ভোটে জননিরাপত্তা সচিব আন্তঃবাহিনীর সমন্বয়ক-অবৈধ অস্ত্র নাশকতাও ঠেকাবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি : ভোট সামনে রেখে বাহিনীগুলোর সমন্বয় করবে জননিরাপত্তা সচিব। নির্বাচনের কারনে ধর্মীয় উসকানি, অবৈধ অস্ত্র, নাশকতা রোধে আন্তঃবাহিনী সমন্বয় করে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বুধবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে তিনি বলেন জননিরাপত্তা সচিব সব বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে এটি সমন্বয় করবেন। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে বলেও জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক।আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, তফসিল ঘোষনার পর সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র, নাশকতামূলক কাজ, ধর্মীয় উস্কানি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি করার জন্য কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সে ব্যাপারে যেন সবসময় সতর্ক থাকা যায়, কোনো অঘটন যেন ঘটাতে না পারে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন সবসময় সচেতন থাকতে পারে-সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয় যেন থাকে সেজন্য জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাহিনীগুলোর এ সমস্ত কাজ তিনি সমন্বয় করবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরাও সেখানে থাকবেন। তাদের সঙ্গে বসে পর্যালোচনা করে কী করা যায়, সে বিষয়ে সমন্বয় করবেন। মূল দায়িত্ব তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর আছেই।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কাজে কোনো বাধা নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি ছাড়া প্রত্যেক দল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে, সরকার কারও কাজেই বাধা দেয় না, দেবে না। দলগুলো সভা-সমিতি নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছে। ভালোমতো চললে সেটা তো তার অধিকার। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে বা জনজীবনের নিরাপত্তায় কোনো কিছু হুমকি মনে হলে কেবল রাজনৈতিক দল নয় নয়, যে কারও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজায় গুরুত্বপূর্ণ সব পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠক থেকে।বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবী কাউকে সন্দেহ হলে যে কোনো সময় মাদক সনাক্তকরণ টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ-
এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বলেন, ‘আমরা একটা বিষয়ে উদ্বিগ্ন। সেটা হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, যেগুলো সঠিকভাবে কার্যকর হয়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের যেসব সংস্থা আছে, তারা যাতে মনিটরিং করে, সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রান্তিক চাষি, যারা উৎপাদন করে, তারা কিন্তু আসল মূল্যটা পায় না। পায় মধ্যস্বত্বভোগীরা। ভোক্তারা যখন কেনে, তখন সেখানে দামের অনেক তারতম্য থাকে। মজুতদারদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা আইনেই বলা আছে। আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করে তাদের যেন আইনের আওতায় আনতে পারি, সে চেষ্টা চলছে।
মন্ত্রী আর বলেন, দেশে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দেশের কিছু এনজিও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’ মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারে ফেরত না যায়, এ জন্য গোপনে কিছু এনজিও কাজ করছে। তারা গুজব ছড়াচ্ছে, মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের হত্যা করা হবে।’