• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

ভালো ভোট হয়েছে


প্রকাশিত: ১২:১৭ এএম, ৮ জানুয়ারী ২৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৭ বার

০০ সরকারের আন্তরিকতা ছিল:সিইসি
০০ ২০ জেলায় ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জন

 

বিশেষ প্রতিনিধি : সারা দেশের ২০ জেলা থেকে ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জনের মধ্যে দিয়েও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘ভালো’ হয়েছে বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, সারা দেশে গড়ে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে।

ওদিকে সারা দেশের ২০ জেলা থেকে ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর সারা দেশের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এসব খবর জানা গেছে। এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন আসন থেকে মোট সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া কুমিল্লায় পাঁচজন, কক্সবাজারে চারজন, ময়মনসিংহে চারজন, পাবনার তিনজন খুলনা, নড়াইল, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে দুইজন করে প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের কথা জানা গেছে।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘ভালো’ হয়েছে বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, এখনো নিশ্চিত হিসাব না এলেও সারা দেশে গড়ে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। রোববার ভোট গ্রহণ শেষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। সিইসি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব, সেটা আমরা আগেও বলেছি। সরকারের যে পলিটিকাল উইল অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার, সেটা ছিল। সেই সাথে সরকারের তরফ থেকে আন্তরিকতা ছিল।
‘নিশ্চয়তা বিধান করার কথা ছিল, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যে সহযোগিতা করার কথা ছিল, সে সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সহজ হয়েছে, আমরা করতে পেরেছি,’ বলেন হাবিবুল আউয়াল।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হয় এদিন। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় একটি আসনে ভোট বাতিল করা হয়েছে।
আর সারা দেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক মনিটর করেছি। অনিয়মের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি।কিছু জাল ভোটের খবর এসেছে এবং তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, যেহেতু বড় অংশ নির্বাচনে অংশ নেয়নি তাই আশঙ্কা ছিলো ভোটার উপস্থিতি কম হবে । তারপরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট হয়েছে। ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিল মেরেছে। কিন্তু পেছনে সই নেই। সেগুলো হিসাব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে,’ বলেন সিইসি। তিনি বলেন, ভোট ভালো হয়েছে। খুব বেশি নেগেটিভ খবর দেখিনি, এটি স্বস্তিদায়ক।

ওদিকে সারা দেশের ২০ জেলা থেকে ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর সারা দেশের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এসব খবর জানা গেছে।
এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন আসন থেকে মোট সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া কুমিল্লায় পাঁচজন, কক্সবাজারে চারজন, ময়মনসিংহে চারজন, পাবনার তিনজন খুলনা, নড়াইল, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে দুইজন করে প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের কথা জানা গেছে।
ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সারা দেশ থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে ভোট বর্জনের এসব ঘোষণা আসতে থাকে।শেষ পর্যন্ত দেশের ২০ জেলা থেকে ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন আসন থেকে মোট সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া কুমিল্লায় পাঁচজন, কক্সবাজারে চারজন, ময়মনসিংহে চারজন, পাবনার তিনজন খুলনা, নড়াইল, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে দুইজন করে প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন এর ঘোষনা দেন।

সিলেটে ৭ জনের ভোট বর্জন-

ভোটের দিন দুপুরে নানা অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন সিলেট জেলার বিভিন্ন আসনের অন্তত সাতজন প্রার্থী। এদের মধ্যে সিলেট-২ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে একযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান চার প্রার্থী।

সিলেট-২: বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা নিয়ে গড়া এ আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থীরা হলেন- গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া চৌধুরী এবং তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব (সোনালী আঁশ)।রোববার দুপুরে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে তারা নির্বাচন থেরক সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

সিলেট-৪: এদিকে প্রায় একই সময়ে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এবং জৈন্তাপুর) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
সিলেট-৩: এ আসনের অন্তর্গত বালাগঞ্জ উপজেলার দুটি ভোটকেন্দ্রের ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক)।কেন্দ্রগুলো হল-বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বোয়ালজুড় বাজার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র।
দুপুরে ডা. দুলাল উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় বাজার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে। আর সোনাপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জাল ভোট প্রদানের অভিযোগ পেয়েছি।’
এসব ঘটনায় ডা. দুলাল নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের অভিযুক্ত করেছেন।
এ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিকও ভোট বর্জন করেছেন। বিকাল পৌনে ৫টায় তিনি নিজে তথ্যটি নিশ্চিত করেন।

