• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘মাটির ঘর থেকে যাত্রা শুরু-আমার এ যাত্রা দীর্ঘ দিনের’


প্রকাশিত: ৭:২৩ পিএম, ২৫ জুলাই ১৭ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৮ বার

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টার: ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন রামনাথ কোবিন্দ। কে আর নারায়ণের পর তিনিই kobindu-www.jatirkhantha.com.bdদেশটির দ্বিতীয় দলিত রাষ্ট্রপতি৷ সর্বোচ্চ সাংবিধানিক ক্ষমতা আজ থেকে থাকবে তারই হাতে। মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে রামনাথ কোবিন্দকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরl শপথের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন নতুন রাষ্ট্রপতি। মাটির ঘর থেকে আজ রাইসিনা হিলস। জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে শৈশবের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘মাটির ঘর থেকে আমার যাত্রা শুরু। আমার এই যাত্রা দীর্ঘ দিনের।’kobindu-www.jatirkhantha.com.bd.2

এরপরই নিজেকে সামলে নিয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ‘সর্বধর্ম সমন্বয়ের দেশ ভারতবর্ষ। গোটা বিশ্ব ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট। নিষ্ঠার সঙ্গে সব দায়িত্ব পালন করব। দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করব। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকব।সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, উপ রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের উপস্থিতিতে এ শপথ নেন রামনাথ কোবিন্দ।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাজির হন শপথ গ্রহণের এ আয়োজনে। রামনাথ কোবিন্দ জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি রাধাকৃষ্ণ, এপিজে আবদুল কালাম, প্রণব প্রণব মুখার্জির পথে হাঁটবেন।এসময় সম্প্রীতির বার্তা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই এক এবং একসঙ্গেই থাকব। বহুদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ রামনাথ কোবিন্দ বরাবরই ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। ৭১ বছর বয়সী রামনাথ কোবিন্দ ১৯৪৫ সালের ১ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের কানপুরের পারাউনখ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।kobindu-www.jatirkhantha.com.bd.1

কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম. এবং এলএলবি করার পর আইন পেশাকে বেছে নেন তিনি। এরপর ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ সার্ভিস (আইএএস) পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দিল্লি চলে যান। পরপর তৃতীয়বারের চেষ্টায় আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।কিন্তু পাস করার পরও আইনের পেশাকেই বেছে নেন রামনাথ কোবিন্দ। ১৯৭১ সালে দিল্লি বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসেবে তার নাম নথিভুক্ত হয়।১৯৭৪ সালে বিয়ে করেন তিনি। তার স্ত্রীর নাম সাবিতা কোবিন্দ। তাদের ঘরে দুই সন্তানও রয়েছে।

১৯৭৭ সালে দিল্লি হাইকোর্টে সরকারি আইনজীবী হিসেবে তাকে নিযুক্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার। টানা তিন বছর ওই পদে কাজ করার পর ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনি পরামর্শদাতা করা হয় কোবিন্দকে। এই পদে টানা ১৩ বছর ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালেই সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন রামনাথ কোবিন্দ। তার আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন তিনি।

১৯৯৪ সালে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন রামনাথ কোবিন্দ। উত্তরপ্রদেশ থেকে পরপর দু’বার রাজ্যসভার সদস্য হন তিনি। এই সময় তফসিলি জাতি-উপজাতি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন, পেট্রোলিয়াম ও ন্যাচারাল গ্যাস এবং আইন এ বিচার kobindu-www.jatirkhantha.com.bd.3সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এরপর রাজ্যসভা হাউস কমিটির চেয়ারম্যানও হন তিনি।

১৯৯৮ সালে বিজেপি দলিত মোর্চার সভাপতি নির্বাচিত হন রামনাথ কোবিন্দ। ২০০২ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে তিনি কোলি সমাজেরও সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন। কৃষক পরিবারের সন্তান কোবিন্দের দলিত সমাজের প্রতিনিধিত্ব ভোটের বাক্সে বরাবরই ফসল তুলতে সাহায্য করেছে। উত্তরপ্রদেশে কোবিন্দই ছিলেন মায়াবতীর বিরুদ্ধে বিজেপি-র অন্যতম তাস। দলিত ভোট ব্যাংকের রাজনীতির অংককে মাথায় রেখেই ২০১৫ সালে কোবিন্দকে বিহারের রাজ্যপাল করে বিজেপি।

গেলো ১৭ জুলাইয়ের ভোটে ৭১ বছর বয়সী রামনাথ কোবিন্দ পেয়েছেন ৬৫ দশমিক ৬৫ ভাগ ইলেক্টোরাল ভোট। পরে ২০ জুলাই গণনার পর কোবিন্দের মোট ভোট ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৫ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সমর্থিত লোকসভার সাবেক স্পিকার মীরা কুমার পান ২ লাখ ৪ হাজার ৫৯৪ ভোট।