথোপকথন রেকর্ড বাইরে আসা অসম্ভব। এই নিয়ে সর্ব মহলে চলছে তোলপাড়।