কুমিল্লায় ৫ প্রার্থীর ভোট বর্জন-

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে কুমিল্লা জেলাজুড়ে মোট ৫ প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। ওইসব কেন্দ্রের সবকটিতেই জালভোট হচ্ছে দাবি করে আরেক প্রার্থী পুনরায় ভোট গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
কুমিল্লা-১: কুমিল্লা-১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের আমির হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন করেন। নির্বাচনে তারা ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করেন।

কুমিল্লা-১১: এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান ভোট বর্জনের ঘোষণায় বলেছেন, ‘ভোটের পরিবেশ নেই।মিজানুর রহমানের ভোট বর্জনের ঘোষণার পর চৌদ্দগ্রামে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

কুমিল্লা-৭: কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইগল প্রতীকের মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি চান্দিনার ৮৯টি কেন্দ্রেই জালভোটের অভিযোগ তুলেছেন।
কুমিল্লা-১০: এ ছাড়া কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসনে নির্বাচন বর্জন করেছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোনাকি মুন্সি।এদিকে অনিয়মের দায়ে জেলার ৭ টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
কুমিল্লার এনডিসি কানিজ ফাতিমা বলেন, প্রার্থীদের কেউ আমাদের লিখিতভাবে ভোট বর্জনের কথা জানায়নি। তবে একজনকে ভোট বর্জন করতে ভার্চুয়ালি দেখেছি।

কক্সবাজারে ৪ প্রার্থীর ভোট বর্জন-

কক্সবাজারে তিনটি আসনে তিন স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির (জাপা) এক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।কক্সবাজার-৪: ভোট চলাকালে রোববার দুপুর একটার দিকে প্রথম বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়, কিন্তু যেসব কেন্দ্রে আমি ভোট পাব, সেসব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে, উখিয়ার জালিয়াপালং, রত্নপালং ও রাজাপালং ইউনিয়ন থেকে আমার সব এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়।

‘বিষয়টি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই সঙ্গে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট প্রদান ও কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। তাই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বেলা তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের নুরুল বশর। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতি, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেয়া ও নজিরবিহীন অনিয়ম, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পক্ষপাতিত্ব করে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তাই আমি এই ভোট বর্জন করলাম।’

কক্সবাজার-১: বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিওবার্তায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি জাফর আলম। তিনি বলেন,‘কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়। অনেক প্রিসাইডিং অফিসারকেও আহত করা হয়। তাই আমি ভোট বর্জন করলাম।’
ওই সময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে চকরিয়া-পেকুয়াবাসীর কাছে ক্ষমা চান।
কক্সবাজার-৩: সদর-রামু-ঈদগাঁও এলাকার এ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ ভোট বর্জন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।বেলা দুইটার দিকে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার-৩ আসনে ১৬৭টি কেন্দ্রের মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতৃত্বে ১৩০টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালেট পেপারে জোরপূর্বক সিল মারা হচ্ছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়।আবেদনে ভোট স্থগিত করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ভোট বর্জন করলাম।

চট্টগ্রাম-১২: পটিয়ার এ আসন থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙর প্রতীকের প্রার্থী এম এয়াকুব আলী। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি ভোটে প্রভাব বিস্তার, নোঙ্গর প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তিনি।
রোববার বিকেল তিনটার দিকে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিনখাইন এলাকায় তার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেন এয়াকুব আলী।

তিনি বলেন, ‘আমার অধিকাংশ কেন্দ্রের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটার ও কর্মীদের হুমকি দেয়া হয়েছে। সবকটি কেন্দ্র দখল করে নেয়া হয়েছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাসে আমি প্রার্থী হয়েছি, কিন্তু তারা তাদের কমিটমেন্ট রাখেনি। তারা আবারও প্রমাণ করছে, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘হয়ত ১০-১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু তারা ৫০ শতাংশ ভোট দেখানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

