মন্ত্রী গাজীর চেলারা এনআইডি দেখে ভোট কিনছে
রুপগঞ্জে ভোটারের মূল্য হাজার টাকা-
রুপগঞ্জ প্রতিনিধি : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ১ সংসদীয় আসনের নির্বাচনে নিজের পক্ষে ভোট দিতে দলীয় নেতাদের দিয়ে ভোট কিনছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। ভোটার আইডি কার্ড দেখে প্রতি ভোটারকে ১ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হলে কেটলি প্রতীকের প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া নির্বাচিত হবেন।
এমন ভয়ে ভোটের দুই দিন আগেই টাকা দিয়ে ভোট কেনা শুরু করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। তারা বলেন, গত ১৫ বছরে সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার ছেলেরা কারখানা ও আবাসন প্রকল্পের নামে হাজার হাজার মানুষের চাষের জমি দখল করে। তাই, যেকোন মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে চায় রূপগঞ্জবাসী।
আমাদের হাতে পৌঁছা ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের রূপগঞ্জের বরাবো বাজারের ৯ নং ওয়ার্ড সভাপতির নির্মাণাধীন বাড়ির নিচতলায় ভোটার আইডি কার্ড দেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে।
http://Watch this video on Facebook https://www.facebook.com/share/v/jFD1XkmciKVdbeZb/?mibextid=KsPBc6 ভিডিওতে দেখা যায়, টাকা নেওয়ার জন্য অনেক মানুষ জড় হয়েছেন। ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি মুলজার, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা রতন মিয়া ও খোরশেদসহ বেশ কয়েকজন একত্রিত হয়ে টাকা বিতরণ করছেন। ভিডিও দেখে স্থানীদের নিকট থেকে তাদের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে সভাপতি মুলজারের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও অন্যরা কোন পদে রয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, সন্ধ্যাকালীন সময়ে একটি ঘরের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা বসে রয়েছেন। আর জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিওতে শুনা যায়, এক নারী বলছেন আমি কখন নিছি? এসময় ও ঘরের মেঝেতে বসা একজন বলেন, তোর কথা কয় নি (বলে নি), তোর মায়েরটা লইয়া গেছে। আব্বারটা নিছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মুলজারের নিকট থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় স্থানীয় এক মহিলার সাথে। নাম জানতে চাইলে তিনি মুমিনের মা বলে পরিচয় দেন। কিসের টাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন্যেই দিছে। তখন পরিচয় গোপণ করে প্রতিবেদক বলেন, আমাকে দিবে না? তিনি বলেন, ভোটার হইলে দিবো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, মুলজার সাহেব মন্ত্রী সাহেবের কাছের লোক। তারাবোর ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই এলাকার নির্বাচনের দায়িত্বেও তিনি আছে। তাই কাছের লোকদের আগে আগেই টাকা দিচ্ছেন।
ভোট দেওয়ার জন্য টাকা দিচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা টাকা পাচ্ছে তারা এই এলাকারই ভোটার। বাড়তি কিছু বললে সমস্যা আছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান রাসেল বলেন, এ ধরণের অভিযোগ শুনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্থানীয়রা বলছেন, রূপগঞ্জের আওয়ামীলীগ দুইটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গত ১৫ বছরে সুবিধাভোগীরা বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে থাকলেও সুবিধাবঞ্চিত প্রায় ৭৫ ভাগ আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা শাহাজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করছে। তারা বলেন, শেষ হাসিটা শাহজাহান ভূঁইয়াই হাসবে। কারণ, তার নামে কোন কালি নাই। আওয়ামীলীগকে ভালবেসে রাজনীতি করেছেন। কারো ক্ষতি করেন নাই। জমি দখল করেন নাই। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথেও তার আঁতাত নাই।