ঢাকা-২ আসনে ডা. হাবিবুর রহমানের ভোট বর্জন

কেন্দ্রে অনিয়ম, ভোটারদের মারপিট, পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেয়াসহ নানা অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ, কামরাঙীরচর-সাভার একাংশ) আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. হাবিবুর রহমান।রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার নিজ বাসভবন থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ট্রাক প্রতীকের এ প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম, ভোটারদের মারপিট, পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেয়া এবং নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি। আমার পরিবার ও নেতা-কর্মীদের কথা চিন্তা করে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।এ আসনে প্রার্থী বাকি তিন প্রার্থী হলেন- ইসলামী ঐক্যজোটের (মিনার প্রতীক) আশ্রাফ আলী জিহাদী, জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল প্রতীক) শাকিল আহমেদ এবং আওয়ামী লীগের (নৌকা) অ্যাডভেকেট কামরুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জ-২: নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে প্রায় সব কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর শিকদার লোটন। রোববার তার নিজ এলাকায় রামচন্দ্রদী কেন্দ্রে নৌকার এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সেখানে বাদানুবাদ ঘটে। এ বাদানুবাদের একপর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে গুলি ছুড়লে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এ কারণে নির্বাচন বর্জন করেন তিনি।

খুলনায় ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন-

খুলনা-১ ও ৩ আসনের দুই প্রার্থী ভোট বর্জানের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের শেষ দিকে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট বর্জনের কথা জানান। যদি এই দুটি আসনে আওয়ামী লীগের কোন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

খুলনা-১: খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সাড়ে ৩টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।‘দাকোপ উপজেলার বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রে এজেন্টদের ও আমার ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় তারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হননি। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রে সরজমিনে গিয়ে খুব কম সংখ্যক ভোটার পেয়েছি। তাতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করছি। কিন্তু ১২টার দিকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারি, ৬০ শতাংশ ভোট কাউন্ট হয়েছে। তাই প্রহসনের ভোট আমি বর্জন করছি।’
খুলনা-৩: অন্যদিকে খুলনা-৩ আসনের (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী বেলা ৩টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।এ সময় তিনি বলেন, ‘সব সেন্টারে জালিয়াতি হচ্ছে। আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে, আটকে রাখা হয়েছে। প্রশাসন নীরব ভূমিক পালন করছে। ভোট চুরির সময় আমি নিজে গিয়ে ধরেছি…. এ কারণে আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।’

যশোর-১: নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৫৫টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগে এনে ভোট বর্জন করেছেন যশোর-১ আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন।রোববার বেলা ১১টার দিকে বেনাপোল মাদ্রাসা কেন্দ্রের পাশে নিজের একটি নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন লিটন।লিটন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোলের সাবেক পৌর মেয়র।

নড়াইল-২ আসনে ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন-

ভোটগ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন।
রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
একই অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিকের লায়ন নূর ইসলামও ভোট বর্জন করেছেন।বিকেল তিনটার পর ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন এ প্রার্থী।

ময়মনসিংহে চার প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা

ভোট শুরুর পর থেকে বিকেলের মধ্যে ময়মনসিংহের মোট চারজন প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ময়মনসিংহ-১০ আসনের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ময়মনসিংহ-২ ও ৭ আসন থেকে যথাক্রমে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।
ময়মনসিংহ-১০: গফরগাঁওয়ের এ আসনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট কায়সার আহাম্মদ এবং ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আবুল হোসেন দীপু নির্বাচন বর্জন করেছেন।
রোববার সকালে কায়সার আহাম্মদ গফরগাঁওয়ের ধামাইলে তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। অপর প্রার্থী আবুল হোসেন দীপু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। পরে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে কায়সার আহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সকাল থেকেই নৌকার কর্মী-সমর্থকরা প্রতিটি কেন্দ্রে ঢুকে ভয় দেখিয়ে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারার মহোৎসব করছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকার এজেন্ট এবং কর্মী-সমর্থকরা নৌকায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখছে।প্রশাসনকে জানিয়েও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি উল্লেখ করে কায়সার আহাম্মদ এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় এ আসনে নির্বাচন দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।

অপরদিকে সাংবাদিকদের আবুল হোসেন দীপু বলেন, ‘গফরগাঁওয়ের প্রতিটি কেন্দ্র এবং পাগলা থানার বেশিরভাগ কেন্দ্র তাদের দখলে চলে গেছে এবং তারা জোরপূর্বক ভোট দিচ্ছে। এখানে প্রশাসন নীরব। আমি জেলা রিটার্নিং অফিসার, ইউএনও, সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করেছি। কেউ কোনো ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসনও নীরব। সুতরাং এই নির্বাচন অর্থহীন। ভোট দেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নিরাপত্তা না থাকায় আমি এই আসন থেকে আমার ট্রাক প্রতীকের যে প্রার্থিতা, তা বর্জনের ঘোষণা দিলাম।’
ময়মনসিংহ-২: একই ধরনের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এনায়েত হোসেন মন্ডল। রোববার দুপুর ২টার দিকে ভোট বর্জন করার ঘোষণা দেন এনায়েত হোসেন মন্ডল।

ময়মনসিংহ-৭: ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ডক্টর আব্দুল মালেক ফরাজি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। কিন্তু এ নিয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেই। তাই আমি ভোট বর্জন করে এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

জামালপুরে দুটি আসনে ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ -মাদারগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মীর শামসুল আলম লিপ্টন ও জামালপুর-৫ (সদর) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ভোট বর্জন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এ সময় প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে’। জামালপুর-৫ সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, এজেন্ট বের করে দেয়াসহ ভয়াবহ ভোট ডাকাতি এবং প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে ভোট স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছেন।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে লাঙ্গলের ভোট বর্জন

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী জাল ভোটের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন।রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে তিনি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।এ সময় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোট দিতে এসে বাধার মুখে পড়েন। সবার সামনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ানো হচ্ছে, জাল ভোট দেয়া হচ্ছে। এই দেশে মানুষের ভোটের অধিকার নেই- তার প্রমাণ আজ সবাই দেখতে পেলেন।’

মৌলভীবাজার-২ আসনে ট্রাক ও পাট প্রতীক প্রার্থীর ভোট বর্জন

মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ একেএম সফি আহমদ সলমান ও তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী এম এম শাহীন।
রোববার বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে তারা এ ঘোষণা দেন।

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সলমান বলেন, ‘কুলাউড়ার প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম এবং জাল ভোট দেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। ভোট চলাকালে এসব অনিয়মের কথা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকতাদের অবহিত করার পর‌ও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভোট চলাকালীন সময়ে এজেন্টদের তালা দিয়ে কেদ্র দখল করে ভোট কারচুপি করা হয়। বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেটরা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর দখল করে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। এ জন্য আমি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি।’

অপরদিকে এম এম শাহীন বলেন, ‘ভোটের দিন নৌকা মার্কার সমর্থকরা জাল ভোট দিচ্ছেন। একইসঙ্গে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন কেন্দ্র থেকে। নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বললেও ভোটের দিন দুপুর থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পরিবেশ আর থাকেনি। এ জন্য আমি ভোট বর্জন করলাম।’

বাগেরহাট-৪: জাল ভোট, কর্মী-সমর্থকদের মারিপট, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ- শরনখোলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জামিন হোসাইন ভোট বর্জনের করেছেন।রোববার দুপুরে তিনি নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঈগল প্রতিকের প্রার্থী জামিল হোসাইন জানান, উল্লিখিত অনিয়মের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েচেন তিনি। এ সময় তার সহধর্মিণী শেখ শারমিন রিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
টাঙ্গাইল-২: টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আস‌নে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু জাল ভোট, এজেন্ট‌দের মারধরসহ বি‌ভিন্ন অভি‌যো‌গ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দি‌য়ে‌ছেন।
রোববার দুপু‌রে গোপালপুর উপ‌জেলার ঝাওয়াইল বাজার প্রচার প্রচারণার নির্বাচন অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

ঠান্ডুর অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর হাসান ছোটমনিরের কর্মী সমর্থকরা ঈগল প্রতীকের কর্মীদের ব্যাপক মারধর করে। ঈগলের এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি। অনেকের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে বহু কর্মীকে আহত করে। স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’এ বিষয়ে জানতে জেলা পু‌লিশ সুপার‌কে একাধিকবার ফোন কর‌লেও তি‌নি তা রি‌সিভ ক‌রে‌ননি।

চাঁদপুর-৪: নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চাঁদপুর-৪ আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সাজ্জাদ রশিদ।রোববার দুপুর ২টার দিকে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় সাজ্জাদ রশিদ বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাত থেকে আমার বাড়ির সামনে ককটেল ফুটিয়ে আমার ভোটার ও এজেন্টদের হুমকি-ধামকি দিয়ে ভীতি সঞ্চার করে আসছে। আমার গাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমার কর্মীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করেও এর কোনো প্রতিকার পাইনি।’
প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, ‘এই কি আপনাদের ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন? এমতাবস্থায় আমি নির্বাচন বর্জন করলাম।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩: এ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল মতিন ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের ফেসবুকে ৫৬ সেকেন্ডের লাইভে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি, তাদেরকে (এজেন্ট ও কর্মী) বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় গিয়ে হামলার ভাব দেখতে পাই। সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে নোঙ্গর প্রতীকের এজেন্ট নেই। কিন্তু কাকে বা কাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে ফেসবুক লাইভে স্পষ্ট হয়নি।

ফেনী-৩: ১৪ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জাল ভোট ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন ফেনী-৩ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ।
রোববার বেলা একটার দিকে দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় রহিম উল্যাহ বলেন, ‘৯০ ভাগ কেন্দ্রে লাঙ্গলের এজেন্ট ও সমর্থকরা আমার সকল এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের এজেন্ট ফর্ম ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। এক ভাগ ভোটও সুষ্ঠু হচ্ছে না। আমি পুলিশ সুপার, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সকলকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, ‘কোথাও কোনো প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদেরকে বাধা দেয়া ঘটনা ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।’

ভোট বর্জন করল পাবনার তিন প্রার্থী-
চুরি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচনকে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ বলে পাবনা-২ আসনের বিএনএমের প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী, পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ও পাবনা-৫ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেন ভোট বর্জন করেছেন।
পাবনা-২: চুরি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পাবনা-২ আসনের নোঙর প্রতীকের বিএনএম-এর প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস।
রোববার দুপুর আড়াইটায় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ডলি সায়ন্তনী।

এ বিষয়ে তিনি সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ডলি সায়ন্তনী জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তা দেখে নৌকার লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিজয় নিশ্চিত করার জন্য নৌকার পোলিং এজেন্ট ও বাইরের সমর্থকরা ব্যালট পেপার নিয়ে জোর করে নৌকায় সিল মারতে থাকেন। গোপালপুর স্কুল, ভবানীপুর স্কুল, জাহানা কাঞ্চন উচ্চ বিদ্যালয়, শান্তিপুর স্কুল, চিনাখড়া হাইস্কুল কেন্দ্রে ৬০-৭০ শতাংশ ভোট কেটে নেয়া হয়।এসব ঘটনার অনেক ফুটেজ মোবাইলে ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ডলি।

পাবনা-৪: এ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ভোট বর্জন প্রসঙ্গে বলেন, ‘সকাল থেকেই পাবনা-৪ আসনের লক্ষীকুণ্ডা, দাশুড়িয়া, আটঘরিয়ার বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে শুরু করে নৌকার লোকজন। তারা প্রকাশ্যেই ভোটারদের সিল দিতে বাধ্য করেন। এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। তাই আমি এই নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন বর্জন করেছি। এই ভোট বাতিল হওয়া উচিৎ।’

এদিকে পাবনা-৫ আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মো. জাকির হোসেনও একই অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
লালমনিরহাট-২: লালমনিরহাট-২ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রাথী দেলোয়ার হোসেন দুপুর ১২টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।তিনি বলেন, ‘ভোটে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট ও পেশি শক্তির প্রয়োগ হচ্ছে। বিষয়গুলো প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনা হলেও তারা কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় ভোট বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি। এভাবে তো আর ভোটে থাকা যায় না।’